নাটোরে ফলন না হওয়ায় ১০৭টি ভিয়েতনামী নারকেল গাছ কেটে ফেললেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কৃষক সেলিম রেজা


নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরে ফলন না ধরায় ১০৭টি ভিয়েতনামী ও ক্যারালা হাইব্রীড জাতের নারকেল গাছ কেটে ফেলেছেন এক কৃষক। গাছ গুলো তিন বছরের মধ্যে ফলন ধরার কথা থাকলেও সাত বছরেও ফলন না ধরায় গাছ গুলো কাটেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কৃষক নাটোরের সেলিম রেজা।
নিজে প্রতারিত হয়ে এবং দেশের সাধারণ কৃষকদের প্রতারণা থেকে বাঁচানোর জন্য বৃহস্পতিবার সারাদিন ৮জন শ্রমিক দিয়ে তিনি তার খামারের এসব বিদেশি নারকেল গাছ কেটে ফেলেন।
সেলিম রেজা বিটিসি নিউজকে বলেন, কিছু সরকারি দপ্তরের মোসাহেবি কর্মকর্তার কারনে দেশের লাখো নতুন কৃষি উদ্দ্যোক্তা কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে নিঃস্ব হচ্ছেন। হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে। ফেসবুক ইউটিউবে মিথ্যা মুখরোচক বিজ্ঞাপন দেখে দেশের মানুষ পাগলের মতো বিদেশী ফলের চারা কিনে প্রতারিত হচ্ছে।
তিনি নিজেও এমন চারা কিনে প্রতারিত হয়েছেন। এসব চারা নিয়ে দেশে কোন গবেষণা নেই। দেশের মাটি ও আবহাওয়ার সাথে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ন তাও কারো জানা নেই। কোন কিছু না জেনেই পাম, কাটিমন, মিয়াজাকি আম, সৌদি খেজুর, আনার, আংগুর, পার্সিমন, রামবুটান, আপেল, কমলা, কুল, লংগান,চাইনিস কমলা, মাল্টার বিভিন্ন জাত, খাটো জাতের নারিকেল এবং একই ফলের বিভিন্ন নাম দিয়ে আকৃষ্ট করে কৃষকদের নিকট থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদের পুজি শেষ করে দেয়া হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। এসব বিদেশী ফলের গাছ জমিতে রোপনের পর বছরের পর বছর অপেক্ষা করেও চাষী কোন ফল পাচ্ছে না।
সাধারণ চাষীরা বলছেন, পরীক্ষা নীরিক্ষা করে সফলতা প্রাপ্তি স্বাপেক্ষে এসব চারা বিক্রি করা দরকার। তাছাড়া কোন নীতিমালা না থাকায় কোন প্রতিকারও হয়না। ফলে নার্সারিসহ অনলাইনে চারা বিক্রেতারা লাভের টাকা হাতিয়ে নিলেও ধ্বংস হচ্ছে দেশের কৃষি খাতের একটা বড় অংশ। দেশে সম্ভাবনাময় অনেক লাভজনক পরীক্ষিত দেশি-বিদেশি জাত রয়েছে সেগুলো সর্ম্পকে সরকারি ভাবে কৃষকদের সচেতন করা দরকার। কেউ যেন ইচ্ছে মতো ফেসবুক ইউটিউবে যে কোন বিদেশী চারার বিজ্ঞাপন দিতে না পারে সেই আইনও থাকা দরকার মনে করেন এসব চাষীরা।
কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর নাটোরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক ড. ইয়াছিন আলী বিটিসি নিউজকে বলেন, তিনি মাত্র তিন কর্মদিবস আগে এখানে যোগদান করায় বিষয় গুলো ভাবে জানেন না। বিষয়টি জেনে এ সমস্যা থেকে চাষীরা কিভাবে রক্ষা পাবেন না চাষীদের জানাতে চেষ্টা করবেন।
কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের হর্টিকালচার সেন্টার নাটোরের উপ-পরিচালক মোঃ মাহমুদুল ফারুক বিটিসি নিউজকে বলেন, রোপনের সময় থেকে ২৪মাস ঠিক মতো পর্যাপ্ত খাবার সরবরাহ করলে এই ভিয়েতনামী নারকেল গাছে ফলন ধরে। আমাদের দেশের পল্টিশিল্পের মতো এসব গাছে সবর্দা পরিচর্যা করতে হয়। এর কোন ব্যতিক্রম হলে ফলন আসে না।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.