ফিরে দেখা ২০২৩, চন্দ্র জয়ের যুদ্ধে পৃথিবী

 

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সভ্যতার আদিযুগে পৃথিবীর পরিধি ছিল বিশাল। অজানা পৃথিবীর একেক জায়গা আবিষ্কারের মাধ্যমে সেই বিশাল পরিধি ধীরে ধীরে ছোট হতে লাগল। চলে আসল একেবারে হাতের মুঠোয়। একপর্যায়ে পৃথিবী পেরিয়ে বিশ্বজয়ের নেশাও পেয়ে বসল মানুষকে।
১৯৫৯ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের লুনা ২ মিশন হচ্ছে পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদে অবতরণকারী মনুষ্যনির্মিত প্রথম বস্তু। এরপর ১৯৬৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপোলো ১১ নামের মহাকাশযানে করে প্রথম মানুষ হিসাবে চাঁদের বুকে পা রেখেছিলেন নীল আর্মস্ট্রং।
চন্দ্রজয়ের এই ধারাবাহিকতা এরপর আর দমে থাকেনি পৃথিবী। চাঁদের বিভিন্ন অংশ আবিষ্কারের উদ্দেশ্যে একের পর এক মহাকাশযান পাঠাতে থাকে পৃথিবীর অন্যান্য দেশ।
২০২৩ সালেও ভারত, রাশিয়া ও জাপানের মতো দেশগুলো চাঁদে মহাকাশ পাঠিয়েছে। যেন চন্দ্রজয়ের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামে বিশ্ব। এর মধ্যে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সাড়া ফেলেছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযান। চাঁদের অন্ধকার পাড়ায় নিজেদের ঠিকানা গড়ে নিয়েছে দেশটি।
মহাকাশে দীর্ঘ এক মাস নয় দিনের যাত্রা শেষে ভারতের এই মহাকাশযান চাঁদের বুকে সফলভাবে অবতরণ করেছে ২৩ আগস্ট। এদিন ভারতীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে ঐতিহাসিক সাফল্যের মধ্যে দিয়ে বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসাবে ভারত এই গৌরব অর্জন করেছে।
এছাড়া প্রথমবারের চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে অবতরণের দিক থেকে প্রথম হয়েছে এই দেশ। দক্ষিণ মেরু অঞ্চলটিকে মহাকাশযাত্রী দেশগুলোর জন্য মূল বৈজ্ঞানিক ও কৌশলগত আগ্রহের একটি এলাকা হিসাবে বিবেচনা করা হয়। ১৪ জুলাই অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটায় সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে চন্দ্রযান-৩’র এই যাত্রা শুরু হয়েছিল।
চন্দ্রজয়ের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছে আরেক দেশ জাপান অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সির (জেএএক্সএ) মহাকাশযান স্মার্ট ল্যান্ডার ফর ইনভেস্টিগেটিং মুন (এসএলআইএম)। ২০২১ সালে এই মহাকাশযানটির অভিযান শুরুর কথা থাকলেও কিছু প্রযুক্তিগত কারণে তা আর সম্ভব হয়নি।
অবশেষে ২০২৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর এসএলআইএম সফলভাবে চাঁদে অভিযান শুরু করে। এই মিশন সম্পন্ন হলে চাঁদে অবতরণকারী পঞ্চম সফল দেশ হবে জাপান। অবতরণের পর জাপানের এই মহাকাশযান ২৫ ডিসেম্বর চাঁদের চারপাশে কক্ষপথে প্রবেশ করেছে। নতুন বছরের ১৯ জানুয়ারি এটি চাঁদে অবতরণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
২০২৩ সালের আগষ্টে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করার ছিল রাশিয়ার রসকসমস স্পেস এজেন্সির মহাকাশযান লুনা-২৫। কিন্তু এই চন্দ্রাভিযানে ব্যর্থ হয়েছে রাশিয়া। ২০ আগস্ট চাঁদের পিঠে বিধ্বস্ত হয়েছে লুনা-২৫। একটি কক্ষপথের কৌশল ভুল হওয়ার করণে এটি চাঁদে বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন রসকসমসের কর্মকর্তারা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.