নাটোরে মামলা থেকে নাম বাদ দেবার কথা বলে ৫ লাখ টাকা ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ এসআইয়ের বিরুদ্ধে

নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের গুরুদাসপুরের বাসিন্দা আমেরিকা প্রবাসী রাসেল হোসাইনের নামে দায়েরকৃত একটি মারামারির মামলা থেকে নাম প্রত্যাহারের কথা বলে রাসেলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার গোলাম রাব্বির কাছে ৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবী করার অভিযোগ উঠেছে গুরুদাসপুর থানার এসআই আবু জাফর মৃধার বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। ঘটনার তদন্ত করে দ্রুত প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ নেবার আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশ সুপার আমজাদ হোসাইন।
জানা যায়, গত ১৫ মে গুরুদাসপুর পৌরসভার চাঁচকৈড় বাজার এলাকায় ইটভাটা ব্যবসায়ী ফরিদ মোল্লার ছেলে রুবেল মোল্লাকে দুর্বত্তরা মারপিট করেন। মারপিটের সময় আমেরিকা প্রবাসী রাসেল হোসাইনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মচারী ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
এরই জেরে পরদিন ১৬ তারিখে মামলায় প্রবাসী রাসেলকে ১ নং আসামী করে মামলা করেন ফরিদ মোল্লা। মামলাটি তদন্তেরদায়িত্ব পান গুরুদাসপুর থানার এসআই আবু জাফর মৃধা। মামলার দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই এসআই আবু জাফর মৃধা প্রবাসী রাসেল হোসাইনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তার ম্যানেজার গোলাম রাব্বীর কাছে ঘুষ দাবি করতে থাকেন।
একপর্যায় গত ২ জুন মোবাইল ফোনে ম্যানেজার রাব্বির কাছে প্রবাসী রাসেল হোসাইনের নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য ৫ লাখ টাকা দাবি করেন এবং ঈদের পূর্বেই এক লাখ টাকা দিতে হবে বলেও জানান। মোবাইলের সেই কথোপকথন রাব্বি রেকর্ড করে রাখেন।এই কথোপকথনের ফোনকল রেকর্ডটি হাতে এসেছে।
গোলাম রাব্বি বলেন, আমি আমেরিকা প্রবাসী রাসেল ভাইয়ের ব্যবসা বাণিজ্য দেখাশোনা করি। গত কিছুদিন পূর্বে একটি মারামারির মামলায় উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মামলায় রাসেল হোসাইনের নাম জড়ানো হয়েছে। সেই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবু জাফর মৃধা প্রতিনিয়ত আমাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন।
পরবর্তীতে গত সোমবার রাতে মোবাইল ফোনে কথা হলে রাসেল হোসাইনের নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়ার কথা বলে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। ঈদের আগেই এক লাখ টাকা তাকে দিতে হবে। আমি এসআইয়ের ঘুষ দাবির বিষয়টি রেকর্ড করে প্রতিকার পাওয়ার জন্য নাটোর পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
আমেরিকা প্রবাসী রাসেল হোসাইন বলেন, আমার বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। প্রবাসে থেকেও আমি দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে চাঁচকৈড় বাজারে দুইটা ব্যবসা পরিচালনা করছি, যা স্থানীয় ম্যানেজার গোলাম রাব্বি দেখাশোনা করে। কিন্তু আজ আমি চরম হতাশা, অপমান আর কষ্ট নিয়ে বলছি , একটি ভিত্তিহীন ও মিথ্যা মারপিটের মামলায় আমাকে ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে, যেখানে আমি দেশে পর্যন্ত নেই।
এর চেয়েও ভয়াবহ সত্য হলো গুরুদাসপুর থানার এসআই আবু জাফর মৃধা রাব্বিকে ফোন দিয়ে মামলায় নাম কাটার শর্তে আমার কাছে ৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেছেন। একজন পুলিশ কর্মকর্তার মুখে সরাসরি এমন কথা শুনে আমি হতবাক, ব্যথিত এবং আতঙ্কিত। আমি সরকারের কাছে, পুলিশ প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে, এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এসআই আবু জাফর মৃধা বলেন, টাকা চাওয়ার কোন প্রশ্নই আসেনা। এসকল অভিযোগ সত্য নয়।
নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন জানান, এসংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.