ফারাক্কার সব গেট খোলার পরেও পদ্মা- যমুনা নদীতে পানি বাড়েনি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারতের ফারাক্কা ব্যারেজের ১০৯টি গেট খুলে দিলেও পাবনার ঈশ্বরদীর হার্ডিঞ্জ ব্রীজ পয়েন্টে পদ্মার পানি বাড়েনি। তেমনি বেড়ার যমুনা নদীর মথুরা পয়েন্টেও পানি বৃদ্ধি পায়নি। বিপদ সীমার অনেক নিচ দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে। গত দুই দিন ধরে দু পয়েন্টের পানি স্থির অবস্থায় আছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টের পানি উন্নয়ন বোর্ডের রিডার হারিফুন নাঈম ইবনে সালাম জানান, ২৬ আগস্ট, ২৭ আগস্ট ও ২৮ আগস্ট হার্ডিঞ্জ ব্রীজ পয়েন্টে পদ্মার পানি স্থির অবস্থায় রয়েছে। দুই দিন ধরে এখানে পানির উচ্চতার পরিমাণ করা হয় ১১ দশমিক ৯৮ মিটার। গত ২৫ আগস্ট এ পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ১১ দশমিক ৯৭ মিটার। বেড়ার যমুনা নদীর মথুরা পয়েন্টে পানির স্তর ৭.৭০ সেন্টিমিটার। গত কয়েকদিনে এখানেও পানি পরিমাণ স্থীর অবস্থায় রয়েছে।
তিনি আরো জানান, ভারত ফারাক্কা ব্যারেজের ১০৯টি গেট খোলে দিলেও হার্ডিঞ্জ ব্রীজ পয়েন্টে নদীর পানি এখনো বৃদ্ধি পাইনি। গত দুইদিন ধরে স্থির রয়েছে। তাছাড়া প্রায় এক সপ্তাহ ধরে এখানে পানির উচ্চতা এক থেকে এক সেন্টিমিটার কম বেশ হয়েছে।
পাকশীর হার্ডিঞ্জ ব্রীজ এলাকার জেলে আব্দুল্লাহ বাকি বলেন, শুনেছি ফারাক্কার ১০৯ টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। সব গুলো গেট খুলে দেওয়াতে শঙ্কার মধ্যে ছিলাম। আতঙ্কে রাতও কাটিয়েছি। কিন্তু ভোরে নদীতে মাছ ধরার নৌকা নিয়ে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে আসলে পানি বৃদ্ধি হওয়া তেমন বুঝা যাচ্ছে না। কারন পানি বৃদ্ধি পেলে প্রথমে আমরা বুঝতে পারি। এখনো পানি বাড়েনি।
ঈশ্বরদীর সাড়াঘাট এলাকার বাসিন্দা আরজিনা বেগম বলেন, ভারত নাকি সব গেট খুলে দেছে। তাই নির্ঘুম রাত কাটিয়েছি। কারণ আমাদের এখানে ইতিপূর্বে বহু ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। আবার নদী ভাঙনের কবলে অনেকে এখন অন্য জায়গায় চলে গেছে। যাইহোক বন্যা হওয়ার আগেই যাতে আমাদের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী ইলিয়াস হোসেন বলেন, ভারত ফারাক্কা ব্যারেজের ১০৯টি গেট খোলে দিলেও এখনো পর্যন্ত হার্ডিঞ্জ ব্রীজ পয়েন্টে পদ্মার পানি বাড়েনি। এ পয়েন্টে পানির বিপদসীমা ১০দশমিক ৮০ মিটার। এখন পানির উচ্চতা ১১ দশমিক ৯ ৮ মিটার। বিপদ সীমার অনেক নিচে দিয়ে পদ্মার পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারি পরিচালক মোশারফ হোসেন বলেন, ফারাক্কার সব গেট খুলে দেয়া হলেও পাবনা অঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা নেই। কারণ যমুনার পানি যখন কমে, তখন পদ্মার পানি বাড়ে। তিনি বলেন,একই সময়ে যমুনার পানি কমলে এবং পদ্মার পানি বাড়লে বন্যা হবে না। এখন যমুনার পানি দ্রুত কমছে। সুতরাং বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে আমাদের বিশ্বাস। যদি কোন কিছু হয়, সেটা প্রকৃতির বিষয়।  আমাদের যে ধারণা তাতে বন্যা হওয়ার কথা নয়।
তিনি আরও বলেন, পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বিপদসীমা ১৩.৮০ মিটার। আর সোমবার ও মঙ্গলবারের পরিমাপে পানি ছিল ১১.৯৮ মিটার। উদ্বিগ্ন হওয়ার কোন কারণ নেই। বিপদসীমার অনেক নীচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানি যদি বিপদসীমা ১৩.৮০ অতিক্রম করে এবং ১৫ বা ১৬ মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পায় তখন বাঁধের জন্য ঝুঁকি হতে পারে। তবে পাবনা জেলায় বাঁধ ভাঙ্গার কোন সম্ভাবনা নেই। তাছাড়া নীচু এলাকা প্রতিবছরই প্লাবিত হয়। ফারাক্কার গেট আগে থেকেই খোলা ছিল। এখন শুনছি সবকটি গেট খোলা হয়েছে। এই পয়েন্টে পানির প্রবাহ ছিল ১২.২০ মিটার। এখন তো কমে গেছে। আমাদের বোর্ডের হেড অফিস জানিয়েছে, তেমন উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই। আমরা গোটা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি জহুরুল ইসলাম / পাবনা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.