নয়াপল্টনে বিজয় শোভাযাত্রা বিএনপির, নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান

ঢাকা প্রতিনিধি: মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনে নিজেদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিজয় শোভাযাত্রা করেছে বিএনপি। আজ শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেলে ৩টা ৩৫ মিনিটে শুরু হয়ে পৌনে ৫টায় শোভাযাত্রা শেষ হয়। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে শোভাযাত্রাটি কাকরাইল মোড়, শান্তিনগর হয়ে মালিবাগ মোড় ঘুরে ফকিরাপুল মোড়ে এসে শেষ হয়। এতে বিএনপির হাজারো নেতাকর্মী অংশ নেয়।
আজ বেলা আড়াইটায় শোভাযাত্রা শুরুর কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন বিএনপি নেতা-কর্মীরা। বেলা ১টার আগেই নয়াপল্টন ছাড়িয়ে নেতা-কর্মীদের ভিড় আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।
ছোট-বড় বর্ণিল সব ব্যানার, ফেস্টুন ও প্লাকার্ডে ছেঁয়ে যায় সমগ্র এলাকা। এসব ব্যানার-ফেস্টুনে শোভা পায় দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি। এসময় তাদের বিভিন্ন স্লোগান দিতেও দেখা যায়।
বিএনপির শোভাযাত্রার কারণে নয়াপল্টন ও এর আশপাশের সড়কে দীর্ঘ সময় যান চলাচল বন্ধ ছিল। যানবাহন না পেয়ে অনেক মানুষকে হেঁটে গন্তব্যে যেতে হয়েছে। তবে মিছিলের মধ্য দিয়ে দেওয়া হয়েছিল অ্যাম্বুলেন্স চলাচলের সুযোগ। শোভাযাত্রা ঘিরে আগে থেকেই সতর্ক অবস্থানে ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন,  ‘আজকের এই শোভাযাত্রা প্রমাণ করেছে আমরা পারি। অতীতে পেরেছি, আগামীতেও পারব। সরকারের কোনো হুমকি-ধমকি, রক্তচক্ষুকে তোয়াক্কা না করে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করব।’
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ড. খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘সরকার উসকাচ্ছে, মিথ্যাচার করছে। আপনারা কোনো উসকানিতে কান দেবেন না। শান্তিপূর্ণভাবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা আমাদের লক্ষ্য অর্জন করব।’
তিনি বলেন, ‘আজকে যখন সরকার দেখছে তাদের দিন শেষ, তখন দেশে তারা বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে। ক্ষমতায় থাকতে এই গায়ের জোরের সরকার মিথ্যাচার করে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে। তারা (সরকার) বলে, আমরা নাকি সন্ত্রাস করতে চাই। সন্ত্রাস যদি করে থাকে, তা আওয়ামী লীগ করেছে।’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘অনেক কথা বলেছেন। আপনার সব কথার জবাব আমরা দেব না। শুধু মনে করিয়ে দিতে চাই, এই আওয়ামী লীগই স্বাধীনতার পরে গণতন্ত্র হত্যা করে বাকশাল করেছিল। গত ১৪ বছরে গণতন্ত্র হত্যা করেছে, লুটপাট করেছে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘সারা দেশের জনগণ রায় দিয়েছে- এই সরকার, যারা গণতন্ত্র হত্যাকারী, তারা আর গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে পারে না। জনগণের আজ একই ভাষা, একই তাদের দাবি, তারা এই সরকারের হাত থেকে মুক্তি পেতে চায়। তাই জনগণকে রক্ষা করতে আমরা ১০ দফা দিয়েছি। এই দাবি জনগণের দাবি। এই দাবির সমর্থনে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোকে যুগপৎ আন্দোলনের আহ্বান জানিয়েছি। আজকে আবার আহ্বান জানাতে চাই, আসুন দেশের দেশপ্রেমিক, গণতন্ত্রকামী দলমত-নির্বিশেষে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলে এই দেশকে বাঁচাই।’
শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, মো. শাহজাহান, বরকত উল্লাহ বুলু, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আহমদ আযম খান, ঢাকা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম আজাদ, বিএনপি নেতা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মীর সরাফত আলী সপু, শিরিন সুলতানা, নাজিম উদ্দিন আলম, তাইফুল ইসলাম টিপু, আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু প্রমুখ।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ঢাকা প্রতিনিধি মোমাসুদ রানা খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.