পাবনায় পদ্মা নদীতে আটকা পড়েছে কুমির: উৎসুক মানুষের ভীড়

পাবনা প্রতিনিধি: পাবনা সদর উপজেলার দোগাছি ইউনিয়নের চর কোমরপুরে পদ্মা নদীতে দেখা দিয়েছে বিশাল আকারের একটি কুমির। এই কুমির আতঙ্কে রয়েছে স্থানীয় গ্রামবাসী ও জেলেরা। কুমিরের কথা এখন গোটা শহর জুড়ে ছড়িয়ে গেছে। কুমির দেখতে গ্রাম এবং শহরের অনেক মানুষ ভিড় করছেন নদীর পাড়ে। গ্রামবাসীর ধারণা চলতি বর্ষার জলে ভেসে আসা  কুমিরটি আটকা পড়েছে পদ্মা নদীতে। তবে ইতোমধ্যে খাদ্য সংকটে কুমিরটি হিংস্র হয়ে ওঠায় বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় কৃষক ও মৎস্যজীবীরা।

বনবিভাগের মাধ্যমে কুমিরটি উদ্ধারে দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি করেছেন স্থানীয়রা।

পাবনা সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরের গ্রাম চর কোমরপুর। গ্রামটির পাশ দিয়ে বয়ে গেছে পদ্মা নদী। বর্ষার জল শুকিয়ে এখন পায়ে হাঁটা পথ হয়েছে অনেকটা।  বিশাল এই পদ্মার এক পাড়ে পাবনা অপর পাড়ে কুষ্টিয়ার সীমানা। নদী শুকিয়ে যাওয়ার কারণে মাঝ চরের ছোট খালে পরিণত হওয়া নদীতেই গত দশ পনের দিন ধরে ভেসে বেড়াচ্ছে একটি বিশাল আকারের কুমির। সম্প্রতি, নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে কয়েকজন জেলে প্রথম দেখতে পান কুমিরটি। গত এক সপ্তাহে বেশ কয়েকবার মাছ ধরা নৌকায় কুমিরটি হামলা করলে আতঙ্কে ছড়িয়ে পড়ে গ্রামবাসীর মধ্যে।

চর কোমরপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. আসাদ বিশ্বাস জানান, কয়েকদিন আগে পদ্মা নদীর চরে জাল দিয়ে মাছ ধরতে গিয়ে হঠাৎ কুমিরটিকে মাথা তুলতে দেখি। ভয়ে আতঙ্কে উঠে দৌঁড়ে এসে সবাইকে খবর দেই। এরপর অনেকেই কুমিরটিকে দেখতে ছুটে আসেন। এখানে ভয়ে চরে কেউ গরু, ছাগল চরাতে পারছে না, জমিতে আবাদ করাও বন্ধ রেখেছে অনেকে। নদীতে আমরা কাজ শেষ করে গোসল করতাম এখন ভয়ে নদীতে নামছে কেউ।

কুমিরের ভয়ে নদীর তীরে কৃষিকাজ বন্ধ করে দিয়েছেন গ্রামবাসী। একাধিকবার অতি উৎসাহীরা নিয়েছেন কুমিরটিকে হত্যার উদ্যোগ।

 

 

স্থানীয় জেলেরা জানান, কখনো নদী পাড়ে উঠে বিশ্রাম নিচ্ছে কুমিরটি। এ কারণে চরের জমিতে আবাদে ভয় পাচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা। গত সপ্তাহে নৌকা নিয়ে আবু তালেব নামে একজন জেলে মাছ ধরতে গেলে কুমিরের হামলার শিকার হন। হাতের বৈঠা দিয়ে কুমিরটিকে সরিয়ে কোনো মতে প্রাণ নিয়ে ফেরেন তিনি।

স্থানীয়রা বলছেন কুমিরটি খুবই ক্ষুধার্ত, তাই প্রচন্ড হিংস্র হয়ে আছে। দ্রুত তাকে না সরালে, যে কেউ আক্রান্ত হতে পারে বা স্থানীয়রা বিক্ষুব্ধ হয়ে কুমিরটিকে হত্যাও করতে পারে।

এ বিষয়ে পাবনা জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন জানান, তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে আমি খবরটি পেয়েছে। ইতোমধ্যে কুমির উদ্ধারে সংশ্লিষ্ট দফতরে খবর দেয়া হয়েছে। বিভাগীয় বন কর্মকর্তাকে এ ব্যাপারে অনুরোধ করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত কুমিরটি উদ্ধার করা সম্ভব হবে। কুমিরটি উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত স্থানীয়দের ধৈর্য ধরতে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

গতকাল বুধবার পরিদর্শনে আসা বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও প্রাকৃতিক সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক জাহিদুল কবির বিটিসি নিউজকে জানান, পদ্মা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত খালটি পর্যাপ্ত পরিমাণ গভীর থাকায় বর্তমানে কুমিরটি নিরাপদে আছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কমিটির মাধ্যমে বিষয়টিকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে আমাদের টিমের সঙ্গে কথা বলছি। কুমিরটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হবে।#

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.