পাকিস্তানে বিনামূল্যে আটা নিতে গিয়ে নিহত-২, আহত-৫৬

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের একটি সরকারি বিতরণ কেন্দ্র থেকে বিনামূল্যে আটা সংগ্রহ করতে গিয়ে আরও দুইজন পদদলিত হয়ে নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে একজন বৃদ্ধ নারী এবং অন্যজন এক পুরুষ। এছাড়া পদদলিত হয়ে ৪৫ জন নারীসহ ৫৬ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার (২৯ মার্চ) পাকিস্তানি সংবাদ মাধ্যম দ্য ডনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) পাঞ্জাব প্রদেশের সাহিওয়াল, বাহাওয়ালপুর, মুজাফফরগড় ও ওকারা জেলায় বিনামূল্যে আটা বিতরণের কেন্দ্রগুলোতে পদদলিত হয়ে এক বৃদ্ধ নারী ও এক পুরুষের মৃত্যু হয়েছে। সরকার এই কর্মসূচি শুরু করার পর থেকে বিতরণে অব্যবস্থাপনা অব্যাহত রয়েছে।
কায়েদ-ই-আজম স্টেডিয়ামে স্থাপিত বিতরণ কেন্দ্রে বিনামূল্যে আটা সংগ্রহ করতে আসা এক বৃদ্ধ নারীর পদদলিত হয়ে মৃত্যু হয়। এছাড়া আরও ৪৫ জন নারী বিভিন্ন ভাবে আহত হয়েছেন। আটা সংগ্রহ করতে আসা লোকদের যাচাই করার জন্য ব্যবহৃত অ্যাপ্লিকেশনটিতে একটি প্রযুক্তিগত ত্রুটি দেখা দেয়।
এক পর্যায়ে অ্যাপটি কাজ করা বন্ধ করে দেয়। ফলে, বিনামূল্যে ময়দা বিতরণ পয়েন্টগুলোতে প্রচুর ভিড় জমে যায়। সিস্টেমটি আবার কাজ শুরু করবে এই আশায় এই ভিড় দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করে, অনেকে হতাশ হয়ে যায়।
অ্যাপটির লিঙ্কটি মঙ্গলবার ডাউন ছিল এবং তিন থেকে চার ঘণ্টা ধরে কাজ করছিল না বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, আটা নিতে স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন দেড় হাজারেরও বেশি নারী। পরে সেখানে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এদিকে, আটা বিতরণ কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য পুলিশকে দায়ী করেছেন অনেক নারী।
তাদের অভিযোগ, সেখানে প্রচুর ভিড় থাকলেও কেন্দ্রে কর্মরত সিভিল লাইনের পুলিশ কর্মীরা উপস্থিত লোকজনকে মারধর ও লাঠিচার্জ শুরু না করা পর্যন্ত পরিস্থিতি শান্ত ছিল। তবে মারধর ও লাঠিচার্জ শুরু হওয়ার পর বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় এবং মানুষ পদদলিত হয়।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, প্রশাসনের অ্যাপ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় লোকজন ভিড় ও দীর্ঘ লাইনে আটকা পড়েন। পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার পরিবর্তে তারা লাঠিচার্জ শুরু করে। পুলিশকেও নারীদের চড় মারতে এবং ধাক্কা দিতে দেখা যায়।
ফলস্বরূপ, জনতা আরও উত্তেজিত হয়ে ওঠে এবং পরিস্থিতি গরম হয়ে যায়। নিহত নারীর নাম নাসিম আখতার। তিনি সাহিওয়ালের কারবালা রোডের বাসিন্দা আমিরের স্ত্রী। রেসকিউ ১১২২ এর কর্মকর্তা আদনান শামাস ডনকে জানান, ছয়টি জরুরি গাড়ি ও কর্মীরা আহত পুরুষ ও নারীদের চিকিৎসা দিয়েছে।
আহত ২৫ জন নারীকে আরও চিকিৎসার জন্য সাহিওয়াল টিচিং হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে এবং বাকিদের ঘটনাস্থলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পাঞ্জাবের তত্ত্বাবধায়ক মুখ্যমন্ত্রী মহসিন নাকভি পদদলিত হয়ে নিহতের সংখ্যা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে, পাঞ্জাবের রহিম ইয়ার খানে বিনামূল্যে আটা নিতে গিয়ে ৭৩ বছর বয়সী এক ব্যক্তি পদদলিত হয়ে গুরুতর আহত হন। পরে আনোয়ার দীন নামে ওই ব্যক্তি মারা যান। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। নিতে স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন দেড় হাজারেরও বেশি নারী। পরে সেখানে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.