পীত সাগরে উত্তর কোরিয়া জাহাজে দক্ষিণ কোরিয়ার ‘সতর্কতামূলক গুলি’

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পীত সাগরের বিতর্কিত সীমান্তে দক্ষিণ কোরিয়ার বাহিনী উত্তর কোরিয়ার একটি বাণিজ্যিক জাহাজের দিকে টানা এক ঘণ্টা পর্যন্ত সতর্কতামূলক গুলি ছুড়েছে। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় ভোরের দিকে এ ঘটনা ঘটে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী বলছে, ভোর ৫টার দিকে উত্তর কোরিয়ার জাহাজটি দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্ত দ্বীপ বেংনিয়ং-এর কাছে উত্তরাঞ্চলীয় সীমারেখা অতিক্রম করে। জাহাজটি এক ঘণ্টা ধরে সামুদ্রিক সীমান্তের দক্ষিণ দিকে অবস্থান করে এবং সীমানা রেখার ৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অগ্রসর হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমাদের সেনাবাহিনী একটি সতর্কীকরণ বার্তা পাঠায় এবং সতর্কীকরণ গুলি ছোড়ে। এরপর উত্তর কোরিয়ার বাণিজ্যিক জাহাজটি আমাদের আঞ্চলিক জলসীমা থেকে পিছু হটে।’
বিবৃতিতেতে আরও বলা হয়, ‘আমাদের সামরিক বাহিনী উত্তর কোরিয়ার গতিবিধি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে এবং অপারেশনাল পদ্ধতি অনুসারে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। আমরা দৃঢ়ভাবে আমাদের প্রস্তুতির অবস্থান বজায় রাখব এবং দেশকে রক্ষা করার জন্য যে কোনো পরিস্থিতির প্রতি দৃঢ়ভাবে সাড়া দেব।’
উত্তর কোরিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিম সন-গিয়ং নিউইয়র্কে ৮০তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান করবেন বলে জানা গেছে। এমন সময় ঘটনাটি ঘটলো। তবে পিয়াংইয়াং এখনো এই ঘটনার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
শুক্রবারের ঘটনাটি তিন বছরের মধ্যে উত্তর কোরিয়ার কোনো জাহাজের ‘অনুপ্রবেশের’ ঘটনা বলে দাবি করা হচ্ছে। ২০২২ সালের অক্টোবরে উত্তর কোরিয়ার একটি বাণিজ্যিক জাহাজ সীমানা রেখা লঙ্ঘন করেছিল এবং দক্ষিণ কোরিয়ার একটি যুদ্ধজাহাজ থেকে সতর্কীকরণ গুলি ছোড়া হয়।
তবে সেসময় জবাবে উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনী দক্ষিণ কোরিয়ার জলসীমার দিকে পাল্টা সতর্কতামূলক গুলি হিসেবে ১০ রাউন্ড কামানের গোলা নিক্ষেপ করে।
কোরীয় উপদ্বীপের পশ্চিম উপকূলের বিতর্কিত সমুদ্র সীমানা দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী শত্রুতার একটি উৎস। এর ফলে বেশ কয়েকটি মারাত্মক সংঘর্ষও ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে রয়েছে ২০১০ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি দ্বীপে উত্তর কোরিয়ার গোলাবর্ষণ এবং একই বছর দক্ষিণ কোরিয়ার একটি নৌবাহিনীর জাহাজে উত্তর কোরিয়ার টর্পেডো হামলা। এর ফলে ৪৬ জন নাবিক নিহত হন।
১৯৫০-৫৩ সালের কোরিয়ান যুদ্ধের পর দক্ষিণ কোরিয়া কার্যত সামুদ্রিক সীমানা হিসেবে একটি রেখা তৈরি করেছিল। কিন্তু উত্তর কোরিয়া এটিকে স্বীকৃতি দেয়নি। উত্তর কোরিয়া দাবি করে, সমুদ্র সীমানা বর্তমান সীমানা রেখার আরও দক্ষিণে অবস্থিত। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.