নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন দাবি করলেই যে তা সুষ্ঠু হয়ে যাবে এমন কোনো কথা নেই: মাহবুব তালুকদার

 

ঢাকা প্রতিনিধি: আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি করলেই যে তা সুষ্ঠু হয়ে যাবে এমন কোনো কথা নেই বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।

তিনি বলেন, ‘জনতার চোখ বলে একটা কথা আছে। আমাদের ও আপনাদের সকলের কর্মকাণ্ড জনতার চোখে পরীক্ষিত হবে। সুতরাং যথার্থ একটি গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করার জন্য আমাদের সবাইকে অঙ্গীকারাবদ্ধ হতে হবে।’

আজ দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই) ভবনে ঢাকা উত্তর সিটি মেয়রের শূন্য পদে স্থগিত নির্বাচন ও দুই সিটির নবগঠিত ৩৬টি ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে নির্বাচন উপলক্ষে রিটার্নিং ও সহকারি রিটার্নিং অফিসারদের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠান উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য করার বিষয়ে আমি সবসময় গুরুত্বারোপ করেছি। এই গ্রহণযোগ্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা অবশ্যই দৃশ্যমান হতে হবে। ’

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তথ্য উপাত্তে দুটি শব্দ অতিমাত্রায় ব্যবহার করা হয়েছে বলেও জানান এই কমিশনার। তিনি বলেন, “আমি এখন পর্যন্ত যেসব কাগজপত্র দেখেছি তাতে রিটার্নিং অফিসার থেকে শুরু করে পর্যবেক্ষক পর্যন্ত সবার প্রতিবেদনে দুটি শব্দ অতিমাত্রায় ব্যবহৃত হয়েছে। একটি শব্দ হচ্ছে ‘সন্তোষজনক’ এবং অন্য শব্দটি হচ্ছে ‘স্বাভাবিক’।  তার মানে কি আমাদের নির্বাচন খুবই সন্তোষজনক হয়েছে? এই ক্ষেত্রে পাবলিক পারসেপশন কি তা নিজেদের কাছেই জিজ্ঞেস করতে হবে।”

নির্বাচনে প্রকৃত চিত্র সব প্রতিবেদনে উঠে আসা উচিত বলেও মন্তব্য করেন মাহবুব তালুকদার। নিজের অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনে আমার দুই বছরের অভিজ্ঞতা বলে, বিভিন্ন প্রতিবেদনে বিশেষত, নিজস্ব পর্যবেক্ষকদের প্রতিবেদনে সাধারণত কোনো নেতিবাচক বিষয় লিপিবদ্ধ করার বিষয়ে আমরা দ্বিধান্বিত। সবাই যেন কাগজেপত্রে গা বাঁচিয়ে চলতে চান। যদি কেউ তথ্য উপাত্ত দিয়ে আমার কথার বিরোধিতা করতে পারেন তাহলে আমি খুশি হবো।’

আসন্ন সিটি নির্বাচন প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে তাকে আমি নাতিশীতোষ্ণ নির্বাচন বলবো। কারণ এই নির্বাচনে মেয়র পদে যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার কথা ছিল, যে উত্তাপ ও উষ্ণতা থাকার কথা ছিল তা মনে হয় হবে না।  কেবল কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কিছুটা উষ্ণতা আশা করা যায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পর ঢাকার এই নির্বাচনের দিকে দেশের মানুষ, এমনকি উন্নয়ন সহযোগীরা তাকিয়ে আছেন আমরা কী ধরনের নির্বাচন উপহার দেই তা দেখার জন্য। নির্বাচনকালে আমরা কোনো চাপ, কোনো ভয়ভীতি বা প্রলোভনের কাছে নতি স্বীকার করবো না।’

ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।#

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.