নিপীড়নের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ: ভারতে দুই নারী অলিম্পিক কুস্তিগীর আটক

 

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতে নারী ক্রীড়াবিদদের নিপীড়নের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক বিক্ষোভের সময় দুই অলিম্পিক কুস্তিগীরকে আটক করেছে পুলিশ।
রোববার (২৮ মে) দিল্লির নতুন সংসদের দিকে মিছিল করার চেষ্টা করছিলেন তারা। এ সময় বজরং পুনিয়া এবং সাক্ষী মালিককে আটক করা হয়। ভবনটির উদ্বোধনের সময় দায়িত্বরত শত শত পুলিশ তাদের থামিয়ে দেয়।

11

ফুটেজে দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড অতিক্রম করে, কর্তৃপক্ষ তাদের সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ পদকজয়ী ভিনেশ ফোগাট এবং তার বোন সংগীতাও দেশের শীর্ষ কুস্তিগীরদের মধ্যে রয়েছেন।
পুলিশ গাড়িতে তুললে সাক্ষী মালিক সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা তারা ভুল করছে। আমরা চুপচাপ হাঁটছিলাম, তারা আমাদের জোর করে টেনে নিয়ে যায়। আমাদের আটক করে এবং তারা আমাদের কোথায় নিয়ে যাবে তাও বলছে না।’
বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ পদকজয়ী ভিনেশ ফোগাট বলেন, আমাদের লোকজনকে মিছিল করতে দেওয়া হচ্ছে না। বিক্ষোভকারীরা হাতজোড় করে অনুরোধ করেছিল যেন পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয় এবং শান্তিপূর্ণভাবে চলে যায়।

7

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন পার্লামেন্টের উদ্বোধন করেন। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে উদ্বোধনের জন্য অনুরোধ না করায় বিজেপি সরকারের সমালোচনা হয়েছে। পরে বেশিরভাগ বিরোধী দল অনুষ্ঠান বয়কট করে।
পুলিশ দাবি করেছে, বিক্ষোভকারী কুস্তিগীররা পুলিশের নির্দেশ অনুসরণ করেনি। যারা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেছিল, তাই তাদের আটক করা হয়।
দিল্লির বিশেষ পুলিশ কমিশনার দীপেন্দ্র পাঠক স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বিক্ষোভকারীরা আইন ভঙ্গ করেছে। কী নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়েছে সেটি স্পষ্টভাবে খুঁজে বের করবো। তারপরে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ব্যবস্থা নেব।
কুস্তিগীররা কয়েক সপ্তাহ ধরে ক্যাম্পে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছে। পুলিশ সেই জায়গা থেকে তাঁবু এবং অন্যান্য জিনিসপত্রও সরিয়ে নিয়ে গেছে।

4

এদিকে, কুস্তিগীরদের আটকের নিন্দা জানিয়েছেন ভারতের বেশ কয়েকজন বিরোধী রাজনীতিবিদ। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি টুইটারে লিখেছেন, ‘সাক্ষী মালিক, ভিনেশ ফোগাট এবং অন্যান্য কুস্তিগীরদের দিল্লি পুলিশ যেভাবে মারধর করেছে তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এটা লজ্জাজনক যে আমাদের চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে এমন আচরণ করা হচ্ছে।’
আদমি পার্টির সদস্য ও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল পুলিশের আচরণকে ‘অত্যন্ত ভুল এবং নিন্দনীয়’ বলে অভিহিত করেছেন।
২০১৬ সালে অলিম্পিকে কুস্তি পদক জয়ী প্রথম ভারতীয় নারী মিজ মালিক পরে টুইটে জানান, তিনি এবং তার সহপ্রতিবাদীরা মুক্তি পেলে আবার আন্দোলন শুরু করবেন। আমাদের অবস্থান কর্মসূচি একটি অহিংস প্রতিরোধ।
ভারতের কুস্তি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে খেলাধুলার সময়ে নারীদের হয়রানির অভিযোগ করেছেন বিক্ষোভকারীরা। এর মধ্যে রয়েছেন গভর্নিং বডির প্রধান ব্রিজ ভূষণ সিং, যিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

6

জানুয়ারিতে বিক্ষোভ যখন শুরু হয়, তখন ক্রীড়া মন্ত্রক ব্রিজ ভূষণকে প্রশাসনিক ক্ষমতাচ্যুত করার কথা এবং অভিযোগ তদন্ত করার প্রতিশ্রুতি দিলে বিক্ষোভ প্রত্যাহার করা হয়েছিল। কুস্তিগীররা এপ্রিলে ব্রিজ ভূষণকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ পুনরায় শুরু করে। চলতি মাসের শুরুতে তারা দাবি করেছিল, দিল্লি পুলিশ তাদের লাঞ্ছিত করেছে।
ভারতীয় অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (আইওএ) ব্রিজ ভূষণের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করে। কয়েক সপ্তাহ আগে তারা প্রতিবেদন জমা দেয়। কমিটির প্রতিবেদন এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
অপরদিকে, কুস্তিগীরদের সমর্থনে গতকাল রোববার ভারতের কৃষকদের একটি দল দিল্লিতে প্রবেশের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পুলিশ তাদের ঢুকতে দেয়নি। চলতি মাসের শুরুতে আরও একটি বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার জন্য কৃষকরা দিল্লিতে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙেছিলেন। #

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.