পদ্মা সেতুতে রেলসংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়নে চীনের সঙ্গে ঋণ চুক্তি

বিটিসি নিউজ ডেস্ক:আজ শুক্রবার সকালে বেইজিংয়ে বাংলাদেশের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. জাহিদুল হক ও চায়না এক্সিম ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট সুন পিং এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা রেলসংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়নে চীনের এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে ২৭৬ কোটি ডলারের ঋণচুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ।
ঢাকা থেকে পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে ভাঙ্গা, নড়াইল হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেল সংযোগ প্রকল্পে অর্থায়নে ২০১৬ সালে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ঢাকা সফরের সময় যে ২৭টি প্রকল্পে অর্থায়নে সমঝোতা চুক্তি হয়, এটি তার একটি।
রেলসংযোগ প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিআরইসি কর্মকর্তা এবং চীনে বাংলাদেশ হাই কমিশনের ইকনোমিক কাউন্সিলর মো. জাহাঙ্গীর এসময় উপস্থিত ছিলেন।
চুক্তি স্বাক্ষর উপলক্ষে জাহিদুল হকের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল এখন চীনে অবস্থান করছে।
তবে প্রকল্পে চীনা অর্থায়নের পরিমাণ যে কমে যাচ্ছে, তা মার্চের মাঝামাঝি সময়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন।
তিনি জানান, এ প্রকল্পের জন্য চীন তার প্রতিশ্রুত অর্থায়নের পরিমাণের চেয়ে ১৫ শতাংশ অর্থ কম দেবে। তবে শেষ পর্যন্ত চীনের এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে ২৭৬ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি হয়েছে। এই সংখ্যা পূর্বের প্রতিশ্রুত অর্থের চেয়ে ১২ দশমিক ০৬ শতাংশ কম।
প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ১০ হাজার কোটি টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে যোগান দেওয়ার কথা। বাকিটা ২৫ হাজার কোটি টাকা (৩১৩ কোটি ৮৭ লাখ ডলার) চীন সরকারের ঋণ দেওয়ার কথা ছিল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সড়ক সেতু চালুর দিন থেকেই রেল চলাচলও উদ্বোধনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। ওই ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে রেল মন্ত্রণালয় ২০১৬ সালের ২৩ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি চিঠি পাঠায়।তাতে বলা হয়, ২০১৯ সালে পদ্মায় রেল সেতু উদ্বোধন করতে হলে ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে কাজ শুরু করতে হবে।
কিন্তু সড়ক সেতুর কাজ এগিয়ে পদ্মা সেতুতে এখন তৃতীয় স্প্যান বসলেও পিছিয়ে পড়েছে রেল প্রকল্পের কাজ। সর্বশেষ সংশোধনী অনুযায়ী পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ দুই বছর বাড়িয়ে ২০২০ সালের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
তাতে আরও বলা হয়েছিল, মে-জুন মাস থেকে বাংলাদেশে বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ায় জানুয়ারি মাস থেকে কাজ শুরু করতে হবে। না হলে পদ্মা সড়ক ও রেল সেতু এক সাথে উদ্বোধন করা সম্ভবপর হবে না। ২০১৮ সালের মধ্যে পদ্মা সেতুর মূল কাজ শেষ করার লক্ষ্য ঠিক করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। সরকারের এই মেয়াদে অর্থাৎ এই বছরের মধ্যে পদ্মা সেতুতে গাড়ি পারাপারের আশা প্রকাশ করছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
এরই মধ্যে রেলের চুক্তি না হওয়ায় এরপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে গত ২৭ ডিসেম্বর ইআরডির কাছে চিঠি পাঠিয়ে চীনা কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়ে দ্রুত চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.