খুলনা ব্যুরো: খুলনায় ফেসবুকে প্রেমের অভিনয় করে নারীদের ফাঁদে ফেলে অপহরণকারী চক্রের মূলহোতা মো. আরমান শেখ (২২)কে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৬। বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) খুলনার রূপসা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। একই সময় অপহরণ হওয়া এক নারী ভিকটিম ও মুক্তিপণের টাকা উদ্ধার করা হয়।
র্যাব-৬ এর পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা যায়, গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ার গিমাডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা আরমান শেখ একটি সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিল।
প্রায় দুই মাস আগে ভিকটিমের সঙ্গে এক নারীর ফেসবুকে পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। পরে ওই নারী তাকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে দেখা করার জন্য উৎসাহিত করে।
গত ১ এপ্রিল ভিকটিম মোল্লাহাটের জয়ডিহি বাসস্ট্যান্ডে গেলে, ওই নারী তার জন্য একটি ভ্যান পাঠায়। বুড়িগাংনি বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হলে মাতারচর এলাকায় পৌঁছার পরই পরিকল্পনা অনুযায়ী আরমান শেখসহ ৭ সদস্যের একটি দল তাকে অপহরণ করে অজ্ঞাত একটি টিনশেড ঘরে আটকে রাখে।
সেখানে তারা ভিকটিমকে শারীরিক নির্যাতন করে এবং জামাকাপড় খুলে ভিডিও ধারণের চেষ্টা করে ব্ল্যাকমেইলের উদ্দেশ্যে। পরে তার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ভিকটিমের মায়ের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
ভিকটিমের মা ভয় পেয়ে মেয়ের প্রাণ বাঁচাতে বিকাশের মাধ্যমে ১৫ হাজার টাকা অপহরণকারীদের পাঠান। পরে তিনি র্যাব-৬-কে বিষয়টি জানালে, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব সদর কোম্পানির আভিযানিক দল খুলনার রূপসা এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহরণকারী আরমান শেখকে গ্রেপ্তার করে এবং ভিকটিম নারীকে উদ্ধার করে।
র্যাব-৬ জানিয়েছে, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে নারীদের টার্গেট করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে আসছিল। আরও সদস্যদের শনাক্ত করে আটকের চেষ্টা চলছে।
র্যাবের দাবি, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আরমান শেখ তার অপরাধ স্বীকার করেছে এবং চক্রের আরও সদস্যদের নাম দিয়েছে। এরই মধ্যে তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
র্যাবের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তিগত তথ্য বা যোগাযোগে সাবধানতা অবলম্বনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.