নুসরাত হত্যায় অধ্যক্ষ সিরাজসহ ১৬ আসামীর ফাঁসি

ফেনী প্রতিনিধি: ফেনীর সোনাগাজীর আলোচিত মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাসহ ১৬ জন আসামীর সবাইকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। সেইসঙ্গে প্রত্যেক আসামীকে এক লক্ষ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) বেলা ১১টা ১৫ মিনিটের দিকে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রশিদের আদালতে এ রায় ঘোষণা করা হয়।

রায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন:

১. সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা,

২. সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি রুহুল আমিন,

৩. সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম,

৪. মাদ্রাসার শিক্ষক আবদুল কাদের,

৫. প্রভাষক আফসার উদ্দিন,

৬. মাদ্রাসার ছাত্র নুর উদ্দিন,

৭. শাহাদাত হোসেন শামীম,

৮. সাইফুর রহমান মোহাম্মদ যোবায়ের,

৯. জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ,

১০. কামরুন নাহার মনি,

১১. উম্মে সুলতানা পপি ওরফে তুহিন,

১২. আবদুর রহিম শরিফ,

১৩. ইফতেখার উদ্দিন রানা,

১৪. ইমরান হোসেন মামুন,

১৫. মোহাম্মদ শামীম,

১৬. মহি উদ্দিন শাকিল।

তারা সবাই মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামী।

এদিকে, রায়কে ঘিরে সোনাগাজী ও ফেনী সদর উপজেলায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার রয়েছে। ফেনী সদর ও সোনাগাজীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশের নিরাপত্তাচৌকি বসানো হয়েছে। এ ছাড়া র‍্যাব সদস্যদের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। নুসরাতের বাড়িতেও অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

রায় ঘোষণাকে ঘিরে যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে এ রকম নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে নুসরাতের শ্লীলতাহানি করেন। এ ঘটনায় তাঁর মা শিরিনা আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী থানায় মামলা করলে অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলা তুলে না নেওয়ায় ৬ এপ্রিল মাদ্রাসার প্রশাসনিক ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় বোরকা পরা পাঁচ দুর্বৃত্ত। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ নুসরাতের মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান (নোমান) সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। পরে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়। গত ২৮ মে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত শেষে মাদ্রাসার অধ্যক্ষসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে ৮৬৯ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করে। মাত্র ৬১ কার্যদিবসে মামলার কার্যক্রম শেষ হয়। আর মামলার তদন্ত কার্যক্রম শেষ করতে পিবিআইয়ের লাগে ৩৩ কার্যদিবস।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ফেনী প্রতিনিধি মোঃ দেলোয়ার হোসেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.