পথ হারিয়ে পাহাড়ে রাত কাটালো ৭ শিশু, সকালে উদ্ধার করলো পুলিশ

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: পাহাড়ে অ্যাডভেঞ্চারে গিয়েছিল ৭ শিশু। একপর্যায়ে সন্ধ্যা হলে পথ হারিয়ে ফেলে তারা। বিকেলে যখন পাহাড়ে উঠেছিল, তখন খেয়াল হয়নি সন্ধ্যার আগেই ফিরতে হবে। অন্ধকার নামার পর ভয় পেয়ে যায় তারা। গহিন পাহাড়ের কোন পথে যাবে, তাও নিশ্চিত হতে পারে না। শেষে তারার আলো দেখে একটা বড় বটগাছের নিচে সারা রাত কাটায়, পাশাপাশি বসে অপেক্ষায় থাকে সকালের। ভোরের আলো ফুটতেই আবার একটা পাহাড়ি পথ ধরে চলতে থাকে। তখনই দেখা মিলে একদল পুলিশের সঙ্গে। তাদের সন্ধানেই পুলিশ সদস্যরা এসেছিল পাহাড়ে।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ভোরে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে গতকাল শুক্রবার বিকেলে পাহাড়ে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া সাত শিশুকে উদ্ধার করে পুলিশ।
উদ্ধার হওয়া শিশুদের বিবরণে উঠে আসে পাহাড়ে গিয়ে তাদের পথ হারানো ও উদ্ধার হওয়ার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে গতকাল রাতে শিশুদের অভিভাবকেরা সন্তানদের সন্ধান চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর সারা রাত উৎকণ্ঠায় থানায় রাত কাটিয়ে দেন তারা। পুলিশের তিনটি দল রাতেই তাদের খোঁজে পাহাড়ে যায়। পরে ভোর পাঁচটার দিকে নিখোঁজ হওয়ার ১২ ঘণ্টা পর জঙ্গল জলদির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পাহাড়ি এলাকা থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার হওয়া এক শিশু বলে, ‘সন্ধ্যা নেমে এলে আমরা বুঝতে পারি পথ হারিয়েছি। তাই রাতে আর পাহাড়ি পথে হাঁটিনি। একটা বটগাছের নিচে ভোরের আলো ফোটার অপেক্ষা করেছি। ভোর হলে হাঁটা শুরু করেই পুলিশের দেখা পাই। তারা আমাদের উদ্ধার করে।’
পুলিশ জানায়, গতকাল বিকেল পাঁচটার দিকে পৌরসভার বাহার উল্লাহ পাড়ার সৈয়দ শাহ রহ. মাজারের পূর্ব পাশের এলাকা থেকে তারা পাহাড়ে ঘুরতে গিয়ে পথ হারিয়ে ফেলে। সাত শিশুর সবাই একই বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। বাড়িও একই এলাকায়। খেলতে গিয়ে হঠাৎ খেয়ালের বশে এলাকার পাশের পাহাড়ে অ্যাডভেঞ্চার করতে যায় তারা। সিসিটিভির ফুটেজে অটোরিকশায় তাদের ছবি দেখে পুলিশ নিশ্চিত হয় পাহাড়ের দিকেই গেছে তারা। রাতে অভিভাবকেরা থানায় এলে পুলিশ শিশুদের খোঁজ নিতে শুরু করে। উপজেলা প্রশাসনের ফেসবুক পেজেও তাদের খোঁজ ছেয়ে পোস্ট দেওয়া হয়।
বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘পাহাড়ে পথ হারিয়ে ফেলা শিশুদের উদ্ধারে আমরা তিনটি গ্রুপে ভাগ হয়ে রাতভর অভিযান চালাই। পরে ভোর ৫টায় জঙ্গল জলদি ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পাহাড়ি এলাকা থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পর শিশুদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তারা ট্রমায় ভুগছে। হাসপাতাল থেকে স্বজনেরা তাদের বাড়িতে নিয়ে গেছেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর চট্টগ্রাম প্রতিনিধি মো. মোতাহার আলী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.