ফিরে দেখা ২০২৩, ভয়ংকর ভূমিকম্প দেখল তুরস্ক

 

 

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া যুদ্ধ, সহিংসতা, অর্থনৈতিক আর রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে ২০২৩ সালে প্রকৃতির আক্রমণ থেকেও ছাড় পায়নি মানুষ। এ বছর ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক ভূমিকম্পের শিকার হয়েছে বিভিন্ন দেশ। বিধ্বস্ত হয়েছে বিভিন্ন জায়গা, প্রাণ হারিয়েছেন অসংখ্য মানুষ। পাশাপাশি সম্পদেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি বিবেচনায় ২০২৩ সালে আঘাত হানা কয়েকটি ভূমিকম্প স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি স্মরণীয় হয়ে থাকবে তুরস্ক। চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি গত এক শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর ভূমিকম্প দেখেছে এই দেশ।
তুরস্ক ভূমিকম্পের প্রায় সাত মাস পর সেপ্টেম্বরের ৮ তারিখ ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক ভূমিকম্পের শিকার হয় মরক্কো। দেশটির মারাকেশ-সাফি অঞ্চলে আঘাত হানে ৬.৮ মাত্রার এই ভূমিকম্প। সিডিপির দেওয়া তথ্যানুযায়ী, এতে অন্তত ২ হাজার ৯৪৬ জনের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া আহত হয় ৫ হাজার ৬৭৪ জন। পাশাপাশি সম্পদেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়। এতে মারাকেশের ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলোর কয়েকটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়। এই ভূমিকম্পে অন্তত ৫ লাখ মানুষ বাস্তুহারা হন।
চলতি বছরের বিভিন্ন সময়ে আফগানিস্তানে বেশ কয়েকটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। বছরের শুরু ও শেষের দিকের কয়েকটি ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি হয়। তবে চলতি বছরের অক্টোবরে দেশটির হেরাত প্রদেশে পরপর কয়েকটি ভূমিকম্পের আঘাতে অন্তত ২ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে। সিডিপি জানায়, এসব ভূমিকম্পে আনুমানিক ৪৮ হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত ও ধ্বসে পড়ে। জাতিসংঘ বলছে, আফগানিস্তানের এসব ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে বেশিরভাগই ছিল নারী ও শিশু।
বরাবরই ভূমিকম্পের কবলে পড়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ নেপাল। চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি দেশটির কর্নালী প্রদেশের জাজারকোট ও পাশের পশ্চিম রুকুম জেলায় ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। যদিও নেপালে ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৪। এই ভূমিকম্পে নিহত হয়েছেন অন্তত ১৩৩ জন। এর মধ্যে জাজারকোটে মৃতের সংখ্যা ৯৫ জন। আর রুকুম পশ্চিমে ৩৮ জন। এদিনের ভূমিকম্পে দুই জেলায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৪০ জনেরও বেশি মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রের জিওলজিক্যাল সার্ভে জানিয়েছে, ভূমিকম্পটি ছিল ৫ দশমিক ছয় মাত্রার একটি স্বল্প গভীরতার ভূমিকম্প। অর্থাৎ এটির উৎপত্তি স্থল ভূপষ্ঠ থেকে কম গভীরে ছিল।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ‘রিং অফ ফায়ার’-এ অবস্থানের কারণে ঘনঘন ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপের মুখোমুখি হয় ইন্দোনেশিয়া। চলতি বছরের ২১ নভেম্বর ৫ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে দেশটির পশ্চিম জাভার সিয়াঞ্জুর শহরে কমপক্ষে ৩৩১ জনের প্রাণহানি ঘটে। এই ভূমিকম্পে আহত হয়েছিলেন আরও প্রায় ৬০০ জন। এর কিছুদিন পর ৩০ ডিসেম্বরও একটি শক্তিশালী এক ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশ। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ৫ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্পটি আচেহ প্রদেশের উপকূলীয় শহর সিনাবাং থেকে ৩৬২ কিলোমিটার (২২৫ মাইল) পূর্বে উৎপত্তি হয়েছে। ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হওয়ায় আচেহতে তীব্র কম্পন অনুভূত হয়েছে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.