পৈত্রিক ও নিজ সম্পদ বুঝে পাওয়ার দাবীতে ভূক্তভোগীর সংবাদ সম্মেলন

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: পৈত্রিক ও নিজ সম্পদ বুঝে পাওয়ার দাবীতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে সংবাদ সম্মেলন করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের মিল্কীপাড়ার ভূক্তভোগী মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে মুনিরুল ইসলাম মুনির।

আজ বুধবার সকালে শহরের শান্তিমোড়স্থ হোটেল আল নাহিদের সম্মেলন কক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। পৈত্রিক সম্পদের মধ্যে রয়েছে, শহরের মিল্কী মৌজায় ৫বিঘা জমি, ২টি বাড়ি, ২টি দোকান এবং ১টি পুকুর।

মুনিরুলের পিতা মতৃ ইউসুফ আলীর ৪ ছেলে ও ২ মেয়ে। পিতার সম্পদের হিসাব মোতাবেক মুনিরুল ইসলাম অংশ পাবেন মুদি দোকানের ১৫ লক্ষ টাকা ও ইলেক্ট্রিক দোকানের ২ কোটি টাকাসহ কয়েককোটি টাকার সম্পদ।

প্রায় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভূক্তভোগী মুনিরুল ইসলাম মুনির। অভিযোগে বলা হয়, আমার তিন ভাই মো. নাসিরুল ইসলাম, মিনারুল ইসলাম ও বাসিরুল ইসলাম, আমার নিজ নামীয় জমির অংশ, পিতার জমি ও ব্যবসার অংশ বুঝিয়ে দিচ্ছে না।

আমার পৈত্রিক অংশ বুঝিয়ে না দিয়ে প্রায় ২ বছর ধরে জোরপূর্বক দখল করে রয়েছে।

এব্যাপারে বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়দের সহযোগিতা চাইলে, গত ২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারী এ্যাডভোকেট গোলাম মুর্শেদ এর সভাপতিত্বে একটি সালিস হয় এবং সালিসনামা করা হয়।

উভয়পক্ষ সালিসের সিদ্ধান্ত মানলেও, এখন পর্যন্ত আমার কোন সম্পদ বুঝিয়ে দেয়া তো দূরের কথা, আমাকে বিভিন্নভাবে হুকমী-ধামকি দিতেছে।

আমার অংশ বুঝিয়া চাওয়ায় গত ২০ জানুয়ারী ২ ভাই নাসিরুল ও বাসিরুল কয়েকজন সন্ত্রাসীকে নিয়ে এসে হুমকী-ধামকী দিয়ে আমার বাসকরা ঘরে তালা দিয়েছে।

প্রেক্ষিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় অভিযোগ করি গত ২৩/০১/২০২০ইং তারিখে। অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি তদন্তে গেলে তদন্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতেই ২ ভাই ও তাদের লোকজন আমার স্ত্রীকে শারিরিকভাবে নির্যাতন করে।

এ কারণে স্থানীয় লোকজন আবার বসে সমাধানের জন্য আগামী ২১ মার্চ দিন ধার্য করে। এলাকাবাসীর কথায় আশ্বস্ত হয়ে স্ত্রীর উপর অমানুষিক নির্যাতন চালালেও মামলা করিনি।

এ সুযোগ নিয়ে এলাকাবাসীসহ আমার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগও করে আমার ২ ভাই নাসিরুল ও বাসিরুল।

এদিকে, ১০ মার্চ মঙ্গলবার ভোররাত সাড়ে ৪টার দিকে আমাদের ৪ ভাইয়ের নামীয় পুকুরে আমার চাষ করা মাছ জোরপূর্বক ধরে বাজারে বিক্রি করে দেয়। মাছ মারতে বাধা দিতে গেলে আমাকে লাঞ্চিত করে। আবারও বিষয়টি নিয়ে সদর থানায়  গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে অভিযোগ করি।

ভূক্তভোগী মুনিরুল ইসলাম পৈত্রিক ও নিজ সম্পদ বুঝিয়া পাওয়ার জোর দাবী জানান সংবাদ সম্মেলনে।

ভূক্তভোগী মুনিরুল ইসলাম আরও জানায়, দীর্ঘদিন থেকেই পারিবারিক কলহের জের ধরে তাঁর উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে আসছে তাঁর ২ ভাই।

দীর্ঘদিন মামলাও চলেছে। মামলায় হেরে যাওয়ার ভয়ে কৌশল করে এলাকার ও শহরের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে বিষয়গুলো সামাধান করে এবং আইন মোতাবেক সকল সম্পদের অংশ বুঝিয়ে দেয়ার অঙ্গীকার করে। কিন্তু কৌশল করে সালিস করে ধামাচাপা দিয়ে রাখার পরই আবার আগের চরিত্রে ফিরে যায় ২ ভাই নাসিরুল ও বাসিরুল।

কয়েক কোটি টাকার সম্পদ আত্মসাৎ করার জন্য নানা ষড়যন্ত্র করে চলেছেন নাসিরুল ও বাসিরুল। এমনকি আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেয়া অব্যহত রেখেছে।

মুনিরুল ইসলাম চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন পার করছেন।

এব্যাপারে নাসিরুল ইসলাম ও বাসিরুল ইসলাম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, মুনিরুল ইসলাম যে সব অভিযোগ করেছে, সেগুলো কোনটাই সত্য নয়। সকল সম্পদই আমাদের নানা-নানীর সম্পদ। পৈত্রিক সম্পত্তি বলতে যেসকল বোঝায়, সেগুলোর হিসাব মনিরুলকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁর মনমত না হওয়ায় এসব ঝামেলা করছে।

নানা-নানীর সম্পদ। নানা-নানীর কিছু সম্পদ সে নিজ নামেও লিখে নেয়। বর্তমানে আমাদের মা বেঁচে আছেন। গত ১ বছর আগে সালিস হয়েছিলো।

বাবার সম্পদ বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে, মায়ের সম্পদগুলো মায়ের বিষয়। মায়ের সাথেও সে এসব নিয়ে দূর্ব্যবহার করেছে। আমরা মাছ মেরে মুনিরুলের অংশ আমাদের কাছে জমা রয়েছে, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বসে সালিসে মুনিরুলকে বুঝিয়ে দেয়া হবে।

তাঁরা আরো জানায়, পৈত্রিক সম্পদ সকলেই অংশীদার। অংশ মোতাবেক যে যার অংশ পাবে।

সংবাদ সম্মেলনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আলহাজ্ব মাহবুবুল আলম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. জাফরুল আলমসহ জেলার স্থানীয় পত্রিকার প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি মো: আশরাফুল ইসলাম রঞ্জু। #

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.