পেট্রাপোল বন্দরে অগ্নিকাণ্ড, তুলাভর্তি ৫টি ট্রাক ভস্মিভূত

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বেনাপোল বন্দরের বিপরীতে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর সংলগ্ন লক্ষ্মী পার্কিংয়ে  শনিবার গভীর রাতে বাংলাদেশে রপ্তানির অপেক্ষায় থাকা তুলার ট্রাকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ সময় ৫টি ভারতীয় তুলা ভর্তি ট্রাক পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা জানা যায়নি। এ সময় পণ্য ভর্তি অন্যান্য ট্রাকগুলো অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়।
ভারতের বনগাঁ দমকলের ৪টি ইঞ্জিনের চেষ্টায় রোববার ভোররাতে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও অগ্নিকাণ্ডের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। ট্রাকে আগুন লাগলে দাহ্য পদার্থ মজুত থাকায় দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে। চার ঘণ্টা চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন লাগার কারণ এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি।
ভারতের পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এন্ড স্টাফ ওয়েলফেয়ার এ্যাসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, বনগাঁ পুরসভা পরিচালিত এই ট্রাক পার্কিংয়ে সুরক্ষার অভাব রয়েছে, নেই কোনো সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা। ফলে কিভাবে আগুন লাগল তা জানার কোনো উপায় নেই।
তিনি আরও বলেন, এদিনের আগুনে পুড়ে প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে ট্রাকসহ ট্রাকে থাকা মালামালের। প্রতিবেশি বাংলাদেশ থেকে যদি দমকল বাহিনী এদেশে আসতে পারত তাহলে ক্ষতির পরিমাণ অনেক কম হত। যদিও এ ক্ষেত্রে আইনত জটিলতা রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ওপারের সংশ্লিস্ট সূত্রে জানা গেছে, আজ রবিবার (০৭ নভেম্বর) সকাল ১১টা পর্যন্ত দমকল কর্মীরা আগুন নেভানোর কাজ চালিয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের মুখে গুঞ্জন শোনা যায়, এই আগুন নাকি কেউ বা কারা লাগিয়েছে পরিকল্পিতভাবে। তা না হলে এখানে এত বড় অগ্নিকাণ্ড হয়নি কোনোদিন।
এ বিষয়ে বনগাঁর বিজেপি নেতা দেবদাস মন্ডল বলেন, এদিনের অগ্নিকাণ্ডের পিছনে অন্তর্ঘাত রয়েছে বলে তাঁরা মনে করেন। কারণ বনগাঁ পুরসভাটাই একটা চক্রান্তের আতুঁড় ঘর। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হল সীমান্ত বাণিজ্য।
তিনি আরও বলেন, পার্কিংয়ে কোনো রকম সুরক্ষা বা সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা নেই, পুলিশও সেভাবে চোখে পড়ে না ওই এলাকায়। সম্পূর্ণ তোলাবাজী রাজ চলছে। পার্কিংকে সামনে রেখে আসলে এখানে মোটা টাকার কারবার আগেও চলত, এখনও চলছে। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন মুখে কুলপ এঁটেছে।
দমকল কর্মীরা জানান, শনিবার রাত থেকে ৪টি ইঞ্জিন একযোগে আগুন নেভানোর কাজ করেছে। স্থানীয় পুকুর থেকে পানি পাওয়ায় বাড়তি সুবিধা হয়েছে। এখন আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে পাশাপাশি পুড়ে যাওয়া পণ্যবাহী ট্রাক ও পণ্য উদ্ধারের কাজ শুরু হয়েছে।
এ বিষয়ে বনগাঁ পুরসভার পুর প্রশাসক গোপাল শেঠ বলেন, অন্তর্ঘাত কি না বলতে পারব না। তবে পুলিশ প্রশাসণ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। স্থানীয় মানুষ পুরসভা ও দমকল বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে আগুন প্রতিরোধ করেছেন। তবুও অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হলো ব্যবসায়ীদেরকে, এটা খুবই দুঃখজনক।
বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, ভারতের পেট্রাপোল বন্দর সংলগ্ন জয়ন্তীপুর লক্ষ্মী ট্রাক পার্কিংয়ে আগুন ধরার ঘটনা শুনেছি। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বাংলাদেশে আমদানির অপেক্ষায় থাকা কয়েকটি তুলার ট্রাক পুড়ে যাওয়ার কথা জানতে পেরেছি। #

 

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.