পলাশবাড়ীতে আপত্তিকর অবস্থায়’ আটক পুলিশ সদস্য ছাড়া পেলেন ২৪ ঘন্টাপর

গাইবান্ধা প্রতিনিধি: পরকিয়া করতে এসে গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে বেরসিক জনতার হাতে অাপত্তিকর অবস্থায় আটক পুলিশ সদস্য সাদ্দাম চৌধুরীকে অবশেষে সমঝোতার ভিত্তিতে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।

গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উভয়পক্ষের সমঝোতার পর সাদ্দাম চৌধুরীকে পলাশবাড়ী থানা পুলিশ হেফাজত থেকে ছেড়ে দেয়া হয়।

এরআগে, রবিবার (১৮ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে পলাশবাড়ী উপজেলা বেঙ্গুলিয়া গ্রামের একটি বাঁশঝাড় থেকে সাদ্দাম চৌধুরী ও প্রেমিকাকে অাপত্তিকর অবস্থায় আটক করে স্থানীয় এলাকাবাসী।

পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিফজুর আলম মুন্সি বিষয়টি নিশ্চত করে বলেন, ‘স্থানীয়দের হাতে আটক সাদ্দাম ও তার পরকীয়া প্রেমিকাকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়। উভয়ে আলোচনা করে বিষয়টি সমঝোতা করেছেন। তাইউভয়ের উপস্থিতে মুছলেকা নিয়ে সাদ্দামকে ছেড়ে দেয়া হয়। এসময় মেয়েকেও তার বাবার কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে সমঝোতায় তাদের মধ্যে কোন টাকা পয়সা লেনদেন হয়েছে কিনা তা জানা নেই’।

 

 

আটক সাদ্দাম চৌধুরী (২৮) রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সদস্য। তিনি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাজলা গ্রামের আনোয়ার হোসেন চৌধুরী লেবুর ছেলে। সাদ্দাম চৌধুরীর বাড়িতে স্ত্রী রয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের তথ্যে জানা যায়, বেঙ্গুলিয়া গ্রামের শহিদুল ইসলামের বিবাহিত কলেজ পড়ুয়া মেয়ের উপর দৃষ্টি পড়ে পুলিশ সদস্য সাদ্দাম চৌধুরীর। বিভিন্ন সময় সাদ্দাম মেয়েকে মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। বিষয়টি জানাজানি হলে সাদ্দামকে কয়েকবার নিষেধ করে পরিবারের লোকজন। কিন্তু নিষেধে কোন কর্ণপাত করেনি সাদ্দাম। গত ১৩ নভেম্বর বিয়ের প্রলোভনে মেয়েকে আত্মীয় বাড়িতে চারদিন আটক রাখে সাদ্দাম। সর্বশেষ সোমবার রাতে সাদ্দাম ফুসলিয়ে মেয়েটিকে বাড়ির পাশে বাঁশঝাড়ে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করতে থাকে। বিষয়টি টের পেয়ে আশপাশের লোকজন সাদ্দামকে আটক করে।

এ বিষয়ে মেয়ের বাবা শহিদুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন ‘ ঘটনার পর সাদ্দামের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে চেয়েছিলেন। এজন্য তিনি লিখিত অভিযোগ পুলিশকে দেন। কিন্তু বিষয়টি আপোষ করতে সাদ্দামের পক্ষের লোকজন চাপ দেয়। এছাড়া পুলিশও মামলা না করে বিষয়টি আপোষের কথা জানান। এতে বাধ্য হয়ে থানাতেই বসে সমঝোতার সম্মত্তি দেন তিনি। তবে সমঝোতায় সাদ্দাম মেয়েকে বিরক্ত করবেনা শর্ত থাকলেও কোন টাকা লেনদেন হয়নি। সমঝোতার নেপথ্যে কেউ টাকা নিয়েছেন কিনা জানা নাই। এ ঘটনায় মানসম্মান গেলেও দৃষ্টান্ত কোন বিচার পেলেন না তিনি। এখন মেয়ের সংসার হবে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে’।

অভিযোগ অস্বীকার করে মুঠোফোনে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য সাদ্দামের বাবা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি পরিকল্পিত। সাদ্দামকে কৌশলে বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায় মেয়ে। সাদ্দামকে ফাঁসাতে আটক করে তার কাছে দেড় লাখ টাকা দাবি করে মেয়ের বাবা। মুলত টাকা আদায়ের জন্যই তাকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়া হয়’।

সাদ্দামের ফুপা আবদুর রাজ্জাক ঘটনাটি সম্পন্ন মিথ্যা দাবি করে বলেন, ‘পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন ঘটনার সত্যতা জানতে পেরেছেন। এজন্য উভয় পক্ষের লোকজন নিয়ে বসে আলোচনার মাধ্যমে ঘটনার সমঝোতা সম্ভব হয়েছে’।#

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর গাইবান্ধা প্রতিনিধি মোঃ শাহরিয়ার কবির আকন্দ।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.