নির্বাচনে সহিংসতা: চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী লিটনের বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ


চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন আগামী ৩০ নভেম্বর মঙ্গলবার। এরই মধ্যে মেয়র প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় বাধা, নির্বাচন অফিস ভাংচুর, কর্মীদের মারধরসহ একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে জেলার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সজাগ রয়েছে বলেও জানা যায়।
এরই মধ্যে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী (আওয়ামীলীগ বিদ্রোহী) সামিউল হক লিটনের বাড়ীতে হামলার অভিযোগ উঠেছে। তবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তড়িৎ ব্যবস্থা নেয়ায় রক্ষা পেয়েছে লিটনের পরিবার।
এনিয়ে আজ বুধবার দিনভর নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। এঘটনায় এলাকায় আতংক বিরাজ করছে।
এবিষয়ে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সামিউল হক লিটন বিটিসি নিউজকে জানান, গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া ১১টার দিকে ২০-২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী তার বাতেন খান মোড়ের অফিসে হামলা চালায়। সেখান থেকে তারা তার বাড়ির দিকে এসে দেশীয় অস্ত্র উঁচিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে। এলাকাবাসীর প্রতিরোধে তারা তার বাসায় হামলা করতে পারেনি। তিনজন সন্ত্রাসীকে এলাকাবাসী আটকও করে। সেই মুহুর্তে তিনি সদর থানায় ফোন দিলে থানার ওসি মোজাফফর হোসেন এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
লিটন জানান, এলাকাবাসী পুলিশ দেখে আটক তিনজনকে ছেড়ে দিয়ে নিজ নিজ বাড়িতে চলে যায়। তখন তিনি তার বাসায় অবস্থান করছিলেন।
এবিষয়ে তিনি আজ বুধবার সকালে রিটার্ণিং অফিসারকে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান।
এবিষয়ে সদর মডেল থানার ওসি মোঃ মোজাফফর হোসেন বিটিসি নিউজকে বলেন, মেয়র প্রার্থী লিটনের বাসায় হামলার খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে এরকম কোন আলামত পায়নি এবং সেখানে কাউকেও পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, নির্বাচনে যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেবিষয়ে তৎপর রয়েছে পুলিশ।
জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্ণিং কর্মকর্তা মোঃ মোতাওয়াক্কিল রহমান বিটিসি নিউজকে জানান, আজ বুধবার সকালে মেয়র প্রার্থী সামিউল হক লিটন একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অভিযোগটি পুলিশ সুপার বরাবর প্রেরণ করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ২২ নভেম্বর দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে বাড়ি যাওয়ার পর নির্বাচনী প্রচারণার জন্য শহরের সন্ধ্যা হলের পেছনের বাড়ি থেকে বের হলে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ৫টি মোটরসাইকেলে এসে হেলমেট পরিহিত ১০/১২ জন লোক কামরুল ইসলাম জুয়েলকে বেধড়ক মারধর করে চলে যায়। মোবাইল ফোন প্রতীকের ভোট করার জন্য গত ২ নভেম্বর রাতে তার দুই সমর্থক সোহেল ও রিপনকে বটতলাহাট এলাকায়, গত ১২নভেম্বর রাতে শহরের বিশ্বরোড মোড়ে মিলন নামে এক কর্মীকে এবং গত ১৯ নভেম্বর রাতে দুলাল ও দিদার নামে দু’জনকে মারধর করা হয়।
এছাড়া ২০ ও ২১ নভেম্বর রাতে ৪টি নির্বাচনী অফিসসহ মোট ১৩টি অফিস ভাঙ্গচুরসহ অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসব কর্মকান্ডের জন্য লিখিতভাবে নির্বাচন অফিসকে জানিয়েও কোন কার্যকর ব্যবস্থা হয়নি। আগেও মোবাইল ফোনের বেশ কিছু অফিস ও প্রচার মাইক ভাংচুর ও কর্মীদের উপর হামলা-মাধধর হলেও কোন সু-ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলেও জানা গেছে।
এদিকে, নির্বাচনী প্রচার-প্রচারনা চলকালে গত সোমবার (২২ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সদর উপজেলার বাতেন খাঁর মোড়ে এক বাড়ি থেকে ৩টি ককটেল উদ্ধারসহ ২ জনকে আটক করে সদর থানা পুলিশ। এছাড়া একই দিন নির্বাচন অফিসের পিছনে আম বাগান থেকে ৩টি ককটেল পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এনিয়েও জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দেয়।
আগামী ৩০ নভেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে আওয়ামীলীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থীসহ আ.লীগ বিদ্রোহী, বিএনপি ও জামায়াতের স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ ৪ জন মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি মো: আশরাফুল ইসলাম রঞ্জু। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.