পুরনো বন্ধুত্ব জোরদার করতে ভিয়েতনামে পুতিন

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেন যুদ্ধে পশ্চিমাদের সঙ্গে সরাসরি বিরোধে জড়িয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। স্বাভাবিকভাবেই ন্যাটো, ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে লড়তে হচ্ছে পুতিনকে। যা কঠিন হয়ে পড়েছে রাশিয়ার জন্য। আর এই অবস্থায় সমর্থনের খোঁজে নেমেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। উত্তর কোরিয়া সফরের পর এবার ভিয়েতনামে রাষ্ট্রীয় সফরে গিয়েছেন তিনি। যেখানে পুতিনের উদ্দেশ্য পুরনো বন্ধুত্ব নতুন করে জাগিয়ে তোলা।
ভিয়েতনামের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কটা অবশ্য বেশ পুরনো। ১৯৫০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নকে পাশে পেয়েছিল ভিয়েতনাম। তাছাড়া ভিয়েতনামের অনেক বড় নেতায় রাশিয়ায় পড়াশোনো করেছেন। সেখানকার ভাষাও শিখেছেন। 
তাছাড়া ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে একটি ছোট পার্কে লেনিনের একটি পাঁচ মিটার উঁচু মূর্তি আছে, যা রাশিয়ার দেওয়া। এই মূর্তিটি রাশিয়ান বিপ্লবীকে বীরত্বপূর্ণ ভঙ্গিতে চিত্রিত করে। প্রতি বছর দেশটির স্বাধীনতা দিবসের দিন ভিয়েতনামের সিনিয়র কর্মকর্তাদের একটি প্রতিনিধি দল গম্ভীরভাবে ফুল দেয় এবং মূর্তির সামনে তাদের মাথা নত করে। অর্থাৎ দুই দেশের মধ্যে ঐতিহাসিকভাবেই গভীর সম্পর্ক ছিল।
তবে সাম্প্রতিক নানা কারণে আগের মতো নেই এই দুই দেশের সম্পর্ক। ভিয়েতনামের অর্থনীতি বৈশ্বিক বাজারে বেশ গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে। অন্যদিকে বাণিজ্য অংশীদার হিসেবে চীন, এশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের চেয়ে অনেক পিছিয়ে পড়েছে রাশিয়া। তবে ভিয়েতনাম এখনও প্রধানত রাশিয়ার তৈরি সামরিক সরঞ্জাম ব্যবহার করে এবং দক্ষিণ চীন সাগরে তেল অনুসন্ধানের জন্য রাশিয়ান তেল কোম্পানিগুলির সাথে অংশীদারিত্বের উপর নির্ভর করে।
তবে ইউক্রেনের আগ্রাসন ভিয়েতনামকে একটি কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। তারা রাশিয়ার কর্মকাণ্ডের নিন্দা করা থেকে জাতিসংঘের বিভিন্ন রেজোলিউশনে বিরত থাকলেও ইউক্রেনের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছে। কিয়েভে কিছু সাহায্য পাঠিয়েছে তারা। কেননা হাজার হাজার ভিয়েতনামী ইউক্রেনে কাজ করেছে এবং পড়াশোনা করেছে।
তবে এসব পেছনে ঠেলে নতুন করে পুরনো বন্ধুত্ব ফিরিয়ে আনতে চায় দুই দেশ। সেই লক্ষ্যেই পুতিনের এই ভিয়েতনাম সফর। বৃহস্পতিবার হ্যানয়েতে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট টু লাম বলেছেন, ভিয়েতনাম রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে চায়। তাছাড়া লাম পুতিনকে তার পুনঃনির্বাচনের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন পুতিন। সেই সঙ্গে দেশীয় রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য তার সরকারের প্রশংসা করেছেন পুতিন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.