প্রকাশ্যে জালভোটসহ নানা অনিয়মের মধ্যদিয়ে কেসিসি নির্বাচন সম্পন্ন
খুলনা ব্যুরো : বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রকাশ্যে জালভোট প্রদান, প্রধান প্রতিপক্ষ দলের পোলিং এজেন্টকে বের করে দেয়া বা ঢুকতে না দেয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের মধ্যদিয়ে খুলনা সিটি কর্পোরেশন-কেসিসি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এখন চলছে ভোট গননার কাজ।
গননা শেষে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণা শেষে আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণার জন্য প্রস্তুত রয়েছে সোনাডাঙ্গাস্থ বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। তবে দু’টি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের(ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হওয়ায় সেখানকার ফলাফলে বিএনপি প্রার্থীর চেয়ে আওয়ামীলীগের প্রার্থী ৬৭ ভোট বেশি পেয়েছেন।
মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হয়। প্রথমেই ২২ নম্বর ওয়ার্ডের খুলনা জিলা স্কুল কেন্দ্রে বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থীর এজেন্ট আলী আকবরকে মারধর করে বের করে দেয়া হয় বলে কাউন্সিলরপ্রার্থী মাহবুব কায়সার জানিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, নতুন বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রেও তার এজেন্টদের ঢুকতে দেয়া হয়নি। এ ওয়ার্ডে আওয়ামীলীগের মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থী কাজী আবুল কালাম আজাদ বিকু। তবে সকাল ৮টায় একই ওয়ার্ডের পাইওনিয়ার বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিয়ে আওয়ামীলীগের মেয়রপ্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, তিনি নিজেও ১৯৭৯ সালে জিলা স্কুল কেন্দ্রে ভোট দিতে পারেননি।
তখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল। তাছাড়া বিএনপি সাংগঠনিকভাবে দুর্বল বলেই তাদের এজেন্ট কেন্দ্রে ঢুকতে পারছে না বলেও তিনি জানান। তিনি ভোট দেন সকাল ৮টায়। পক্ষান্তরে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু সকাল সাড়ে ৮টায় ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের রহিমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিয়ে বের হয়ে সাংবাদিকদের বলেন, সকাল সাড়ে সাতটা থেকেই ভোট কেন্দ্রে বিএনপির পোলিং এজেন্টদের ঢুকতে দেয়া হয়নি।
৩০টির মত কেন্দ্রে তাদের এজেন্ট ঢুকতে দেয়া হয়নি বলেও তিনি অভিযোগ করেন। বিষয়টি রিটার্নিং অফিসারকে জানানো হলেও কোন ফল হয়নি। এ নির্বাচন জনগন চায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগন চায় উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিতে।
সকাল নয়টায় ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের খুলনা আলিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোট দিয়ে বের হয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এসএম শফিকুর রহমান মুশফিক বলেন, সুন্দর ও সাবলীলভাবেই জনগন ভোট দিচ্ছে।
তিনি এসময় জানান, তিনি সবসময় নিজের দোষটা দেখেন অন্যের গুনটা দেখেন। কারও সমালোচনা তিনি করেন না।
সকাল সাড়ে নয়টায় ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের শহীদ সোহরাওয়ার্দী কেন্দ্রে ভোট দিয়ে সিপিবি প্রার্থী মিজানুর রহমান বাবু বলেন, কি পরিবেশে ভোট হচ্ছে তা দৃশ্যমান।
সুসংবাদ, দুসংবাদ, যন্ত্রনা সবই সবার জানা। নির্বাচনী মাঠে শুধু একপক্ষই আছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। সকাল সোয়া ১০টার দিকে ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের গোলাম মোক্তাদির স্কুল কেন্দ্রে ভোট দেন ইসলামী আন্দোলনের মেয়রপ্রার্থী মাওলানা মুজ্জাম্মিল হক।
তিনি এসময় সাংবাদিকদের বলেন, সুষ্ঠু ভোটের অন্তরায়ের চিত্র বিভিন্ন জায়গা থেকে পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভোট জালিয়াতির খবর তিনি শুনেছেন বলেও জানান। অবশ্য সকাল থেকে দিনভর ভোটগ্রহণ চলাকালে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরে দেখা গেছে কেন্দ্রগুলো ছিল আওয়ামীলীগের দখলে।
কোন কোন কেন্দ্রের সামনে যেমন বিএনপি বা ধানের শীষের কর্মীদের খুজে পাওয়া যায়নি তেমনি অনেক জায়গায় এজেন্টও পাওয়া যায়নি। সকাল পৌনে নয়টার দিকে ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইকবাল নগর মসজিদ লেনের একটি পরিবারকে ছাত্রলীগের কিছু কর্মী গিয়ে ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য শাসিয়ে দেয়।
পরে ওইসব কর্মীরা রাস্তায় দীর্ঘসময় অপেক্ষা করে যাতে ওই পরিবারের কেউ ভোট দিতে না যেতে পারে। পরে ওই পরিবারের কেউ ভোট দিতে যেতে পারেনি। তাদের ভোটকেন্দ্র ছিল সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ওই কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ হয়। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.