বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: টাইফুন কালমায়েগির তাণ্ডবের ক্ষত না সারতেই ফিলিপিন্সের দিকে এবার ধেয়ে আসছে টাইফুন ফাং-ওং। এরই মধ্যে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে নতুন ঘূর্ণিজড়ের মোকাবিলায়। শনিবার (৮ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে আল জাজিরা।
টাইফুন কালমায়েগি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়ে ধ্বংসযজ্ঞের চিহ্ন রেখে গেছে। ফিলিপিন্সে শত শত এবং ভিয়েতনামে কমপক্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছে। ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে, গাছপালা উপড়ে পড়েছে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
সবশেষ তথ্য মতে, কালমায়েগিতে সবমিলিয়ে কমপক্ষে ২০৪ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যেই শনিবার আরেক ঘূর্ণিঝড় টাইফুন ফাং-ওং ফিলিপিন্সের দিকে এগিয়ে আসছে। ফলে টাইফুন কালমায়েগির তাণ্ডবের পর শুরু হওয়া উদ্ধার অভিযান স্থগিত করা হয়েছে।
সেই জায়গায় নতুন ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। সম্ভাব্য আঘাতের স্থল উপকূলীয় এলাকা থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে বাসিন্দাদের। কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে সতর্ক করে বলেছে, আঘাত হানার আগে ফাং-ওং শক্তিশালী হয়ে একটি সুপার টাইফুনে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে, যা প্রায় পুরো দেশকে গ্রাস করতে পারে।
একজন সরকারি আবহাওয়াবিদের কথায়, ‘এর ব্যাসার্ধ এতটাই প্রশস্ত যে এটি প্রায় পুরো ফিলিপিন্সকে গ্রাস করতে পারে।’ গত সপ্তাহের ধ্বংসযজ্ঞের পর আরও বন্যা এবং ভূমিধসের আশঙ্কায় কর্মকর্তারা উপকূলীয় ও নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
টাইফুন ফাং-ওং ফিলিপিন্সে চলতি মৌসুমের সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়গুলোর মধ্যে একটি হতে পারে বলে সতর্ক করে ঝড়ের মোকাবিলায় দেশব্যাপী জরুরি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে।
গত সোমবার (৩ নভেম্বর) মধ্যরাতে ফিলিপিন্সের মধ্যাঞ্চলে আঘাত হানে টাইফুন কালমায়েগি। এরপর স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকাল ৮টার দিকে টাইফুনটি সেবু ও নেগরোস দ্বীপ অতিক্রম করে। সেবু প্রদেশে রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড়টি।
এ সময় বাতাসের গতি ছিল ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার। কোথাও কোথাও তা ১৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছায়। প্রচণ্ড বেগের বাতাস ও প্রবল বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে পুরো সেবু দ্বীপ। এই দুর্যোগে গত মঙ্গলবার মাত্র দুইজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। তবে এরপর দ্রুতই বেড়েছে মৃতের সংখ্যা। আজ শনিবার পর্যন্ত যা দুইশ’ ছুঁয়েছে।
তিনদিন পর স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ভিয়েতনামের মধ্যাঞ্চলে আঘাত হানে টাইফুন কালমায়েগি। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৪৯ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হওয়া ঝড়ের প্রভাবে দাক লাক ও গিয়া লাই প্রদেশে বিধ্বস্ত হয় বহু ঘরবাড়ি। এতে পাঁচজনের প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়।
জিমি আবাতায়ো তার স্ত্রী ও আরও নয়জন স্বজনকে হারিয়েছেন। অপরাধবোধে আচ্ছন্ন হয়ে জিমি স্ত্রীর কফিন স্পর্শ করে তিনি বলছিলেন, ‘আমি আমার পরিবারকে সাঁতার কাটতে বলেছিলাম, বলেছিলাম সাহস রাখো এবং সাঁতার কাটতে থাকো। কিন্তু তারা আমার কথা শুনতে পায়নি।’ #

















