পথহারা সিটিকে ধরাশায়ী করল ব্রাইটন

বিটিসি স্পোর্টস ডেস্ক: সাত দিনে তিন ম্যাচ এবং তিনটিতেই হার, ভীষণ বিব্রতকর যাত্রার ইতি টানতে শুরুটা বেশ ভালোই হয় ম্যানচেস্টার সিটির। কিন্তু বিরতির পর সাফল্যের পথটা ফের ভুলে গেল তারা। দ্বিতীয়ার্ধের প্রায় পুরোটা সময় আধিপত্য করে স্মরণীয় এক জয় তুলে নিল ব্রাইটন অ্যান্ড হোভ অ্যালবিয়ন।
প্রতিপক্ষের মাঠে শনিবার প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে ২-১ গোলে হেরেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। আর্লিং হলান্ডের গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে দুই গোল হজম করে তারা।
দীর্ঘ ও সাফল্যে ভরা কোচিং ক্যারিয়ারে যে তিক্ত অভিজ্ঞতা কখনও হয়নি, এবার তাই হলো সিটি কোচ পেপ গুয়ার্দিওলার; টানা চার ম্যাচে পরাজয়। সিটির কোচ হিসেবে আগে একবারই টানা তিন হারের স্বাদ পেয়েছিলেন তিনি; এর আগে ২০১৮ সালে টানা তিন ম্যাচ হেরেছিল দলটি।
আর ম্যানচেস্টার সিটি ১৮ বছরের মধ্যে এই প্রথম সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা চারটি ম্যাচ হারল। এর আগে সবশেষ তাদের এমন অভিজ্ঞতা হয়েছিল স্টুয়ার্ট পিয়ার্সের কোচিংয়ে।
মৌসুমের শুরু থেকে সিটির টানা অপরাজেয় পথচলায় ছন্দপতন হয় গত ৩০ অক্টোবর, টটেনহ্যাম হটস্পারের বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরে লিগ কাপের চতুর্থ রাউন্ড থেকে বিদায় নেয় তারা। পরের ছয় দিনের মধ্যে প্রিমিয়ার লিগে বোর্নমাউথের মাঠে ২-১ ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে স্পোর্তিং লিসবনের মাঠে ৪-১ গোলে হেরে যায় গুয়ার্দিওলার দল।
বিপর্যস্ত ওই সপ্তাহ শেষে, ঘুরে দাঁড়ানোর অভিযানে শুরুতে গুছিয়ে উঠতে একটু সময় লাগে সিটির। বল দখলে অবশ্য প্রথম থেকেই আধিপত্য করে তারা, কিন্তু আক্রমণে তেমন ভয়ঙ্কর হতে পারছিল না।
দুটি ব্যর্থ প্রচেষ্টার পর ২৩তম মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোল পায় সিটি। মাতেও কোভাচিচের দুই ডিফেন্ডারের মধ্য দিয়ে বাড়ানো থ্রু পাস ধরে শট নেন হলান্ড, গোলরক্ষক কোনোমতে বলের গতি কমালেও আটকাতে পারেননি। বল লক্ষ্যের দিকে ছুটছিল, ছুটে আসেন এক ডিফেন্ডারও; দারুণ ক্ষীপ্রতায় এগিয়ে দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় গোলটি করেন নরওয়ের তারকা।
প্রিমিয়ার লিগে ব্রাইটনের বিপক্ষে এই নিয়ে চারবারের দেখায় চারটি গোল করলেন হলান্ড। চলতি আসরে তার মোট গোল হলো ১২টি।
সিটির জার্সিতে শুরু থেকে গোলমেশিন হয়ে ওঠা হলান্ড এই নিয়ে প্রিমিয়ার লিগে মোট ৭৫টি গোল করলেন হলান্ড।
তিন মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ হতে পারতো। তবে এবার ফিল ফোডেনের পাস ধরে হলান্ডের কোনাকুনি শট কর্নারের বিনিময়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক।
বিরতির আগের কয়েক মিনিট থেকে পাল্টা চাপ দেওয়ার চেষ্টা করে ব্রাইটন। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে তার তীব্রতা বাড়ে। ৫২তম মিনিটে সমতা টানার সেরা সুযোগ পায় দলটি; তবে জ্যাক হিনশেনউডের জোরাল হেড ঝাঁপিয়ে রুখে দেন এদেরসন।
ধীরে ধীরে নিজেদের পুরোই যেন হারিয়ে ফেলে সিটি। ক্রমেই আরও আক্রমণাত্মক হতে থাকে ব্রাইটন।
৬৭তম মিনিটে ছয় গজ বক্সের মুখে বল পেয়েও শট নিতে পারেননি স্বাগতিক ফরোয়ার্ড ড্যানি ওয়েলবেক। পরের মিনিটে প্রথমে মিতোমা এবং দুই মিনিট আগেই বদলি নামা পেদ্রোর শট আটকে দেন সিটি গোলরক্ষক এদেরসন।
অনেক সুযোগ হাতছাড়া করার পর ৭৮তম মিনিটে আর ভুল করেনি ব্রাইটন। বক্সে সতীর্থের পাস পেয়ে শট নিতে দেরি করেন ওয়েলবেক, তাতে বল ক্লিয়ার করার সুযোগ পেয়েও পারেনি সিটির খেলোয়াড়রা। ছুটে গিয়ে জটলার মধ্যে থেকে নিচু শটে স্কোরলাইন ১-১ করেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড পেদ্রো।
পাঁচ মিনিট পর আরেক বদলি খেলোয়াড়ের গোলে এগিয়ে যায় ব্রাইটন। সতীর্থের পাস বক্সে ধরে, দ্বিতীয় ছোঁয়ায় বাঁ পায়ের শটে আগুয়ান গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন ডেনিশ মিডফিল্ডার ম্যাট ও’রাইলি।
নির্ধারিত সময়ের শেষ ২৭ মিনিটে গোলের জন্য একটি শটও নিতে পারেনি সিটি। যোগ করা সময়ে মরিয়া হয়ে দুটি শট নিলেও জালের দেখা পায় তারা।
এই হারের পর ১১ ম্যাচে সাত জয় ও দুই ড্রয়ে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে তারা।
১৯ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে উঠে এসেছে ব্রাইটন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.