পলিথিন চাইলেই বন্ধ করা যাবে না : এলজিআরডি মন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি: চাইলেই পলিথিনের ব্যবহার কমানো সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রতিটি পণ্যের জন্য আলাদাভাবে পলিথিন বা অন্য কোনও ব্যাগ দেওয়া হয় যার জন্য গৃহস্থালি বর্জ্য বেশি উৎপন্ন হচ্ছে। পলিথিন চাইলেই একদিনে বন্ধ করা যাবে না। আবার পাটের ব্যাগ মানুষের হাতে ধরিয়ে দেওয়াও যাবে না। প্লাস্টিকের ব্যবহার অনেক গুণ বেড়ে গেছে। এটাকেও হঠাৎ করে নিষিদ্ধ করা যাবে না। তাহলে বিকল্প কী! এটি নিয়ে কাজ করতে হবে। বর্জ্য ডিসপোসাল করার জন্য একটি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা তৈরি করতে হবে।
বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দেশে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে বলেও জানান তিনি।
আজ শনিবার (০৮ অক্টোবর) রাজধানীর বনানীতে হোটেল শেরাটনে এফবিসিসিআই আয়োজিত ‘টেকসই প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য নীতিমালা সক্রিকরণ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি একথা বলেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, মানুষের আয় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোগও বেড়েছে। যার ফলে আগের তুলনায় অধিক পরিমাণে ময়লা-আবর্জনা উৎপন্ন হচ্ছে। আর এসব বর্জ্য শুধু শহরে নয় বরং গ্রামগঞ্জেও উৎপন্ন হচ্ছে। আগের তুলনায় অধিক মাত্রায় বর্জ্য উৎপন্ন হওয়ায় সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মধ্যে নিয়ে আসা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাজুল ইসলাম বলেন, দেশে উৎপন্ন সব ধরনের বর্জ্য পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঢাকাসহ কয়েকটি সিটি করপোরেশনে কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আশা করছি শিগগিরই বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। আর এই প্রক্রিয়া শুরু হলে দেশে বর্জ্য সমস্যা অনেকটাই সমাধান করা সম্ভব হবে।
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। এর জন্য বিভিন্ন মডেল আছে। উন্নত দেশের মডেল অনুসরণ করে আমাদের দেশেও অনুরূপভাবে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পরিবেশ রক্ষা এবং মানুষের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে আমাদের দেশের জন্য কার্যকর সেই মডেল বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান-ড্যাপ গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। ঢাকাকে বাসযোগ্য এবং দৃষ্টিনন্দন করার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এই ড্যাপে। খেলার মাঠ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাজার, বিনোদন কেন্দ্র, গ্রিনাইজেশন ও ওয়াটার বডি এবং পর্যাপ্ত রাস্তা না রেখে শুধু উঁচু উঁচু বিল্ডিং করা কি সমীচিন হবে? ঢাকায় শুধু মানুষের বাসস্থান নয় বরং এর সঙ্গে সব নাগরিক সেবাও নিশ্চিত করতে হবে। যা এই ড্যাপ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সম্ভব।
তিনি বলেন, ঢাকায় সব মানুষকে সব সুবিধা দিয়ে রাখা যাবে না। এজন্য নগরের সব সুযোগ-সুবিধা সুবিধা গ্রামে পৌঁছে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ দর্শন বাস্তবায়ন করছেন। ইতোমধ্যে অনেক সেবা প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে সারাদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। এসব সুবিধা গ্রামে পৌঁছে গেলে ঢাকামুখী মানুষের চাপ কমবে।
অনুষ্ঠানে বন ও পরিবেশ মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট জসিম উদ্দিনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ইউনিলিভির বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও জাভেদ আখতার, বাংলাদেশ প্লাস্টিক গুডস এন্ড ম্যানুফেকসার্স এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট শামীম আহমেদ এবং নগর পরিকল্পনাবিদ ও স্থপতিরা অন্যান্যের বক্তব্য রাখেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি রুহুল আমীন খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.