পুলিশ সুপারের কঠোর নির্দেশনা : কলেজ ছাত্রী নির্যাতনকারী সোহান গ্রেফতার, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী


চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলায় বিকাশের টাকা উঠাতে গিয়ে কলেজ ছাত্রীকে নির্যাতনকারী বিকাশ দোকান মালিক সোহান কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ঘটনার ৪ দিন পর গতকাল শনিবার সকালে নির্যাতিত মেয়েটি থানায় মামলা দায়ের করলে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা ও নাচোল থানা পুলিশ আসামী সোহানকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

অভিযুক্ত ও নির্যাতনকারী সোহান বিকাশ এজেন্ট নাচোল উপজেলার মল্লিকপুর বাজারের বিকাশের এজেন্ট ও গোমস্তাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দীনের ভাগ্নে।

এ ঘটনায় পর জেলা পুলিশ সুপার এএইচএম আবদুর রকিব বিপিএম পিপিএম বার এর নির্দেশনায় দ্রুত জেলা গোয়েন্দা শাখার এসআই আবু আব্দুল্লাহ জাহিদ পিপিএম এর নের্তৃত্ব ডিবি পুলিশ ও নাচোল থানা পুলিশ আসামীকে গ্রেফতার করে।

নাচোল থানায় দায়েরকৃত মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার সকালে বান্ধবীর দেয়া ধারের টাকা বিকাশের দোকানে উঠাতে যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরাতলা মহিলা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ও শিবগঞ্জ উপজেলার ধাইনগর ইউনিয়নের গুপ্তমানিক-মুক্তারোড়া গ্রামের মো. টিপুর দ্বিতীয় মেয়ে জান্নাতি খাতুন।

পরে বিকাশের এজেন্ট মোবাইল নিয়ে দেখতে পায় ম্যাসেজ এসেছে, কিন্তু কোন ব্যালান্স নেয়। সেটি জান্নাতিকে বললে সে দোকান ত্যাগ করে চলে আসে। এরপর ঐ দোকানদার প্রায় ১ কিলোমিটার দূর থেকে সে ছাত্রীকে ধরে নিয়ে গিয়ে দোকানের সামনে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখে নির্যাতন ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।

মল্লিকপুর বাজারে দোকানের সামনে ৩ ঘন্টা বেঁধে রাখার সময় বাজারের লোকজন মোবাইলে ছবি ধারন করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা গত শুক্রবার (০২ অক্টোবর) ছড়িয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজনের অনুরোধে মেয়েটিকে ছেড়ে দেয় সোহান।

এব্যাপারে নির্যাতনের শিকার জান্নাতি বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, আমার সহপাঠী গোবরাতলা ইউনিয়নের মহিপুর গ্রামের প্রবাসী শহিদুল ইসলামের মেয়ে সুমাইয়া খাতুন আমার নম্বরে বিকাশে আমার পাওনা ১০ হাজার টাকা পাঠায়।

গত সোমবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে সেই টাকা উঠাতে গেলে মহিপুর মোড়ে বিকাশের দোকান বন্ধ পায়। পাশের একজনের পরামর্শে, মল্লিকপুর বাজারে সেই দোকানে গেলে এজেন্ট আমার ফোন চাই। ফোন নিয়ে তিনি বলেন, ম্যাসেজ আছে কিন্তু ব্যালান্সে টাকা নেয়।

এরপর সেখান থেকে আমার আরেক বান্ধবীর বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা হলে ১ কিলোমিটার দুরে খলসী বাজারে গেলে সেখান থেকে আমাকে ধরে ভ্যানে করে আবারো মল্লিকপুর বাজার থেকে ধরে নিয়ে যায় বিকাশ এজেন্ট সোহান।

তিনি জানান, দোকানের সামনে চোরের মতো দড়ি দিয়ে খুঁটির সাথে বেঁধে রেখে নির্যাতন ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এজেন্ট সোহান ও তার লোকজন। এসময় আমার ফোন কেড়ে নিয়ে সব ম্যাসেজ ডিলেট করে দেয় এবং আমার পরিবারের সাথেও যোগাযোগ করতে বাধা দেয়।

পরে স্থানীয়দের অনুরোধে তারা আমার এক চাচাতো দুলাভাইয়ের হাতে ছেড়ে দেয়। আমাকে এভাবে প্রকাশ্যে বিনা অযুহাতে এবং কোন কারণ ছাড়ায় জনসম্মুখে নির্যাতন ও সম্মাননহানী করার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

এমন শাস্তি দেয়া হোক, যেন আর কেউ যেন কোন নারীকে নির্যাতন ও অসম্মান করার সাহস না পায়।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি মো: আশরাফুল ইসলাম রঞ্জু। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.