পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষে বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি, ক্ষতিপূরণ চাইছেন ভারতীয়রা

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ৪ দিনের তীব্র সামরিক সংঘর্ষের অবসান হওয়ার পর পারমাণবিক অস্ত্রধারী প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তান এখন যুদ্ধবিরতিতে আছে। ভারতশাসিত কাশ্মীর অঞ্চলের অনেকেই সীমান্তপারের গোলাগুলিতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ক্ষতিপূরণ দাবি করছেন।
দুই দেশ পরস্পরের সামরিক ঘাঁটিগুলিকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়, যার ফলে প্রায় ৭০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়। এই সময়ে শত শত গ্রামবাসী তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যান। পরে ফিরে এসে তারা দেখেন, অনেকের বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে বা ছাদ উড়ে গেছে।
লাইন অব কন্ট্রোল থেকে ৭ কিমি ভারতের জম্মু জেলার আখনুরে অবস্থিত কোট মইরা গ্রামের বাসিন্দা রোশান লাল। তিনি বলেন, ‘আমরা বাচ্চাদের নিয়ে কোথায় যাব? আমাদের থাকার জায়গা নেই, খাওয়ার কিছু নেই।’
৪৭ বছর বয়সী রোশন জানান, গোলাবর্ষণে তার বাড়িটি আর বসবাসযোগ্য নয়। তিনি বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারের কাছে বিচার চাই। আমাদের ক্ষতিপূরণ প্রয়োজন।’
পাশের পাহাড়িওয়ালা গ্রামের কৃষক করণ সিংহ জানান, তিনি তার ক্ষেতে সাতটি গরু কবর দিয়েছেন এবং তার পরিবার এখন অস্থায়ী আশ্রয়ে বাস করছে। তিনি বলেন, ‘সংঘর্ষ শুরু হলে আমি গ্রাম ছেড়ে গিয়েছিলাম। এখন আমাদের থাকার কোনো জায়গা নেই।’
কাশ্মীর উপত্যকার সীমান্তবর্তী গ্রাম সালামাবাদ-এ গোলাবর্ষণে আহত হন বদরুদ্দিন নায়েক ও তার ছয় বছর বয়সী ছেলে। তবে পাঁচ দিন পর তারা বাড়ি ফিরে এসেছেন।
তিনি বলেন, ‘বাড়ি ফিরে ভালো লাগছে। কিন্তু আমার ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমার দুই চাচার বাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। আমরা স্থায়ী শান্তি চাই, কারণ সীমান্তে আমরা সাধারণ মানুষই সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাই।’
হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারত ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তান— যারা উভয়েই কাশ্মীরের একটি অংশ শাসন করে এবং পুরো অঞ্চলটির মালিকানা দাবি করে— এ পর্যন্ত কাশ্মীর নিয়ে তিনটি যুদ্ধের মধ্যে দুইটি এবং বহু সীমান্ত সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ঊর্ধ্বতন স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা জানান, সরকারি দলগুলি এলাকায় গিয়ে ঘরবাড়ি, দোকান এবং অন্যান্য স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নিচ্ছে। তিনি বলেন, আজ আমাদের দলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়েছে। সরকার ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্ধারণ করবে।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী মোদি পাকিস্তানকে সতর্ক করে বলেন, নতুন করে ভারতের ওপর হামলা হলে নয়াদিল্লি সীমান্ত পেরিয়ে আবারও সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে আঘাত হানবে। পাকিস্তান অবশ্য ভারতের সন্ত্রাসবাদে মদদ দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
পাহাড়িওয়ালা গ্রামে, ফাটল ধরা দেয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে জগিন্দর লাল বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যিনি যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিলেন এবং যিনি দাবি করেন যে সংঘর্ষ থামাতে ওয়াশিংটন একটি ভূমিকা পালন করেছে— মোদির উচিত ট্রাম্পকে উপেক্ষা করা।
৬০ বছর বয়সী জগিন্দর বলেন, আমরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ প্রতিশোধ চাই। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.