নানা কর্মসূচীতে হাবিপ্রবির ২০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

হাবিপ্রবি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: তেভাগা আন্দোলনের জনকের নামের সাথে সঙ্গতি রেখে ১৯৯৯ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয় রংপুর বিভাগের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর । এর আগে, ১৯৭৯ সালে প্রথমে “কৃষি সম্প্রসারণ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র” হিসাবে যাত্রা শুরু করে । পরবর্তীতে ১৯৮৮ সালে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয় “হাজী মোহাম্মদ দানেশ কৃষি কলেজ”। শিক্ষা, অগ্রগতি ও গবেষণা প্রসারের লক্ষ্যে  ১৯৯৯ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
আজ বুধবার সকাল ১০ টায় ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো অনানুষ্ঠানিক ভাবে হাবিপ্রবির ২০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন কর্মসূচি শুরু হয়। পরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেম। এসময় বেলুন উড়ানোর পাশাপাশি পায়রা অবমুক্ত করেন তিনি।
সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ একটি আনন্দ শোভাযাত্রা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন চত্তর প্রদক্ষিণ করে প্রশাসনিক ভাবণের সামনে এসে শেষ হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেম, কোষাধাক্ষ্য প্রফেসর ড. বিধান চন্দ্র হালদার, রেজিস্ট্রার প্রফেসর ডা. মোঃ ফজলুল হক, পোষ্ট গ্রাজুয়েট অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. ফাহিমা খানম, প্রক্টর প্রফেসর ড. মোঃ খালিদ হোসেন, আইআরটির পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ তারিকুল ইসলাম, পরিবহণ শাখার পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ মফিজউল ইসলাম সহ বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক, কর্মকর্তা কর্মচারী, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হাবিপ্রবি শাখার নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
আনন্দ শোভাযাত্রা শেষে কেক কাটা ও হাবিপ্রবি স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে বৃক্ষ বিতরণ কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হাবিপ্রবি শাখার পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন রাসেল আলভি ও রিয়াদ খান। এ সময় তারা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন চাহিদার কথা উপাচার্যকে জানান।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তাঁর শুভেচ্ছা বক্তব্য বলেন, ” বিশ্ববিদ্যালয় একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। ধাপে ধাপে এর উন্নয়ন হয়। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে টিএসটির সম্প্রসারণ উদ্বোধন সহ, পরিবহন শাখায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য বাস, মাইক্রো, পিকআপ সংযুক্ত হয়েছে, মোবাইল ভেটেনারি ক্লিনিক এ মাসেই আসবে, লাইব্রেরিতে এসি সংযুক্তকরণ, বঙ্গবন্ধু হল উদ্বোধন, আইভি রহমান হলের সংস্কার, ওয়াজেদ ভবণে লিফট সংযোজন, মেডিকেল সেন্টার সম্প্রসারণ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের জন্যে পরীক্ষাগার নির্মাণ, অডিটোরিয়াম-২ সংস্কার, ৪৫ তম বিভাগ হিসাবে ডেভলপমেন্ট স্টাডিসের চালু, ছোট শিশুদের জন্যে মিনি পার্ক সংস্কার, ইউটিলিটি ভবণ উদ্বোধন এর পাশাপাশি দ্রুত এগিয়ে চলছে দশতলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবণ নির্মাণের কাজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় গেটের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ দিকে। সামনে প্রায় ৪৫৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প পাওয়ার কথা আমাদের। সেটি পেলে হাবিপ্রবির আরো উন্নতি হবে “। এসময় উপাচার্য সকলে একসাথে নিয়ে কাজ করার কথা বলেন এবং সকলের সহায়তা চান।
 ২০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করে। এর অংশ হিসাবে হাবিপ্রবি ছাত্রলীগ শাখা রক্তদান কর্মসূচী, দানেশ ব্লাড ব্যাংক ফ্রি রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা, রোটারেক্ট ক্লাব অব এইচএসটিইউ কুইজ প্রতিযোগিতা, এইচএসটিইউ আর্ট এ্যান্ড লিটারেচার কমেন্ট বুক ও বই প্রদর্শনীর আয়োজন করে।
এদিকে ২০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী স্মরণীয় করে রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মেয়েদের আসাবন সংকট নিরসনের লক্ষে প্রায় ২৩ কোটি টাকা ব্যায়ে ৭২০ আসন বিশিষ্ট ছয়তলা অত্যাধুনিক হল নির্মাণের কাজের শুভ উদ্বোধন করেন। এই প্রকল্পের সময় ১৮ মাস বলে জানা যায়।
উল্লেখ্য যে, গত সোমবার থেকে লাল,নীল,সবুজসহ হরেক রঙের বাতির সমন্বয়ে সুসজ্জিত করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ভবন। যোহরের নামাজের পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় এবং সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় আলোক সজ্জা।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর হাবিপ্রবি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি মোঃ মিরাজুল আল মিশকাত। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.