“নাটোর সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের জলাবদ্ধতা সমস্যার এখনো কোনো সমাধান হয়নি”

নাটোর প্রতিনিধি: গত দুই দিনের বৃষ্টিতে নাটোর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রবেশ পথ ও সারা ক্যাম্পাসে অন্তত দুই ফুট পানি জমে গেছে। সাপ্তাহিক ছুটি শেষে আজ সকালে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা এতে বিপাকে পড়েন। অনেকে বাড়িতে ফিরে যান। কেউ আবার তিনগুণ বেশী ভাড়া দিয়ে ভেতরে ঢোকেন।

তবে ভেতরে ঢোকার পর দেখা যায় বিদ্যালয়ের মাঠটি বিশাল এক পুকুরে পরিণত হয়েছে। বিদ্যালয়ের এক ভবন থেকে অন্য ভবনে যেতে শিক্ষার্থীরা বেঞ্চ দিয়ে সেতু বানিয়েছে। ভবন ছাড়া বিদ্যালয়ের সর্বত্র জলাবদ্ধ। শেষ পর্যন্ত ছাত্র সংকটে ক্লাশ হয়নি। জেলার সেরা বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ না থাকায় অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান।

বৃষ্টিপাতে নাটোর সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়সহ আশেপাশের এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে বিদ্যালয়ের মাঠ ও বিদ্যালয় সংলগ্ন সড়ক হাঁটু পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে গাড়ি চলাচলসহ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা। একদিকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঠিকঠাক মতো স্কুল আসতে না পারায় বিদ্যালয়ে উপস্থিতি কম এবং পাঠদানও সমস্যা হচ্ছে। অন্যদিকে পানিতে ডুবে থাকা বিদ্যালয় সংলগ্ন বাসিন্দারা ঘর থেকে ঠিকমত ঘর বের হতে পারছেন না।

ফলে এই পরিস্থিতি উত্তোরণে দ্রুত পানি নিষ্কাশনসহ স্থায়ী সমাধান চান তারা। এদিকে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বিদ্যালয়ের জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া স ম্পন্ন করে ঠিকাদার নিযুক্ত করে কার্যাদেশও দেয়া হয়েছে। দুই একদিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে।

বিদ্যালয়ের ছাত্র কাওসার আহম্মেদ সহ শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বিটিসি নিউজকে জানান, পানি নেমে যাওয়ার কোন পথ না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই মহাসড়ক থেকে তাদের বিদ্যালয়ে যাবার রাস্তায় এবং মাঠে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।

এতে করে শিক্ষার্থীদের চলাচলে সমস্যা হয়। এ ব্যাপারে বারবার কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও কোন প্রতিকার তারা পায়নি। তাই বাধ্য হয়েই তারা আন্দোলনও করেছেন।

তিনি আরো জানান, বিদ্যালয় সংলগ্ন রাস্তায় পানি থাকায় পরিবহন চালকরা শিক্ষার্থীদের থেকে অতিরিক্ত ভারা আদায় করছে। বৃষ্টির পানিতে আশেপাশের ময়লাআবর্জনা বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে বিদ্যালয়ের সুন্দর পরিবেশ নষ্ট করছে। পচা পানির কারণে অনেক শিক্ষার্থীর পায়ে রোগ দেখা দিয়েছে।

রাস্তায় এক হাঁটু পঁচা পানি থাকায় শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে।

স্থানীয় বাসিন্দা রবিউল আওয়অল বিটিসি নিউজকে জানান, শুধু বিদ্যালয়ের সমস্যা নয়, আশপাশের বাসিন্দারা চরম ভোগান্তিতে আছেন। রিক্রা না ডাকলে বাসা থেকে বের হওয়া মুশকিল হয়ে পড়েছে। এই সুযোগে রিক্রা চালকরাও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন।

তিনি বলেন, চারলেন সড়কের নির্মাণ কাজ করার কারনে সামান্য বৃষ্টি হলেই দেখা দিচ্ছে জলাবদ্ধতা। বৃষ্টির পানি বের হওয়ার জায়গা না থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের। শুনেছেন জলাবদ্ধতা দূরিকরনের জন্য সম্প্রতি পৌরসভা থেকে ড্রেন নির্মাণের টেন্ডার দিয়ে কার্যাদেশ দিলেও কাজ শুরু করেনি ঠিকাদার।

এর আগে বিদ্যালয়ে প্রবেশের রাস্তায় ও মাঠের জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে নাটোর সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছিল। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন জলাবদ্ধতা নিরসনের আশ্বাস দিয়ে জানান, এই অবস্থা গত দুই বছর ধরে বিরাজ করছে।

জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য তিনি জেলা প্রশাসক ও পৌর সভার মেয়রকে অবগত করেছেন। এরপর জলাবদ্ধতা নিরসনে রাস্তাসহ ড্রেনের কিছু কাজ করা হয়েছে। তবে তাতে স্থায়ী কোন সমাধান হয়নি। তিনি

বলেন, বিদ্যালয়ে প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রতিটি পাবলিক পরীক্ষায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতি বছরই সুন্দর ফলাফলের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের সুনাম অক্ষুন্ন রাখছে। এসব বিবেচনা করে দ্রুত জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধান করা দরকার।

মেয়র উমা চেীধুরী জলি বিটিসি নিউজকে জানান, হাইরোডে নতুন ড্রেন নির্মাণের ফলে পানি নামার পথ বন্ধ হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থা উত্তোরনে নতুন করে ড্রেন নির্মাণ করে নদীতে পানি নামানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

তবে এখন আপাতত অস্থায়ীভাবে পানি নামার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.