পাকিস্তানে মসজিদে বিস্ফোরণ: নিরাপত্তা দুর্বলতা নাকি অবহেলা?

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের আফগান সীমান্তবর্তী ব্যস্ততম শহর পেশাওয়ারে ভয়াবহ আত্মঘাতী বোমা হামলায় শতাধিক মানুষ নিহতে আঙুল উঠেছে দেশটির সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির দিকে। কঠোর নিরাপত্তা এড়িয়ে হামলাকারী কীভাবে এলাকাটিতে প্রবেশ করলো, বিষয়টি নিয়ে ভাবাচ্ছে নওয়াজ শরীফের সরকারকে।
গত (৩০ জানুয়ারি) সোমবার যোহরের নামাজের সময় আত্মঘাতী বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে পেশাওয়ারের একটি পুলিশ লাইন্সের মসজিদ। এতে ১০১ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই পুলিশ সদস্য। ইতোমধ্যে বিস্তর তদন্ত শুরু হয়েছে শীর্ষপর্যায়ে। নিরাপত্তা বলায়ে ঘেরা পুলিশ লাইন্স এলাকায় কী করে আত্মঘাতী হামলাকারী বোমা নিয়ে প্রবেশ করলো। এই বিষয়টিও সামনে আসছে, বোমারুকে প্রবেশ করতে ওই এলাকা থেকে কেউ সহায়তা করেছিল কিনা।

পাকিস্তানে মসজিদে বিস্ফোরণ: নিরাপত্তা দুর্বলতা নাকি অবহেলা?

মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে এমন গুরুত্বপূর্ণ একজনকে আটক করেছে পুলিশ, কিন্তু বিস্তারিত জানায়নি।
এক সংবাদ সম্মেলনে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের পুলিশের মহাপরিদর্শক মোয়াজ্জাম জাহ স্বীকার করে বলেন, ‘একাধিক নিরাপত্তা চৌকি থাকা সত্ত্বেও প্রাদেশিক রাজধানীতে একটি স্পষ্ট ‘নিরাপত্তা লঙ্ঘন’ হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়টিও মনে রাখতে হবে পুলিশ লাইন্সে প্রতিদিনই দেড় হাজার থেকে দুই হাজার লোক আসা যাওয়া করে।
পুলিশের মহাপরিদর্শক জাহ আরও বলেন, এদের মধ্যে পুলিশ কর্মকর্তা, সাধারণ অভিযোগকারী, কম্পাউন্ডের ভেতরে বসবাসকারী কর্মকর্তাদের পরিবার এবং আত্মীয়রা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। এছাড়া ৪ থেকে ৫ হাজার মানুষ কমপাউন্ডে বসবাস করেন।
প্রথমে পাকিস্তানের জঙ্গিগোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান টিটিপির কমান্ডার এ হামলার দায় স্বীকার করেন। পরবর্তীতে এক চিঠিতে বিষয়টি অস্বীকার করেন দলটির এক মুখপাত্র। উল্লেখ্য, তেহরিক-ই-তালেবান (টিটিপি) হিসেবে পরিচিত। পাকিস্তান তালেবানকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে গোষ্ঠীটি সক্রিয়। পাকিস্তানে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন হামলার সঙ্গে জড়িত রয়েছে।
পুলিশ লাইন্সের পুলিশ কর্মকর্তা আমানত আলী নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করে আল জাজিরাকে বলেন, ‘কঠোর নিরাপত্তা উপেক্ষা করে ভেতরে এভাবে প্রবেশ করা বেশ জটিল। তবে, কম্পাউন্ডে কিছু নির্মাণ কাজ চলছে, তাই বেসামরিক শ্রমিকরা এখানে প্রবেশ করতে পারছেন।’
ওই কমাপাউন্ডে থাকেন পুলিশের আরেক কনস্টেবল ইমরান খান। একই সুরে তিনিও বলেন, ‘কড়া নিরাপত্তার কারণে এখানে পরিবারের অন্য সদস্যদের আনা সম্ভব নয়। তারপরও আমাদের জানতে হবে নিরাপত্তা তল্লাশির মধ্যে দিয়েই কোনওভাবে হামলাকারী ভেতরে প্রবেশ করেছিল কিনা।’
এ ঘটনায় কথা বলেন খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষক আখতার আলী শাহ। আল জাজিরাকে দাবি করে বলেন, ‘আমি নিজেই কখনও অনুমতি ছাড়া ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি। আমি আমন্ত্রণ পেয়েই ভেতরে যাই। তার ডকুমেন্টেসও দেখাতে হয়েছে আমাকে। সাধারণ লোকের জন্য তো খুবই কঠিন।’ (সূত্র: আল জাজিরা)। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.