পুুঠিয়ায় আদালতের নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চলছে পুকুর খনন’ থামানো যাচ্ছে না কোনমতেই! 

বিশেষ প্রতিনিধি: রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় আদালতের নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অবৈধভাবে ফসলী জমি গুলোতে দেদারছে খনন করা হচ্ছে পুকুর। এদিকে পুকুর খনন রোধে সভা সমাবেশ করেও কোনো সুরাহা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
এলাকাবাসীদের অভিযোগ এক শ্রেণীর মৎস্য ব্যবসায়ীরা স্থানীয় প্রশাসন ও প্রভাবশালী নেতাদের ম্যানেজ করে রাতারাতি স্কেভেটরের মাধ্যমে পুকুর খনন করছেন। যত্রতত্র পুকুর খননের ফলে এই এলাকায় দীর্ঘ মেয়াদী জলাবদ্ধতার পাশাপশি দ্রুত কমে যাচ্ছে ফসলী জমির পরিমাণ।
এলাকাবাসীরা বলছেন, বিলের পানি প্রবাহের স্থান বন্ধ করে বর্তমানে উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় ৭টি পুকুর খননের কাজ চলছে। এর মধ্যে শিলমাড়িয়া ইউপি এলাকাতে সবচেয়ে বেশী। তারা বলছেন একটি মহলকে প্রতিবিঘায় ২০ হাজার টাকা দিয়ে পুকুর খননের কাজ করছেন মৎস্যচাষিরা। এর ফলে তাদের খনন কাজে কেউ বাধা দেয় না।
আবার অনেকেই ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করে তিন ফসলী জমিতে পুকুর খনন করছেন। ইতিমধ্যে ভালুকগাছি এলাকার একজন পুকুর খননকারী সহকারী জেলা প্রশাসকের স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগে আটক হয়ে গেছেন জেলহাজতে।
স্থানীয় সুত্র থেকে জানা গেছে, কৃষি জমিতে পুকুর খনন বন্ধ করতে গত দু’বছর আগে জনস্বার্থে মহামান্য হাইকোর্টে ২৪৭৬/২০১৯ নম্বরে একটি রিট আবেদন করা হয়।
ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত গত ২০১৯ সালে কৃষি জমির শ্রেণী পরিবর্তন বা পুকুর খনন না করতে আদেশ দেন। এর পাশাপাশি কোথাও পুকুর খনন কাজ চললে উপজেলা প্রশাসনকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু আদালতের নিষেধাজ্ঞাকে অমান্য করে আবারো পুকুর খনন কাজ শুরু করছেন মৎস্য ব্যবসায়িরা।
এ ব্যাপারে শিলমাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন মকুল বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, এবার কিছু প্রভাশালী লোকজন আমাদের এলাকার বেশী ভাগ ফসলী জমিতে পুকুর খনন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।
ইতিমধ্যে চারটি স্থানে পুকুর খনন কাজ চলছে। আরো ২০-২৫ টি স্থানে পুকুর খনন করার প্রস্তুতি চলছে। এই বিষয়টি একাধিবার উপজেলা আইনশৃংখলা ও মাসিক সভায় আলোচনা করেও কোনো লাভ হয়নি। তিনি আরো বলেন, পুকুর মালিকরা একটি বড় মহলকে ম্যানেজ করে তাদের খনন কাজ অব্যাহত রেখেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামসুন নাহার ভূইয়া বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ আছে দ্বি-ফসলী জমিতে পুকুর খনন করা যাবে না। অথচ এখানে কেউ সে আইন বা নির্দেশনা মানছেন না। যার যেখানে ইচ্ছে অপরিকল্পিত ভাবে পুকুর খনন করছে। এতে করে বর্ষা মৌসুমে মাত্রাতিরিক্ত জলাবদ্ধতায় ফসলহানী ঘটছে। আর ফসলী জমিতে পুকুর খননের আগে আমাদের কাছে কেউ কোনো অনুমতিপত্র নেয়ার প্রয়োজন মনে করে না।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, পুকুর খনন রোধে এলাকার লোকজনদের সচেতন করতে সভা সমাবেশ করেও তা রোধ করা যাচ্ছে না। এক শ্রেণির লোকজন স্থানীয় প্রভাবশালীদের মদদে ফসলী জমিতে পুকুর খনন করতে আদালতের নির্দেশনা আনছেন। যার কারণে আমাদের ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও খনন বন্ধে কোনো প্রকার পদক্ষেপ নিতে পারছি না। আবার অনেকেই রাতের আধারে অতি গোপনে পুকুর খনন কাজ চালাছেন। তবে এলাকার ফসলী জমি রক্ষার্থে সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষকে প্রতিবাদ করতে হবে। যত্রতত্র স্থানে পুকুর খননের কারণে আগামী দিনে এই এলাকার লোকজনদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি রুহুল আমীন খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.