পথে কৃষিপণ্যবাহী ট্রাকের চাঁদা দেওয়া নিয়ে স্টাডি করবে সরকার : কৃষিমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি: দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ঢাকাগামী কৃষিপণ্যবাহী ট্রাকের চাঁদা দেওয়া নিয়ে সরকার একটি স্টাডি করবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক।
আজ বুধবার (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় অধিবেশন শেষে কৃষিমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত ও ভোক্তাকে সঠিক দামে কৃষিপণ্য দিতে এই উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
এই স্টাডির মধ্যমে কৃষিপণ্য পরিবহনের ট্রাকগুলোকে পথে কত টাকা চাঁদা দিতে হয়, তা বের করা হবে। পরে এই চাঁদাবাজি বন্ধে সরকার পদক্ষেপ নেবে বলেও জানান কৃষিমন্ত্রী।
কৃষি মন্ত্রণালয় ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে জেলা প্রশাসকদের এ কার্য অধিবেশন হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এতে সভাপতিত্ব করেন।
অধিবেশনের বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘শুরুতে আমরা যেটা বলেছি, বাংলাদেশ খাদ্য ঘাটতির দেশ ছিল, যদিও আমাদের জমি ও জলবায়ু উৎপাদনের জন্য খুবই উপযোগী। দুঃখজনকভাবে আমরা আধুনিক কৃষিতে যেতে পারিনি। বিজ্ঞানভিত্তিক কৃষিতে যেতে পারিনি বলে আমাদের খাদ্য ঘাটতি ছিল। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে অনেকগুলো কর্মসূচি নিয়েছে, কৃষককে বিভিন্ন কৃষি উৎপাদনে প্রণোদনা দেয়ার জন্য। এতে উৎপাদন বেড়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এখন বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জ হলো- কৃষিপণ্য বিক্রি করে কীভাবে চাষিরা লাভ করতে পারে, আয় বাড়াতে পারে, জীবনযাত্রার মান বাড়াতে পারে। সব স্টাডিতে এসেছে, কৃষির উন্নয়ন অর্থনীতির অন্যান্য ক্ষেত্রের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করে। সেজন্য কৃষিপণ্যের বাজার নিশ্চিত করতে হবে।’
‘সে বিষয়ে আজকে আমরা আলোচনা করেছি। আন্তর্জাতিক বাজারে যেতে হলে আন্তর্জাতিক বাজারের শর্তগুলোর পূরণ করতে হবে। পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদন করতে হবে। স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এমন কোন খাবার দেওয়া যাবে না। গুড এক্সিকালচার প্র্যাকটিস (জিএপি) নিয়ে আমরা এখন কাজ করছি। ডিসিরা বলেছেন তাদের কোন কোন জেলায় এটি শুরু হয়েছে। এটিকে আর বেশি ছড়ানোর জন্য বলেছেন ডিসিরা। আমরাও বলেছি বিভিন্ন উপজেলায় আমরা এটা শুরু করবো।’
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘এজন্য জমি চাষ থেকে শুরু করে ফসল কাটা এবং বাজারে নেওয়া পর্যন্ত সবকিছু আমরা আধুনিক করবো। যাতে আমরা আন্তর্জাতিক বাজারে যেতে পারি। সাতক্ষীরায় একটি ফসল বিক্রি করে চাষী ১৫ টাকা পাচ্ছে, ঢাকায় এসে সেটা কেন ৪০/৪৫ টাকা হবে। এটা একটা যে মধ্যস্বত্বভোগী, ফড়িয়া। সারা পৃথিবীতে মধ্যস্বত্বভোগী আছে।’
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘এছাড়া আরেকটা কিছু আছে, যেটা অপ্রত্যাশিত। সেখানে বিভিন্ন জায়গায় ট্রাক, বিভিন্ন জায়গায় তাদের অতিরিক্ত খরচ করতে হয়। এটা কীভাবে কমানো যায়, এখানে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছি এবং আমরা বলেছি, এটা (চাঁদা) কতটুকু? প্রত্যক ডিসিই বলেছেন, তারা দায়িত্ব নেবেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিবও বলেছেন, তারা একটা স্টাডি আমাদের সাথে করবেন। ঈশ্বরদী কিংবা দিনাজপুর থেকে একটা ট্রাকের ঢাকায় আসতে খরচ কত? কোথাও যদি তারা চাঁদাবাজির শিকার হয়ে থাকে, কত টাকা কোথায় দিল, সেটা আমরা বের করি।’
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বের করার পর আমরা জাতীয় পর্যায়ে চেষ্টা করবো একটা ব্যবস্থা নিতে। যাতে এটা বন্ধ করা যায়। এই বিষয়টি আমি তুলে ধরেছি এবং ডিসিদের সহযোগিতা চেয়েছি।’
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি মোঃ লোকমান হোসেন পলা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.