লালমনিরহাট প্রতিনিধি: লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে ভরা বর্ষাও পানির অভাবে পাট জাগ দিতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় শুকিয়ে আছে খাল-বিল-ডোবাসহ সব ধরনের জলাশয়। আষাঢ় শেষে শ্রাবণ মাসেও বৃষ্টি না হওয়ায় পানির অভাবে পাট চাষিরা চরম বিপাকে পড়েছে। পাট কাঁটার উপযোগী হলেও পানির অভাবে কৃষকরা তা কেটে জাগ দিতে পারছেন না। যার ফলে তারা চরম দুশ্চিন্তায় আছেন।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পানির অভাবে তারা পাট জাগ দিতে পারছেন না। বৃষ্টির অপেক্ষায় থেকে জমিতেই রোদে পুড়ে লালচে হয়ে যাচ্ছে পাট। অনেকে আবার অপরিষ্কার পানিতে বাধ্য হয়ে জাগ দিচ্ছেন। এতে সোনালি আঁশের রঙ কালচে হওয়ায় বাজারে কাঙ্ক্ষিত দাম পাওয়া নিয়েও তৈরি হয়েছে শঙ্কা। আবাদ ভালো হলেও লোকসানের আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
কাকিনা ইউনিয়নের চাঁপারতল এলাকার পাট চাষি শাহিনুর মিয়া জানান, তিনি ১ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। কিন্তু বৃষ্টির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছেন না। ক্ষেত থেকে পাট এনে রাস্তায় রেখেছেন।
রুদ্রেশ্বর এলাকার পাট চাষি ইয়াকুব আলী ও রায়হান মিয়া জানান, গেল ৩-৪ দিন সামান্য বৃষ্টি হলেও ধানের জমিতে পানি জমেনি, ফলে তারা পাট কাটলেও জাগ দিতে পারছেন না। তবে কিছু কৃষক অতিরিক্ত খরচ করে ৩-৪ কিলোমিটার দূরে বিভিন্ন জলাশয়ে নিয়ে গিয়ে পাট জাগ দিচ্ছেন।
এদিকে কৃষকদের আশঙ্কা, আগামী সপ্তাহে বৃষ্টিপাত না হলে পাট চাষে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। প্রতি বছর একই সমস্যা সম্মুখীন হওয়ায় কৃষকরা পাট চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারেন। তাদের অভিযোগ, উৎপাদন খরচ বাড়লেও বাজারে ন্যায্য মূল্য পাওয়া যাচ্ছে না।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তুষার কান্তি রায় জানায়, কৃষি বিভাগ সব সময় পাট চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করছে এবং চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এ বছর উপজেলার ৮ ইউনিয়নে ৩৮০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। পাট চাষে একটা উপকারিতা আছে, পাটের যে পাতা জমিতে পড়ে সে পাতা পচে জৈব সার তৈরি হয়। ফলে জমির উর্বরতা বেড়ে যায়। যে কোন ফসল করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। ইতোমধ্যে ৮০ ভাগ জমির পাট কাটা হয়েছে। দুই -চার দিনের মধ্যে বৃষ্টিপাত হলে পাট চাষিরা তাদের সমস্যার সমাধান পাবেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর লালমনিরহাট প্রতিনিধি হাসানুজ্জামান হাসান। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.