প্রতিদিন ‘৫০০’ পেনাল্টি শটের অনুশীলন করেন মার্তিনেস

বিটিসি স্পোর্টস ডেস্ক: টাইব্রেকার মানেই সব দলের জন্য যেমন লটারি, আর্জেন্টিনার জন্য যেন তা যেন ‘নিশ্চয়তা।’ গোলবারে একজন এমিলিয়ানো মার্তিনেস যে আছেন! আর্জেন্টিনার রূপকথার নায়ক আবারও আবির্ভুত হলেন আপন মহিমায়। বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে ঠেকালেন প্রথম শট। পরেরটি থামালেন ডানে লাফিয়ে। দুটি পেনাল্টি রুখে দিয়ে আর্জেন্টিনাকে তিনি পৌঁছে দিলেন সেমি-ফাইনালে।
ম্যাচ শেষে এই গোলকিপার জানালেন, এত দ্রুত বাড়ি ফিরতে চাননি তিনি। টাইব্রেকারে তার সাফল্য যে অলৌকিক কিছু নয়, বরং অনেক ঘাম-শ্রমের ফসল, সেটিও জানিয়ে দিলেন আর্জেন্টাইন নায়ক।
পেনাল্টি ঠেকানোয় কিংবদন্তি হয়ে ওঠা মার্তিনেস আরও একবার টাইব্রেকারে দেখালেন নিজের বিশেষত্ব। হিউস্টনের এনআরজি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকালে কোপা আমেরিকার প্রথম কোয়ার্টার-ফাইনালে একুয়েডরের দুটি শট ঠেকিয়ে তিনি নিশ্চিত করেন আর্জেন্টিনার সেমি-ফাইনালের টিকেট।
টাইব্রেকারের আগে ম্যাচের প্রথমার্ধে হেরেমি সারমিয়েন্তোর খুব কাছ থেকে নেওয়া শট ঠেকিয়ে দেন আর্জেন্টিনা গোলরক্ষক। পরে দ্বিতীয়ার্ধে একটি পেনাল্টি কাজে লাগাতে পারেনি একুয়েডর। তাদের অধিনায়ক এনের ভালেন্সিয়ার শট লাগে গোল পোস্টে।
ওই শটে মার্তিনেস পরাস্ত হয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনিই গড়ে দিয়েছেন ব্যবধান। দলকে শিরোপার আরও এক ধাপ কাছে এগিয়ে নিয়ে জিতে নেন ম্যাচ-সেরার পুরস্কার। পরে প্রত্যয়ী কণ্ঠে বলেন, দৃষ্টি তাদের আরও সামনে।
“আমি বাড়ি ফিরতে প্রস্তুত ছিলাম না। এই দলটির আরও সামনে যাওয়া প্রাপ্য।”
আর্জেন্টিনা দলে নিয়মিত হওয়ার পর থেকেই পেনাল্টি শটে, বিশেষ করে টাইব্রেকারে রীতিমতো অপ্রতিরোধ্য মার্তিনেস। ২০২১ সালে সবশেষ কোপা আমেরিকায় কলম্বিয়ার বিপক্ষে মূল ম্যাচ ড্র হওয়ার পর মার্তিনেসই ফাইনালে তোলেন দলকে।
পরে ২০২২ সালের ফিফা বিশ্বকাপে কোয়ার্টার-ফাইনালে নেদারল্যান্ডস ও ফাইনালে ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে রুখে দেন তিনি। সব মিলিয়ে জাতীয় দলের হয়ে চারটি টাইব্রেকারের প্রতিটিতেই সফল তিনি।
এখন পর্যন্ত জাতীয় দলের হয়ে ২৪টি পেনাল্টি শটের মুখোমুখি হয়েছেন মার্তিনেস। অবিশ্বাস্যভাবে তিনি থামিয়েছেন ৯টিই! আরও দুটি গেছে বাইরে দিয়ে, আর এবার ভালেন্সিয়ার শট বাধা পেয়েছে পোস্টে।
দৈবক্রমে এসব হয়ে যায়নি, নিজের সাফল্যের পেছনের প্রেক্ষাপটও তুলে ধরলেন তিনি।
“এমন কিছুর যথেষ্ট কাজ করতে হয় আমাকে। প্রতিদিন ৫০০টি পেনাল্টি শটের অনুশীলন করি। আমাদের অবশ্যই নিজেদের সেরাটা দিতে হবে। কারণ মানুষের এটা প্রাপ্য।”
দলকে সেমি-ফাইনালে তোলা পারফরম্যান্স মেলে ধরার পর স্বাভাবিকভাবেই সতীর্থদের প্রশংসায় ভাসছেন মার্তিনেস। দীর্ঘ দিন ধরে একসঙ্গে খেলা মিডফিল্ডার রদ্রিগো দে পলের কাছে তিনি যেন কোনো অতিমানব।
“আমাদের গোলবারের সামনে একটা দৈত্য আছে। সে যা করে চলেছে, স্রেফ পাগলাটে। তার এটি প্রাপ্য। এই জার্সি সে ভালোবাসে। এটি আমাদের অনেক নির্ভরতা ও প্রশান্তি দেয়।” #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.