পরকীয়া সম্পর্ক ফাঁস হওয়ার শঙ্কায় মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা

বরিশাল ব্যুরো: বরিশাল সদর উপজেলায় স্কুলছাত্রী তন্নি আক্তার (১৩) হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়েছে। পরকীয়া সম্পর্ক ফাঁস হওয়ার আশঙ্কায় মা লিপি আক্তার (৩০) এবং পরকীয়া প্রেমিক কবির খান (৫০) মিলে শ্বাসরোধে হত্যা করেন তন্নিকে। পরে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালান লিপি আক্তার।
এ ঘটনায় লিপি আক্তারকে গ্রেফতার করা হলেও কবির থান পলাতক রয়েছেন।
আজ শনিবার (০৪ জুন) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) মোহাম্মদ জাকির হোসেন মজুমদার এসব তথ্য জানান।
নিহত তন্নি বরিশাল সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের ছোট রাজাপুর গ্রামের মো. সোহরাব হাওলাদার ও লিপি দম্পতির মেয়ে। সে পানবাড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। অন্যদিকে পলাতক কবির খান একই ইউনিয়নের রামকাঠি গ্রামের নুরু খানের ছেলে।
স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মোহাম্মদ জাকির হোসেন মজুমদার বলেন, ‘লিপি আক্তারের সঙ্গে প্রায় একবছর ধরে কবির খানের পরকীয়া সম্পর্ক চলে আসছে। বিভিন্ন সময় স্বামী সোহরাব হাওলাদার ও মেয়ে তন্নির অনুপস্থিতিতে তাদের বাসায় আসতেন কবির খান। ২৭ মে স্বামী ও কন্যা সন্তান না থাকার সুযোগে নিজ বাসায় কবির খানের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়ান লিপি আক্তার। হঠাৎ বাসায় চলে আসে তন্নি। এ সময় মা লিপি আক্তার ও কবির খানকে বিবস্ত্র অবস্থায় দেখতে পায় সে। এ ঘটনা তার বাবাকে বলে দেওয়ার কথা জানায় তন্নি।
পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, পরকীয়া সম্পর্ক ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় তন্নিকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে লিপি আক্তার ও পরকীয়া প্রেমিক কবির খান। পরে তন্নির গলায় দড়ি দিয়ে মৃতদেহ বাসায় ঝুলিয়ে রাখা হয়। এরপর কবির খান সেখান থেকে পালিয়ে যান। লিপি আক্তার এরপর চিৎকার করে কাঁদতে থাকেন এবং প্রতিবেশীদের ডেকে বলেন তন্নি গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহমান মুকুল বিটিসি নিউজকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তন্নির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় ২৭ মে কাউনিয়া থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। তবে প্রথম দিকে তন্নির মৃত্যু আত্মহত্যা মনে হলেও লিপি আক্তার ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে অসংলগ্ন কথা বলেছিলেন। এতে লিপি আক্তারের ওপর সন্দেহ তৈরি হয় পুলিশের। তদন্তে বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে কথা বলে সন্দেহ আরও বাড়ে। লিপি আক্তারের গতিবিধির ওপর নজর রাখা হয়। যথাযথ প্রমাণ হাতে পাওয়ার পর আজ শনিবার সকালে লিপি আক্তারকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে লিপি আক্তার তার মেয়ে তন্নিকে হত্যার কথা স্বীকার করেন এবং পরকীয়া প্রেমিক কবিরের বিষয় বিস্তারিত জানান।
ওসি আরও বলেন, তন্নি হত্যার ঘটনায় তার বাবা সোহরাব হাওলাদার বাদী হয়ে কাউনিয়া থানায় মামলা করেছেন। মামলায় লিপি আক্তার ও কবির খানকে আসামি করা হয়েছে। ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে লিপি আক্তারকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি পলাতক আসামি কবির খানকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বরিশাল ব্যুরো প্রধান আল মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.