পাঞ্জাব কংগ্রেসে আপাতত সঙ্কট কাটলো

(পাঞ্জাব কংগ্রেসে আপাতত সঙ্কট কাটলো–ছবি: প্রতিনিধির)
কলকাতা-হাওড়া (ভারত) প্রতিনিধি: ধামাচাপা পড়ল সমস্যাটা। তবে ক্ষত নিরাময় আদৌ হলো কিনা তা বলা যাচ্ছে না এখনই। শুধু এইটুকুই বলা যায়, পাঞ্জাবে কংগ্রেসের প্রবল অন্তর্দ্বন্দ্বে আপাতত ইতি। হতে পারে সাময়িক বিরতিও। রাজ্যের দোর্দন্ডপ্রতাপ মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং অবশেষে জানিয়ে দিয়েছেন, প্রাক্তন ক্রিকেটার নভজোৎ সিং সিধুকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে মেনে নিতে তাঁর এখন আর কোনও আপত্তি নেই। তবে সেইসঙ্গে শর্তও আরোপ করছেন তিনি। কী সেই শর্ত? সিধু সভাপতি পদে বসলে অবশ্যই নিয়োগ করতে হবে দু’জন কার্যকরী সভাপতি কিংবা সহসভাপতি। এবং অমরিন্দর সিং এর মন্ত্রিসভার ব্যাপারে কোনও ভাবেই নাক গলাতে পারবেন না সিধু। কিন্তু এর পরেও পাঞ্জাবে বিধানসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেসের অস্বস্তি কমবে না বাড়বে, তা জোর দিয়ে বলতে পারছেন না কেউই।
অমরিন্দর সিং-এর সঙ্গে সিধুর ঠান্ডা লড়াই আজকের নয়, বেশ কয়েক বছরের। ২০১৭তে বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়ে সিধুর একের পর  এক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতাটা মোটেই ভালোচোখে দেখেননি অত্যন্ত শৃঙ্খলাপরায়ণ কংগ্রেস নেতা তথা মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর। কিন্তু যে কোনও কারণে তাঁর ধারণা হয়, হাইকমান্ডের প্রশ্রয় পাচ্ছেন  সিধু। যদিও মুখ্যমন্ত্রী বলে তাঁকেও চটাচ্ছেন না দিল্লির নেতারা। স্বাভাবিক কারণেই কিছুটা ক্ষোভ জন্মায় ক্যাপ্টেনের মনে। অতিসম্প্রতি তাঁর কানে আসে, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পরিবর্তন করতে চাইছে কংগ্রেস হাইকমান্ড। সুনীল জাখরকে সরিয়ে তাঁর জায়গায় বসানো হচ্ছে সিধুকে। ক্ষোভে ফেটে পড়েন অমরিন্দরজি। প্রবীণ এবং অত্যন্ত জনপ্রিয় নেতা প্রাক্তন এই উচ্চপদস্থ সেনাকর্তার বিশ্বাস, ২০২২ এ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে শাসক দল কংগ্রেসের সভাপতি পরিবর্তন করলে  মানুষ তা ভালোভাবে নেবেন না মোটেই। এর খারাপ পড়বে ভোটে। সুযোগ নেবে বিরোধী আকালি দল এবং আম আদমি পার্টি।
এদিকে বিজেপি-র প্রাক্তন সাংসদ এবং রাজ্যের প্রাক্তন কংগ্রেসি মন্ত্রী সিধু দিল্লিতে গিয়ে দেখা করেন কংগ্রেসের শীর্ষনেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে। সূত্রের খবর, এইসব ঘটনাপ্রবাহে এতটাই ক্ষুব্ধ হন অমরিন্দর সিং যে তিনি পদত্যাগের ইচ্ছেও প্রকাশ করেন। যদিও পরে একথা অস্বীকার করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর ঘনিষ্ঠদের মধ্যে এমন আশঙ্কাও জেগেছে, আপাতত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে বসানো হলেও সিধুকে আসলে ভবিষ্যতের  মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে ক্যাপ্টেনের বদলে।
অবস্থা সামাল দিতে সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধী আলাদাভাবে কথা বলেন অমরিন্দর সিং এবং সিধুর সঙ্গে। পাঞ্জাবের দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেস নেতা হরিশ রাওয়াত গত শনিবার (১৭ জুলাই) দিল্লি থেকে উড়ে এসে বোঝাতে বসেন অমরিন্দর সিংকে। তিনি এবং সিধু দু’জনেই আলাদাভাবে মত বিনিময় করেন নিজেদের অনুগামীদের সঙ্গে। কথা হয় বিক্ষুব্ধ নেতা-মন্ত্রীদের মধ্যেও। অবশেষে বরফ গলে। সিধুর সঙ্গে মুখোমুখি কথা বলতে না চাইলেও তাঁকে শর্ত সাপেক্ষে রাজ্য সভাপতি হিসেবে মেনে নিতে তাঁর কোনও আপত্তি নেই বলে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং।
কিন্তু এটা কি যুদ্ধের অবসান, নাকি নিছকই যুদ্ধবিরতি, তার উত্তর দিতে পারবে কেবলমাত্র ভবিষ্যতই।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ (বাংলাদেশ) এর কলকাতা-হাওড়া (ভারত) প্রতিনিধি সৌম্য সিংহ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.