নিরাপত্তাহীনতায় রাবি শিক্ষার্থীরা; প্রশাসনের নিশ্চুপ ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিনিয়ত ছিনতাই, চুরি, যৌন হয়রানি সহ নানা ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে শিক্ষার্থীরা। গত এক মাসে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় এমন ৮টি ঘটনা ঘটেছে। তবে এ বিষয়ে প্রশাসন বেশির ভাগ ঘটনায় অপরাধীদের চিহ্নিত করতে না পারায় ক্যাম্পাস জুড়ে প্রশাসনের নিশ্চুপ ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে শিক্ষার্থীরা।
এদিকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখভালের জন্য ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ন এলাকা বা আবাসিক হলে পুলিশ অবস্থান করলে তাদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। একের পর এক নিরাপত্তহীনতার ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আতঙ্কিত ও ক্ষোভ প্রকাশ বেড়েই চলেছে।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলছেন ভিন্ন কথা তিনি বলছেন ‘সম্প্রতি অনাকাঙ্খিত যে ঘটনা গুলো ঘটেছে এ জন্য আমরা উদ্বিগ্ন। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা কিন্তু ব্যবস্থা নিচ্ছি আমাদের বর্তমানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ছিনতাই এবং যৌন হয়রানি চক্রে জড়িতের চিহ্নিত করে গ্রেফতারও করা হচ্ছে। আশাকরছি এসব অপকর্মে জড়িতরা কেউ ছাড় পাবে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, অক্টেবর মাসের শুরুতে ও শেষের দিকে ক্যাম্পাসে ছয়টি ছিনতাইয়ের ও দুইটি যৌন হয়রানি ঘটনা ঘটে।
অক্টোবরের ২ তারিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা গেটে নিলা নামের এক শিক্ষার্থী ও ৩ তারিখ বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর গেটে আইবিএ এর কিছু শিক্ষার্থী যৌন হয়রানির শিকার হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ প্রশাসনের সামনে হরহামেশায় বহিরাগতদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যৌন হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে বলে জানান তারা।
এদিকে ১৮ অক্টোবর রাত সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগের ফিরোজ আনাম নামের এক শিক্ষার্থীকে ছিনতাইচেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে মাথায় ছুরিকাঘাত, ২২ অক্টোবর রাতে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার সামনে ছিনতাইয়ের শিকার হয় তিন ভর্তিচ্ছু, সিরাজী ভবনের সামনে এ ঘটনার দু দিনের মাথায় আরও এক ছিনতাইকারী ছিনতাইচেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে আটক হয়।
এছাড়া আবাসিক হল থেকে সাইকেল,মোবাইল, ল্যাপটপ প্রতিনিয়ত চুরি  হওয়ার খবর নিউজের শিরোনাম হতে গিয়েছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়ে উল্টো প্রশাসন নোটিশ দিয়ে মোবাইল, ল্যাপটপ সচেতনভাবে রাখার জন্য বলে। তবে হলের পুলিশ কি কাজ সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে শিক্ষার্থীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ শুধু বসে মোবাইলে ইউটিউবে ভিডিও দেখেন। হলের নিরাপত্তার বিষয়ে তাদের কোন ভুমিকা নেই। হলে কোন মারামারি হলে তারা উদ্ধোতন কতৃপক্ষের নিকট সাহায্য চাই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আশাদু্ল ইসলাম বিটিসি নিউজকে বলেন, আবাসিক হলের রাস্তায়, শিক্ষকদের কোয়াটার এর দিকে যায়তে গেলে রাতের অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন ভয়ভীতি এবং চাকু দেখিয়ে ছিনতাই এর ঘটনা ঘটে থাকে। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ফটক দিয়ে ঢুকে হবিবুর রহমান হলে যাওয়ার রাস্তায়, কাজলা গেট দিয়ে ঠুকে জুবেরী মাঠ, চারুকলা অনুষদের রাস্তায়, ইবলিশ চত্বরের রাস্তায় সন্ধ্যা হলে ছিনতাইকারী চক্র অবস্থান নেই।
কিছু দিন আগে ভর্তি পরিক্ষার সময় বিভিন্ন স্থানে একাধিক ছিনতাই এর ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ দিলেও দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহা বিটিসি নিউজকে  বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রবেশ পথ দিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী ছাড়া অন্য কেউ প্রবেশ না করুক সেটা আমরা চাই তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মত জায়গায় এটা অনেক সময় সম্ভব হয়ে উঠেনা। তবে নিরাপত্তার বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনকে আরও সতর্ক থাকার কথা জানান তিনি।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর রাবি প্রতিনিধি মো: মুজাহিদ হোসেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.