প্রচণ্ড গরমে নাকাল ফুটবলাররা, সাফে সেরাটা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি

বিটিসি স্পোর্টস ডেস্ক: গরমে জীবন যেন আর চলছে না। এক ফোটা বাতাস নেই। রৌদে যাওয়াই যায় না। এর মধ্যেই মাঠে নামতে হচ্ছে ফুটবলারদের। অনুশীলনে নেমে নিজেদের সেরাটা দেওয়ার জন্য উজাড় করে দিচ্ছেন।
বসুন্ধরা কিংসের মাঠে কড়া রৌদে অনুশীলনে নামার আগেই জামাল ভূঁইয়া, সোহেল রানা, এলিটা কিংসলে, জিকো, রকিবদের গায়ের জামা ভিজে চুপচুপে। তবুও সেদিকে খেয়াল নেই। অনুশীলনে নেমে কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরাকে দেখাতে হবে লড়াইয়ের জন্য তারা প্রস্তুত।
সাফে দল যাবে। তাই ২৩ জনের একটা স্কোয়াড খুঁজে নেবেন কাবরেরা। যতই গরম পড়ুক, কোচের কাছে সেরা ওঠার লড়াইয়ে কেউ পিছিয়ে থাকতে চায় না। গরম নিয়ে এলিটা কিংসলে বলছিলে, ‘এটা এখন প্রথম চ্যালেঞ্জ।
কঠিন পরিশ্রম করতে হবে।’ এটা ভালো মন্দের বিচারে কী বলবেন এলিটা? বললেন, ‘এটা কোনো বিষয় না। যখন আপনি হার্ড ওয়ার্ক করবেন তার ভালো ফল পাবেন। তার মানে এটা ভালো দিক। আর যদি এই আবহাওয়ায় আপনি নিজেকে গুটিয়ে রাখেন পরিশ্রম করতে না পারেন তাহলে সেটা ব্যাডসাইড হবে। পরিশ্রম না করলে আপনি ভালো কিছু পাবেন না। সবকিছুই আপনার ওপর নির্ভর করে।’
জাতীয় দলের গোলকিপার আনিসুর রহমান জিকো অবশ্য বলেই দিয়েছেন গরমে কষ্টই হচ্ছে। কিছু করার নেই। খেলতে হবে। তবে লিগ শেষ করে আসতে গিয়ে এখন একটু অবসাদ কাজ করছে। লম্বা লিগ, এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত করতে হয়েছে। ভ্রমণক্লান্তি থাকে। তার ওপর গরম। কিছু ইনজুরি আছে খেলোয়াড়দের। সবকিছু মিলিয়েই বলতে হয় এখান থেকে বেরিয়ে প্রস্তুত হতে হবে।’
মাঝমাঠের ফুটবলার সোহেল রানা বলছিলেন, ‘সবসময় সাফ আসলেই আমরা প্রস্তুতিতের মধ্যে থাকি না। এ সাফ আমাদের সামনে অনেক বড় সুযোগ এনে দিচ্ছে। কারণ আমরা নিজেদের গ্রুপ সম্পর্কে ভালোভাবে জানি। সবার উজ্জীবিত, ভালো করতে মুখিয়ে আছে।’ প্রতিপক্ষ  মালদ্বীপ ও ভুটানকে নিয়ে সোহেল রানা বলেন, ‘আমরা এই দুই দলকে জানি। তবে লেবানন সম্পর্কে ধারণা কম। আমি মনে করি আমাদের সম্ভাবনা রয়েছে আমরা সেভাবেই এগিয়ে যেতে চাই। মালদ্বীপের বিপক্ষে অবশ্যই আমাদের সম্ভাবনা আছে। কারণ শ্রীলঙ্কায় আমরা শেষ ম্যাচে মালদ্বীপকে ২-১ গোলে হারিয়েছিলাম। ভুটানের বিপক্ষে অনেক দিন খেলা হয়নি।’
ফিফার র‍্যাংকিংয়ে ১০০-এর ভেতরে লেবানন। সেই লেবাননকে নিয়ে সোহেল রানা বললেন, ‘এই ম্যাচটা ড্র করতে পারলে বা মার্জিন ছোট রাখতে পারলে আমাদের সম্ভাবনা ভালো।’  সাফে সোহেল রানার চার গোল রয়েছে।
সোহেল রানা বলেন, ‘আমাদের দুজন খেলোয়াড় রয়েছেন যারা পাঁচ গোল করেছেন। ব্যক্তিগতভাবে আমি তাদের টপকে যেতে চাই। আমাদের জন্য সেমিফাইনালে যাওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। সেমিফাইনালে আপনি হারতে পারেন, জিততেও পারেন। আমরা সম্মিলিতভাবে আশাবাদী যে, এবার সাফে ভালো করব। আমরা শেষ ম্যাচ সিশেলসের বিপক্ষে খেলেছি। আমরা কিন্তু সেখানে ৩-৪ গোল হজম করিনি। অ্যাটাকিং ইজ দ্য বেস্ট ডিফেন্ডিং। এ বিষয়টা মাথায় রেখেই আমরা মাঠে নামব।’
সোহেল রানার সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া একই কথা বললেন, ‘আমাদের প্রথম লক্ষ্য হচ্ছে সেমিফাইনালে নাম লেখানো। আমি মনে করি, আমাদের জন্য ভালো সুযোগ আছে। আমার কাছে মালদ্বীপ ম্যাচ আমাদের জন্য ফাইনাল। আমরা লেবাননের বিপক্ষে এক পয়েন্ট নিতে পারলে ভালো হবে। লেবানন এখানে চারটি ম্যাচ খেলবে। তার আগেই দলটা ভালো অবস্থায় আছে। প্রথম ম্যাচ ভালো খেলতে পারলে আত্মবিশ্বাস বাড়বে। প্রথম দুটি ম্যাচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কনফিডেন্স নিজেকে বের করতে হবে। আমরা কীভাবে খেলব, কীভাবে পয়েন্ট নিতে হবে এটা দলের ওপরই নির্ভর করে। আমাদের সামনের ১৪-১৫ দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমার জন্য, দলের সদস্যদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপই শেষ কথা। এখানে যদি আমরা নিজেদের প্রমাণ করতে পারি, সেটা দেশ ও নিজের জন্যও ভালো।’ #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.