নৌ-অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু ৩ ঘন্টা অপেক্ষার পর নদীতীরেই প্রসুতির মৃত্যু


চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ কমাতে এবং রোগীদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্য পদ্মা নদীতে নৌ-এম্বুলেন্স দিয়েছেন সম্প্রতি।

কিন্তু তারপরও প্রায় ৩ ঘন্টা একজন প্রসুতি রোগীকে নিয়ে নদীতীরে অপেক্ষার পর সেই প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হয়েছে নদীতীরেই। এঘটনায় পরিবারের সদস্যদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং মানষিকভাবে চরম কষ্টের মধ্যে দিন পার করছেন বলে জানা গেছে।

এমনই ঘটনার শিকার দুর্গম চর থেকে হাসপাতালে আসতে না পেরে নদীর ধারে ৩ ঘন্টা অপেক্ষার পর সেখানেই মারা যায় গর্ভবতী নারী কুলসুম। সম্প্রতি চরের মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী একটি নৌ এ্যাম্বুলেন্স দেয়ার পরও সেটির সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছে কুলসুম ও তাঁর পরিবার।

ঘটনাটি গত শুক্রবার বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নে ঘটে। মৃত গর্ভবর্তী জাকিয়া বেগম কুলসুম (৩৬) পাঁকা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের কদমতলা গ্রামের সেরাজুল ইসলামের স্ত্রী। শুক্রবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে পদ্মা নদীর কদমতলা ঘাটে তার মৃত্যু হয়।

পাঁকা ইউনিয়নের স্বাস্থ্য সহকারী আবুল কালাম আজাদ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, সাত মাসের গর্ভবর্তী ছিলেন কুলসুম। বেশ কয়েকদিন থেকে তিনি অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। অসুস্থের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় গত শুক্রবার বেলা ১ টার দিকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উদ্দেশ্যে বাড়ি হতে রওনা হন কুলসুমসহ তার পরিবারের লোকজন। কদমতলা পদ্মা নদীর ঘাটে নৌকার জন্য অপেক্ষা করছিলেন তারা।

নৌকার প্রহর গুনতে গুনতে বেজে যায় বিকেল পৌনে ৪টা। নদীর ঘাটেই কুলসুমের মৃত্যু হয়। তিনি আরও জানান, পদ্মা নদীতে চলাচলের জন্য জরুরী সেবার লক্ষে চালু করা হয় নৌ-আম্বুলেন্স। কিন্তু অশিক্ষিত হতদরিদ্র পরিবার হওয়ায় এবং তাদের বাড়িতে পুরুষ মানুষ না থাকায় নৌ-আম্বুলেন্স সার্ভিস নিতে পারেননি তারা।

এদিকে, সাবেক ইউপি সদস্য হোসেন আলী গর্ভবর্তী কুলসুমের মৃত্যু বিষয়টি বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে নিশ্চিত করে জানান, কুলসুমের স্বামী ঢাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করে এবং তাদের বাড়িতে সেসময় কোন পুরুষ মানুষও ছিলনা। তাদের সংসারে ১২ বছর ও ৫ বছরের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। এর আগেও মহিলার তিনটি সন্তান জন্মের আগেই মারা যায়।

সর্বশেষ আরেকটি সন্তান পৃথিবীতে আলো দেখার আগেই যোগাযোগ সমস্যার কারনে মারা যায়। তিনি আরও জানান, অজ্ঞতার কারনে সেবা পেতে নৌ-আম্বুলেন্সের জন্য কেউ সংশ্লিষ্টদের অবহিত করেনি। নেই কোন হটলাইন সার্ভিস। তবে চরাঞ্চলবাসীর জন্য নৌ-আম্বুলেন্স সার্ভিস পেতে হটলাইন সার্ভিস চালুর দাবি তার।

উল্লেখ্য, চরাঞ্চলে বসবাসকারী লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে ২৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রদত্ত নৌ-অ্যাম্বুলেন্স স্থানীয় সাংসদ ডা. সামিল উদ্দিন আহম্মেদ শিমুল উদ্বোধন করেন।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি মো: আশরাফুল ইসলাম রঞ্জু। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.