পাকিস্তান সফরে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দুইদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে পাকিস্তানে এসেছেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা। বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) তিনি পাকিস্তানে পোঁছান। এরই মধ্যে তিনি পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে ইউক্রেন ও রাশিয়ার শস্য চুক্তির পাশাপাশি অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
পাকিস্তানের সঙ্গে ইউক্রেনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ১৯৯৩ সাল থেকে। তবে এই প্রথম ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাকিস্তান সফরে এসেছেন। কিন্তু গতবছর রাশিয়ার ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পরপরই মস্কো সফরে যান পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
ওই সফরের কারণে ইমরান খানকে সে সময় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। এর দুই মাস পরই ইমরান ক্ষমতাচ্যুত হন। এরপর নতুন সরকার ইউক্রেনকে বাণিজ্যিক ও মানবিক সহায়তা দিলেও ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের বিষয়ে নিন্দা জানায়নি।
প্রতিবেদন মতে, যৌথ সংবাদ সম্মেলনে কুলেবা ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি কৃষ্ণসাগর শস্য চুক্তি নবায়ন বিষয়ে আলোচনা করেছেন। বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে চুক্তি বহাল রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বিলাওয়াল।
গত সোমবার (১৭ জুলাই) মস্কো ইউক্রেনের সঙ্গে স্বাক্ষরিত শস্য চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয়। চুক্তিটি নবায়ন না হলে ইউক্রেনের খাদ্য শস্য রফতানি আবারও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশের মতো পাকিস্তানও বিপাকে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা বলেন, ‘কৃষ্ণসাগর শস্য চুক্তি পুনরায় চালু করার জন্য সাম্ভাব্য সব ধরণের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। বৈশ্বিক খাদ্য বাজারে ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা, মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও যেসব দেশের বেশি প্রয়োজন তাদেরকে যেন ইউক্রেন শস্য সরবরাহ করতে পারে সেই সম্ভাবনা তৈরি করতে হবে।’
শস্যচুক্তি বহাল রাখার উদ্যোগটিকে সমর্থন জানিয়েছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল। তিনি আরও বলেন, ইউক্রেনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলা আমাদের জন্য অগ্রাধিকার। আমাদের নিজস্ব অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও আমরা ইউক্রেনে মানবিক সহায়তা পাঠিয়েছি।’
সংবাদ সম্মেলনে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীই ইউক্রেনে পাকিস্তানের অস্ত্র সরবরাহ নিয়ে ভারতের অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন। জারদারি বলেন, ‘যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে আমরা ইউক্রেনের সঙ্গে অস্ত্র সরবরাহের কোনও চুক্তিতে আবদ্ধ হইনি।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাকিস্তানের একজন সরকারি কর্মকর্তা নিক্কেই এশিয়াকে বলেন, ‘পশ্চিমা বিশ্ব-সমর্থিত ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা পাকিস্তানের সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আমাদের উভয় গোষ্ঠীর অর্থনৈতিক সমর্থন প্রয়োজন। আর এ কারণেই আমরা কাউকে সমর্থন জানাইনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘তবে এটা স্পষ্ট যে ইউক্রেন এবং মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমরা চায় ইসলামাবাদ রাশিয়ার আক্রমনের বিরোধিতা করুক।’ #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.