পিরানহা ও বিদেশী মাগুর মাছ নিষিদ্ধ হলেও খুলনা শহর ও নয় উপজেলার হাট বাজারে অবাধে বিক্রি, প্রশাসন কেন নিরব?

বিশেষ (খুলনা) প্রতিনিধি: বাংলাদেশ সরকার পিরানহা ও বিদেশী মাগুর মাছের চাষ, উৎপাদন,পোনা উৎপাদন, বংশ বৃদ্ধি, বাজারে বিক্রয় এবং বাজার থেকে ক্রয় সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করলেও খুলনা শহরের আড়তগুলোসহ বাজারগুলো সহ জেলার ৯ উপজেলার হাটে-বাজারে এ মাছ দুটো অবাধে আমদানি ও কেনাবেচা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এ ব্যাপারে তেমন কোনো ভূমিকা নেই বললেই চলে।
উল্লেখ্য, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশ সরকারও রাক্ষুসে স্বভাবের কারণে পিরানহা মাছ চাষ, উৎপাদন, পোনা উৎপাদন, বংশ বৃদ্ধি, বাজারে বিক্রি এবং বাজার থেকে ক্রয় সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ সরকার। এছাড়া ২০১৪ সালের জুন থেকে আফ্রিকান মাগুরের আমদানি, উৎপাদন, বিপণনের উপরও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।
প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিস রুলস, ১৯৮৫ এর কয়েকটি ধারা সংশোধন করে আফ্রিকান মাগুরের উপর এ নিষেধাজ্ঞা জারি করে মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়। এছাড়া বিদেশ থেকে আফ্রিকান মাগুর ও পিরানহা মাছ, মাছের রেণু ও পোনা আমদানি করলে জেল জরিমানার বিধান রেখে মৎস্য সংঘ নিরোধ আইন-২০১৭ এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিপরিষদ। এই আইন অমান্য করলে দুই বছরের জেল ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
মৎস্য বিশেষজ্ঞদের মতে বাংলাদেশ বন্যা প্রবণ দেশ। এখন পুকুরে বা ঘে‌রে যদি পিরানহা মাছ বা আফ্রিকান মাগুর মাছ চাষ ক‌রা হয় এবং সেই মাছ যদি পানিতে ভেসে অবরুদ্ধ স্থান থেকে মুক্ত জলাশয় যেমন নদী, খাল বিলে চলে আসে। তখন তাদের আক্রমণে দেশীয় ছোট বড় সব মাছ বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।
তাঁরা আরও জানান, এই মাছে পরিবেশগত ঝুঁকি রয়েছে অনেক। যদি সম্পূর্ণভাবে পিরানহা মাছ ও আফ্রিকান মাগুর মাছের উৎপাদন, বিপণন, বিক্রি ও সংরক্ষণ স্থায়ীভাবে বন্ধ করা না গেলে বাংলাদেশের ২৬০ প্রজাতির স্বাদু পানির মাছ এবং ৪৭৫ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ অধিকাংশ বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
সরকারি এত কঠোরতা থাকা সত্বেও খুলনা শহরের বিভিন্ন আড়ৎ ও বাজারে, দিঘলিয়া, তেরোখাদা, ডুমুরিয়া ও ফুলতলাসহ বিভিন্ন উপজেলার হাটে-বাজারে অবাধে আমদানি, বাজারজাতকরণসহ এখনও এসব মাছ প্রকাশ্যেই উৎপাদন ও খোলা বাজারে বিক্রি হতে দেখা যায়। যা বেশিরভাগ সময় থাই রূপচাঁদা বা সামুদ্রিক চান্দা নামে বিক্রি হয়। এর ছোট আকারের আফ্রিকান মাগুর মাছ, দেশি মাগুর মাছ বলে বিক্রি হতে দেখা যায়। দামে কম হওয়ায় সেই সঙ্গে অন্য মাছের নামে বিক্রি করায় প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে ক্রেতারা।
খুলনার মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নাকের ডগা দিয়ে শহরের সব আড়ৎ ও হাটে বাজারে আমদানি ও বিক্রি করতে দেখা গেছে। মৎস্য অধিদপ্তর ও খুলনা জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা ও আইন অমান্যকারিদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা না করা হলে এ মাছগুলোর দিন দিন বিস্তার ঘটবে বলে বিজ্ঞমহলের অভিমত।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ (খুলনা) প্রতিনিধি সৈয়দ আবুল কাসেম। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.