প্রচার প্রচারণা ছাড়াই বাগেরহাটে ৪৫ টাকা দরে টিসিবি’র পেঁয়াজ বিক্রি শুরু, স্থানীয় বাজারে প্রভাব নেই, দাম চড়া


বাগেরহাট প্রতিনিধি:  বাগেরহাটে টিসিবি খোলা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেছে। সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে প্রতি কেজি ৪৫ টাকা দরে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি শুরু করে টিসিবি। পেঁয়াজ বিক্রির খবর পেয়ে পাশের আদালতপাড়ায় বিভিন্ন কাজে আসা শতশত নারী, পুরুষ পেঁয়াজ কিনতে লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েন। দাম কম হওয়ায় আদালতের আইনজীবীরাও লাইনে দাঁড়াতে ভুল করেননি। তারাও পেঁয়াজ কিনেছেন।

তবে সরকারি উদ্যোগে খোলা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হলেও স্থানীয় বাজারগুলোতে তার কোন প্রভাব পড়েনি বলে অভিযোগ সাধারণ ক্রেতাদের। তাদের অভিযোগ টিসিবি’র কোন প্রকার প্রচার প্রচারণা ছাড়াই আজ সোমবার দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে খোলা ট্রাকে করে আকষ্মিকভাবে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করে। বাজারে পর্যাপ্ত পেঁয়াজের সরবরাহ থাকলেও আজও বাজারে ২০০ টাকা থেকে ২৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

গত দুই সপ্তাহ ধরে স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের সংকট ও দাম অস্বাভাবিকহারে বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। এই সমস্যার দূর করতে টিসিবি খোলা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রির উদ্যোগ নেয়।

বাগেরহাট আদালতে মামলার কাজে আসা ব্যক্তিরা বলেন, দুপুরে হঠাৎ করে দেখি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানুষের ভিড়। সামনে এগিয়ে দেখি ৪৫ টাকা কেজি দরে মিশরীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। লাইনে দাড়িয়ে এক কেজি পেঁয়াজ কিলাম। প্রচার প্রচারণা ছাড়াই লাইনে যে পরিমান মানুষের ভিড় তাতে সবাই পেঁয়াজ কিনতে পারবে কিনা সন্দেহ আছে।

তাদের এই উদ্যোগ নিন্ম আয়ের মানুষের জন্য ভাল, অল্প দামে এখানে আমরা পেঁয়াজ কিনতে পেরে আমরা দারুণ খুশি। কিন্তু টিবিসির এই পেঁয়াজ বিক্রির উদ্যোগের প্রচার প্রচারণা দরকার ছিল।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ত্রেতা অভিযোগ করেন, বাগেরহাটের বিভিন্ন হাট বাজারে এখনো ২২০ থেকে ২৪০ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। দুপুরে মানুষের মুখে শুনলাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে টিসিবি খোলা বাজারে বিদেশী পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেছে। টিসিবি কোন প্রচার প্রচারণা ছাড়াই এভাবে পেঁয়াজ বিক্রি করলে স্থানীয় বাজারে তার কি প্রভাব পড়বে বুঝতে পারছি না।

টিসিবি’র (ট্রেড কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ) খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উর্দ্ধতন কার্য নির্বাহী মো. রবিউল মোর্শেদ বিকেলে এই বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, স্থানীয় বাজারে চলমান পেঁয়াজের দাম ও সংকট দূর করতে বাগেরহাটে খোলা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এজন্য বাগেরহাট জেলায় তুরস্ক থেকে আমদানি করা ৩ মেট্রিকটন পেঁয়াজ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। টিসিবির যেহেতু জেলা শহরে কোন কার্যালয় নেই তাই স্থানীয় প্রশাসনই ঠিক করবে এই পেঁয়াজ কোথায় কতটুকু বিক্রি হবে।

প্রচার প্রচারণা ছাড়াই খোলা বাজারে এভাবে পেঁয়াজ বিক্রিতে জেলায় চলা পেঁয়াজ সংকট ও চড়ামূল্যে কি প্রভাব পড়বে সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রচার প্রচারণার দায়িত্ব স্থানীয় প্রশাসনের। বাগেরহাটে প্রতিদিন এক মেট্রিকটন পেঁয়াজ খোলা বাজারে বিক্রি হবে। ৪৫ টাকা কেজি দরে একজন এক কেজির বেশি কিনতে পারবেন না। প্রতিদিন এক হাজার মানুষকে পেঁয়াজ দেয়া হচ্ছে। কয়েকদিন এভাবে বাগেরহাটের খোলা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হলেই স্থানীয় বাজারে দাহিদা কমে যাবে। বর্তমানে বাজারে যে উচ্চমূল্য রয়েছে তা পড়তে বাধ্য হবে।

বাগেরহাট কৃষি বিপনন অধিদপ্তরের জেলা কৃষি বিপনন কর্মকর্তা জি এম মহিউদ্দিন বিকেলে এই প্রতিবেদককে বিটিসি নিউজকে  বলেন, আজ সোমবার সকালে স্থানীয় বাজারে বিদেশী পেঁয়াজ ২০০ টাকা থেকে ২২০ টাকা এবং দেশিটা ২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাগেরহাটে পেঁয়াজের সংকট ও উচ্চমূল্য দূর করতে এই জেলায় রোববার তিন মেট্রিকটন পেঁয়াজ টিসিবি বরাদ্দ দিয়েছে। এই পেঁয়াজ জেলার কোথায় কখন কতটুকু বিক্রি করবে তা প্রশাসন ঠিক করবে। এবিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বাগেরহাট প্রতিনিধি মাসুম হাওলাদার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.