ফতোয়া বার্তা সব রাজ্যের বিজেপি কৃষক সংগঠকদের

কলকাতা (ভারত) প্রতিনিধি: ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে তিন কৃষক আইন প্রত্যাহারের ঘোষণা করেছেন। যদিও আন্দোলনরত কৃষক সভার নতা রাকেশ টিকায়েত বলেছেন, যতক্ষণ না সরকার সংসদে বিল পেশ করে আইন প্রত্যাহার করছেন ততক্ষণ আন্দোলন চলবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
এদিকে কেন্দ্র থেকে এক তার বার্তায় রাজ্যের সব বিজেপির কৃষক সংগঠকদের তথা নেতাদের কৃষক আইন প্রত্যাহারের ব্যাপারে কোনও বিবৃতি বা মন্তব্য করতে নিষেধ করেছে বলে সংবাদ সংস্থার পক্ষ থেকে জানা যাচ্ছে।যা বলার কেন্দ্রীয় নেতৃত্বই বলবেন।
এব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে রাজ্য বিজেপির কিষাণ মোর্চার সভাপতি শ্রী মহাদেব সরকার তা স্বীকার করে নেন। তিনি আরও বলেন ‘সকাল এগারোটার সময় দিল্লী থেকে ফোনে আমায় এই বার্তাই দেওয়া হয়। সমস্ত রাজ্যের কিষাণ মোর্চার সভাপতিদের একই কথা বলা হয়েছে বলে মহাদেব বাবু জানান ‘।
উল্লেখ্য, জাতীয় কিংবা রাজ্য পর্যায়ে বিজেপির কৃষক শাখা এই কিষাণ মোর্চা।মোদি সরকার যখন সংসদে এই কৃষি আইন নিয়ে আসে তখন এই কিষাণ মোর্চাই দলের হয়ে জনসমর্থন আদায়ের জন্য দেশজুড়ে পথে নেমেছিল। আইন প্রত্যাহারের দিন এভাবে শাখাসংগঠনের মুখ বন্ধ করা নিয়ে গেরুয়া দলের অন্দরেই জোর বিতর্ক তৈরি হয়েছে বলে ওয়াকিবহল মহল সূত্রে জানা যাচ্ছে।
পাশাপাশি কৃষি আইন প্রত্যাহার নিয়ে রাজনৈতিক সমীকরণও শুরু হয়ে গেছে।কৃষি আইন প্রত্যাহারের রাজনৈতিক প্রভাব পশ্চিমবঙ্গেও পড়বে বলে মনে করছে দলের একাংশ। কারণ গত বিধান সভার ভোটের আগে কৃষি আইনের সমর্থনে রাজ্যজুড়ে ‘কৃষক সুরক্ষা অভিযানে ‘এসে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জগত প্রসাদ নাড্ডাকে দিয়ে কাটোয়ায় কৃষক পরিবারের দুয়ারে গিয়ে এক মুঠো চাল ভিক্ষে করিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বরা।
সমস্ত  জেলায় জেলায় এই মুস্ঠিভিক্ষা হয়েছিল। বিধান সভার ভোটের আগে তাঁরা নিজেদের কৃষকদরদী প্রমাণ করতে চেয়েছিল।এমনকি শ্রী নাড্ডাকে দিয়ে কৃষকদের সাথে মাঠে বসিয়ে পঙক্তি ভোজও করানো হয়। ভোটের ফল প্রকাশের পর নেতাদের তখন মনে হলো বঙ্গের মাটি কার্যত ‘আনসেফ ল্যাণ্ডিং’।
এক কিষাণ কর্তার কথায় আমরা এখন কোন মুখে যাব-যেখানে কৃষকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কষি আইনের সমর্থনে মুস্ঠি ভিক্ষা করেছিলাম। যার পরোক্ষ উদ্দেশ্য ছিল বিজেপির সমর্থনে ঝড় তোলা। বাস্তবে কৃষকেরা এই প্রহসন থেকে মুখ ফিরিয়ি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কৃষক বন্ধু, কিষাণ ক্রেডিট কার্ডকে বঙ্গের চাষীরা অধিক নিরাপদ বলে মনে করছেন। একই সঙ্গে রাজ্যের ৭০লক্ষ কৃষক পরিবারের পর্যাপ্ত সমর্থনও মেলেনি।
এদিকে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন তথা সিটু,ইউটিইউসি,টিইউসিসি,এআইইটিইউসি,আইএনটিইউসি সহ ইত্যাদি সংগঠকদের মূল বক্তব্য স্বাধীনতার পর প্রধানমন্ত্রীর এহেন ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত এযাবৎকাল কেউ কখনো মনে করতে পারছে না। কৃষক আন্দোলন প্রশ্নে স্বাধীনতার পর এটা একটা নজিরবিহীন জয়। নিঃসন্দেহে শ্রমজীবী আন্দোলনের এক নতুন অভিমুখ তৈরি হলো।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ (বাংলাদেশ) এর কলকাতা (ভারত) প্রতিনিধি স্বপন দেব। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.