বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নেবে তরুণ প্রজন্ম : স্পিকার

বিটিসি নিউজ ডেস্ক: জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, ‌‘বঙ্গবন্ধু ছিলেন অকুতোভয়, আপসহীন। অর্থনৈতিক মুক্তির মাধ্যমে দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই ছিল তাঁর রাজনৈতিক দর্শন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে তরুণ প্রজন্ম বাংলাদেশকে এগিয়ে নেবে, আজকের দিনে এটাই প্রত্যয়।’
স্থানীয় সময় সোমবার জাতীয় শোক দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় জাতির পিতা, বঙ্গমাতা এবং তাঁদের শহীদ পরিবারবর্গসহ ১৫ আগস্টের সব শহীদদের বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধায় দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেন শিরীন শারমিন চৌধুরী। জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা এবং জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় দিবসটির কর্মসূচি।
দিবসটি উপলক্ষে দেওয়া রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। জাতির পিতার জীবন ও কর্মের ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্য ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। সবশেষে ১৫ আগস্টের শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী জাতির পিতার শৈশব ও কৈশোরসহ তাঁর পরিবারের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের নানা দিক তুলে ধরে বলেন, ‌‘বাঙালি জাতির দারিদ্র্যতা ও বৈষম্য দূর করে সমতা প্রতিষ্ঠাই ছিল বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের মূল লক্ষ্য। অন্যায়ের কাছে তিনি কখনোই মাথা নত করেননি। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জনগণের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে তিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন।’
তিনি বলেন, ‌‘জাতির পিতা ছিলেন বিশ্বের শোষিত-নিপীড়িত-বঞ্চিত মানুষের মুক্তির অগ্রনায়ক। দুঃখ-দুর্দশাগ্রস্ত ও অসহায় মানুষের প্রতি ছিল তাঁর গভীর মমত্ববোধ। সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশকে ভগ্নস্তুপ থেকে সোনার বাংলায় রূপান্তরের পেছনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকার কথা তুলে ধরেন স্পিকার।
স্পিকার বলেন, ‌‘জাতির পিতার আদর্শ ধারণ করেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন। স্বল্পোন্নত দেশের ক্যাটাগরি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, দারিদ্র্য বিমোচন, বিদ্যুৎ, বৈদেশিক সম্পর্কসহ প্রতিটি সেক্টরে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বিস্ময়।’
পদ্মা সেতুসহ বিভিন্ন মেগা উন্নয়ন প্রকল্পের উদাহরণ তুলে ধরে শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‌‘জাতির সব উন্নয়নে জাতির পিতা আছেন এবং চির দিন থাকবেন।’ এসডিজি’র উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘এর অনেকগুলো লক্ষ্য ও অভীষ্টের কথা জাতির পিতা ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে উল্লেখ করে গেছেন।’
স্পিকার বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী “মুজিব বর্ষ” ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালিত হয়েছে। সুতরাং স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির মধ্য দিয়ে এ দেশের তরুণ প্রজন্ম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতির পিতার আদর্শ ও দর্শনকে ধারণ করে বাংলাদেশকে সম্মৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
অনুষ্ঠানে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত স্বাগত বক্তব্য রাখেন। নিউ ইয়র্ক সফররত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল খুরশিদ আলমসহ যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযোদ্ধা নেতৃবৃন্দও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে মিশনের সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠন, মুক্তিযোদ্ধাগণ এবং যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি অংশ নেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.