পদ্মা নদীর ধার পরিদর্শনের পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও রাসিক মেয়র

রাসিক প্রতিবেদকপদ্মা নদী ড্রেজিং ও শহর রক্ষা বাঁধ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে রাজশাহীর পদ্মা নদীর ধার পরিদর্শন করেছেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। আজ মঙ্গলবার সকালে বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন তারা।

আজ সকালে প্রথমে টি-বাঁধ পরিদর্শন করেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। এরপর স্পিডবোটে করে টি-বাঁধ থেকে বুলনপুর, সোনাইকান্দি এলাকার নদীর ধার পরিদর্শন করেন তারা। এরপর বাঁধ সম্প্রসারণ ও শক্তিশালী করণের লক্ষে তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকা পরিদর্শন করেন।

উল্লেখ গতকাল নদী ড্রেজিং, শহর রক্ষা বাঁধ সম্প্রসারণ ও খাল পুনঃখনন নিয়ে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করে প্রতিমন্ত্রীকে দুইটি ডিও লেটার দেন রাসিক মেয়র লিটন।

ডিও লেটারে মেয়র উল্লেখ করেন, রাজশাহী জেলাসহ পাশর্^বর্তী কয়েকটি জেলার অর্থনৈতিক কর্মকান্ড আবর্তিত হয় পদ্মা নদীকে কেন্দ্র করে। নদীর নাব্যতা সংকটের কারণে এ অঞ্চলের শিল্পের প্রসার ঘটছেনা, যার ফলে দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ব্যহত হচ্ছে। নদী খনন করে নাব্যতা বৃদ্ধিসহ একটি নদী বন্দর প্রতিষ্ঠা করা একান্ত জরুরী হয়ে পড়েছে দেশের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে। এখানে নদী বন্দর প্রতিষ্ঠা হলে উভয় দেশের মধ্যে স্বল্প ব্যয়ে নৌ-পথে বিভিন্ন মালামাল পরিবহন সম্ভব হবে। শুধু তাই নয়, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে, ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং বেকার সমস্যারও সমাধান হবে।

নদীবন্দর প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার ধুলিয়ান হতে বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী হয়ে পাবনা জেলার রূপপুর পর্যন্ত পদ্মা নদীর এই চ্যানেলটি খনন করা আবশ্যক। এখানে উল্লেখ্য যে, বিগত বছরসমূহে প্রবাহ কম থাকায় ও বন্যায় পলিপড়ে উক্ত চ্যানেলটি বর্তমানে ভরাট হয়ে গিয়ে নৌ-চলাচলের প্রায় অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। চ্যানেলটি খনন করে রাজশাহীতে নদীবন্দর প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে উভয় দেশের নৌ-যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে, এ অঞ্চলের শিল্পের প্রসার ঘটবে এবং জনসাধারণের অর্থ-সামাজিক অবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে।

এছাড়াও উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প নামে যে প্রকল্প প্রস্তাবনা আছে সে প্রকল্পের জন্য পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত হবে।

পদ্মা নদীর তালাইমারী হতে শ্রীরামপুর টি-বাঁধ পর্যন্ত নদীর মাঝে জেগে উঠা চরগুলো খনন করে খননকৃত মাটি ও বালু শহররক্ষা বাঁধের পাড়ে ফেলে ভরাট করে নদী শাসনের মাধ্যমে ভেঙ্গে যাওয়া প্রায় ১০ বর্গকিলোমিটার জমি পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে এবং উদ্ধারকৃত জমিতে স্যাটেলাইট টাউন গড়ে তোলা সম্ভব হবে। এর ফলে কৃষি জমির উপর চাপ কমে যাবে।

বৃহত্তর রাজশাহীতে শিল্পোন্নত অঞ্চল হিসেবে রূপদানের জন্য রাজশাহীতে একটি নদীবন্দর প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে উক্ত চ্যানেলটি খননের জন্য পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় হতে একটি প্রকল্প নেয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সহযোগিতা কামনা করেন মেয়র।

ডিওতে আরো উল্লেখ করেন, রাজশাহী মহানগরের টেকসই ও পরিবেশ বান্ধব উন্নয়নের লক্ষ্যে রাজশাহী শহররক্ষা বাঁধ পঞ্চবটি শ্মশান হতে তালাইমারী পর্যন্ত বর্ধিতকরণসহ নি¤েœাক্ত খাল, নদীসমূহ অবৈধ দখলমুক্ত করে পুনঃখনন করা একান্ত জরুরী।

চালনা-চীনারকুপ-দামকুড়াব্রিজ-গুলাই-জোয়াখালি-জামদহ-দর্শনপাড়া-বাগধানি, আলিগঞ্জ-সিটিহাট-দুয়ারী, পবা-গাংপাড়াখাল-বায়া-মহানন্দাখাল –বারনই নদী, শ্যামপুর-বৈরাগীখাল-সায়েন্স ল্যাবরেটরী-মৌলভীবুধপাড়া-খড়খড়ি দয়ানদী, শ্যামপুর-নারদখাল-কাটাখালি খালসমূহের উভয় পাশে অবৈধ দখলমুক্ত করে পুনঃখনন করা হলে বারনই নদীসহ আশে পাশের খাল বিল ও প্রাকৃতিক জলাশয়ের পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে, এত দূষণ কমবে, পানি নিস্কাশন সহজ হবে, শুষ্ক মৌসুমে কৃষি কাজে সেচের জন্য পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যাবে, মৎস্যচাষ বৃদ্ধি পাবে এবং মৎস্য প্রজননসহ জীব-বৈচিত্রের উন্নয়ন সাধিত হবে।

এসব ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন মেয়র। উল্লিখিত বিষয়গুলোতে সহযোগিতা প্রদানের আশ^াস দেন প্রতিমন্ত্রী।

এ সময় রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, রাসিকের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার খায়রুল বাশার, রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলীসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। # (প্রেস বিজ্ঞপ্তি ) #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.