নির্বাহী কর্মকর্তার অসন্তোষ প্রকাশ : মোড়েলগঞ্জে নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম

মোড়েলগঞ্জ (বাগেরহাট) প্রতিনিধি: বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে সরকারি নিয়মনীতি না মেনেই দায়সারাভাবে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। মাঠ পর্যায়ে নেই কোন তদারকী। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষকদের ইচ্ছা অনুযায়ী সময় সূচি ও পাঠদান। অনিয়মিত অধিকাংশ শিক্ষক।

মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা চিঠি অনুযায়ী সকাল ১০টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ক্লাশ সূচি। মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনা ১০টার মধ্যে ক্লাশ শুরু, ৬ ঘন্টা পাঠদান। মানা হচ্ছে না এ নিয়ম-নীতি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে ও সরেজমিনে জানাগেছে, এ উপজেলায় মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৬৬টি, দাখিল মাদ্রাসা রয়েছে ৬৩, এবতেদায়ী শাখা ও স্বতন্ত্র সংযুক্ত ৬৩, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩০৯টি বছরের শুরুতেই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন বই পেলেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি সংখ্যা খুবই কম।

অধিকাংশ বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকরা থাকছেন অনুপস্থিত। রয়েছে শ্রেণীকক্ষে সংকট, শিক্ষক সংকট, জরার্জীণ ভবনে পাঠদান এ সব কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মান উন্নায়নে হ-য-ব-র-ল অবস্থা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখাগেছে, বারইখালী আবুল কাশেম স্মৃতি দাখিল মাদ্রাসা, শিক্ষক মন্ডলী রয়েছে প্রতিষ্ঠান প্রধান সুপারসহ ৭ জন। কাগজে কলমে নিয়মিত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৮৭। উপস্থিত রয়েছে ১০ম শ্রেনীতে ২ জন, ৯বম ৭, ৮ম ৬, ৬ষ্ট ৬, এবতেদায়ী শাখায় ৩ জন। মাদ্রাসা অবকাঠামো খুবই নাজুক।

এবতেদায়ী শাখার নেই কোন শ্রেণীকক্ষ। মাদ্রাসার শ্রেণীকক্ষে বারান্দায় চলে ইবতেদায়ী শিক্ষার্থীদের পাঠদান, হোগলাবুনিয়ার লেহাজ উদ্দিন দাখিল মাদ্রাসা নিয়ম রয়েছে ১০টা থেকে ৪টা পর্যন্ত পাঠদানের সময় সূচি দেড়টা বাজলেই মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয় ছুটি, বলইবুনিয়ার রাজৈর নেছারিয়া ফাজিল(ডিগ্রী) মাদ্রাসা ২০ জানুয়ারী সময় দুপুর দেড়টা মাদ্রাসা ভবনের মূল ফটকে ঝুলছে তালা, জিউধরার কেসি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৭ জানুয়ারী সময় দুপুর ২টা বিদ্যালয়ের প্রতিটি শ্রেনীকক্ষতে ঝুলছে তালা, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো চিত্র একই রকম, ১৬৫নং মজিবুল হক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংখ্যা রয়েছে ৮২ জন ২য় শিফটে উপস্থিতি শিক্ষার্থী ৫ম শ্রেনীতে ৮, চতুর্থ ৫, ৩য় ৬ জন।

পরিত্যক্ত ভবনে অফিসকক্ষ। শিক্ষক মন্ডলী পদ রয়েছে ৫টি নিয়মিত কর্মরত ৩ জন, প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষক দিয়ে চলছে মাঠের মধ্যে পাঠদান, বিদ্যালয়ের শিক্ষা উপকরনের নানা সামগ্রী, শিশুতোষ বই, বাংলাদেশের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির ১০ বছর, ২০০৯-২০১৮ নির্বাচিত ১০০ ভাষন, ২০১৪-২০১৭ শেখ হাসিনা ও ছোটদের শেখ হাসিনা বইপত্র ফেলে রাখা হয়েছে মেঝেতে স্তুপ আকারে এলোমেলোভাবে। স্লিপের টাকার ভাউচার কেটে ফেলেছে ইদুরে। নিশানবাড়িয়ার ১০০ নং জামিরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২ জন শিক্ষক দ্বারা চলছে এ বিদ্যালয়টি।

প্রধান শিক্ষক নাসরিন নাহার রয়েছে প্রশিক্ষনে, শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৭৮, উপস্থিত রয়েছে ৪র্থ শ্রেনীতে ৭জন ও ৩য় শ্রেণীতে মাত্র ৪জন। ২৮২ নং দক্ষিণ চর হোগলাবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক পদ রয়েছে ৫টি, কর্মরত ২ জন শিক্ষক। প্রধান শিক্ষক রয়েছে গোলাম মোহাম্মদ কবির দুপুরে খাবার খেতে গেছে বাড়িতে, দীর্ঘ ১ ঘন্টা পরে এসেছেন বিদ্যালয়ে তিনি।

মোট শিক্ষার্থী ৮০ জন, উপস্থিত রয়েছে পঞ্চম শ্রেনীতে ৪ জন, ৪র্থ ৭ ও ৩য় ১৪ জন। সময় দুপুর ২টা ৩০ মিনিট। ৫ম শ্রেণী কক্ষের একপাসে রয়েছে শিক্ষকের বিশ্রামাগার। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক হাজিরাও অনিয়মিত।

এদিকে সম্প্রতি নতুন বছরের শুরুতেই পৌর শহরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আর্কষিক পরিদর্শনে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান। বিদ্যালয়গুলোতে অনেক শিক্ষককে অনুপস্থিত পেয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনে নির্দেশনা দেন তিনি।

এ সর্ম্পকে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালিত হলে সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. জালাল উদ্দিন খান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, বিদ্যালয়ে নিয়ম অনুযায়ী ৪টা পর্যন্ত ২ শিফটে ক্লাশে পাঠদান দিবে শিক্ষকরা। অনিয়মিত শিক্ষকদের বিষয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মাঠ পর্যায়ে দারকীর জন্য সহকারি শিক্ষা অফিসারগন নিয়মিত বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে যাচ্ছেন।

র্দীঘদিন ধরে ৬ জন সহকারি শিক্ষা অফিসার পদ শূন্য রয়েছে। কর্মকর্তা সংকট থাকায় এর প্রভাব কিছুটা পরছে বিদ্যালয় গুলোতে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর মোড়েলগঞ্জ (বাগেরহাট) প্রতিনিধি এম.পলাশ শরীফ গনেশ পাল। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.