নিজস্ব প্রতিবেদক: গাজনার বিলের জমিতে হাড়ভাংগা খাটুনি খেটে ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত ও তৃষ্নার জ্বালায় গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাওয়া কৃষকদের সুপেয় পানির জন্য দীর্ঘদিনের হাহাকারের অবসান হলো পাবনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলামের মহতী উদ্যোগে।
তিনি বিলের মাঝখানে অবস্থিত ছায়াঢাকা, পাখির কলকাকলীতে মুখরিত বটবৃক্ষের নীচে ১৫০ ফুট গভীর নলকুপ স্থাপনের মাধ্যমে মানবতার এক অনন্য নজির সৃষ্টি করেছেন।
তপ্ত দুপুরে জৈষ্ঠ্যমাসের খররৌদ্রে খোলা আকাশের নীচে ফসলের মাঠে কাজ করা তৃষ্নার্ত ও ক্লান্ত কৃষকেরা ভূগর্ভস্থ ১৫০ ফুট গভীরের ঠান্ডা সুপেয় পানি পান করে দেহ এলিয়ে দেয় ছায়া সুশীতল বটবৃক্ষের চারপাশে ঘেরা বাধানো মার্বেলের চত্বরে। খোলা আকাশের ফসলের মাঠে কাজ করতে করতে জৈষ্ঠ্যমাসের খররৌদ্র যখন হয়ে ওঠে ক্লান্ত ও অসহায় কৃষকের অশ্রুশুন্য রোদন তখন পার্শ্বে অবস্থিত সুশীতল ছায়াঘেরা বটবৃক্ষের নীচে ঠান্ডা সুপেয় পানি পান করে নিজের অজান্তেই তারা কিছুক্ষণের জন্য ঘুমিয়ে পড়ে বাঁধানো চত্বরে। আবার শুরু হয় নব উদ্যমে কাজ করা। এ এক বিরল দৃশ্য যা সচক্ষে দৃষ্টিগোচর না হলে বুঝানো যাবেনা।
অদ্য ০৮/০৫/২০২৫ তারিখ তিনি স্বয়ং উপস্থিত হয়ে এ নলকূপটি চালু করেন। উপস্থিত কৃষকগণ এতে অত্যন্ত আনন্দিত ও জেলা প্রশাসকের এ উদ্যোগের জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে। মাাঠের কাজের পর এখন থেকে তারা দুপুরের খাবার এখানেই খাবেন এবং কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে আবার কাজ শুরু করবেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম বলেন, “গত মাসে পিঁয়াজ তোলার মৌসুমে কৃষকদের সুখ-দুঃখের অনুভূতি জানার জন্য ও কোন সমস্যা থাকলে তা সমাধানের উপায় খুঁজে বের করার জন্য তাদের নিয়ে সুজানগর উপজেলার গাজনার বিলে কৃষক সমাবেশ ও মতবিনিময় সভা করা হয়েছে।
উক্ত সভায় তাদের দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে বিশাল বিলের বিভিন্ন লোকেশনে ৩টি ডীপ টিউবওয়েল ও বিশ্রামাগার নির্মাণ করে দেওয়ার অঙৃগীকারের অংশ হিসেবে এ কাজটি করা হয়েছে। বাকী ২টির স্থান নির্বাচনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ইউএনও কে বলা হয়েছে। এ ধরণের সামাজিক কাজ আমি নিয়মিতই করে থাকি। জনকল্যাণে সরকারি সুবিধা সকল স্তরের মানুষ যাতে সমানভাবে ভোগ করতে পারে সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি এবং তা অব্যাহত থাকবে।”
আজকে উপস্থিত কৃষকদের একজন বলেন, পিঁয়াজ আবাদের সময় বর্ষাকালের বিপুল পরিমাণ কচুরিপানা পরিষ্কার করতে হয়। এতে বিঘা প্রতি ৪০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়ে যায়। এতে উতপাদন খরচ বেড়ে যায়।
তাদের দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে সরকারীভাবে ও স্বেচ্ছাসেবক টীমের মাধ্যমে কচুরিপানা পরিষ্কারের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য ইউএনও সুজানগরকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
আজীবন ভালো থাকুক খেটে খাওয়া মানুষগুলো মাতৃস্নেহের মতো ছায়াঘেরা পাখিডাকা বটবৃক্ষের সুশীতল ছায়া আর সুপেয় পানির তৃষ্ণা মিটিয়ে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি জহুরুল ইসলাম / পাবনা। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.