নাটোর প্রতিনিধি:নাটোরের লালপুর উপজেলার ৫নং বিলমাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনী ফলাফল (গেজেট) বাতিল করে নিকট তম প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী মিজানুর রহমান মিন্টুকে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী ঘোষণা করেছে নির্বাচনী আপীল ট্রাইবুন্যাল নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত।
১৩ মার্চ রায় ঘোষণার নির্ধারিত তারিখ থাকলেও মঙ্গলবার বিকেলে লিখিত নাটোরের নির্বাচনী আপীল ট্রাইবুন্যালের বিচারক শামসুল আল আমীন পূর্ণাঙ্গ রায় ঘোষণা করেন।
নির্বাচনী আপীল ট্রাইবুন্যাল সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর লালপুর উপজেলার ৫নং বিলমাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে স্বতন্ত্রপ্রার্থী সিদ্দিক আলীকে ১৬ ভোটের ব্যবধানে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করা হয়।
নিকট তম প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী মিজানুর রহমান ভোট গণনায় অনিয়মের অভিযোগে প্রকাশিত গেজেট বাতিল চেয়ে নির্বাচনী ট্রাইবুন্যালে মামলা করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে ট্রাইবুন্যাল ৮ ও ৯ নং ভোট কেন্দ্রের প্রাপ্ত ভোট পুনঃগণনা করে। এতে চেয়ারম্যান হিসাবে নির্বাচিত সিদ্দিক আলীর ভোটের পরিমান দাঁড়ায় ৪ হাজার ৮৪০ এবং অভিযোগকারী প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা দাঁড়ায় ৪ হাজার ৮৪৬টি। তবে ওই দিনই (২৮ আগষ্ট-২০২২) সিদ্দিক আলীর পক্ষে একটি দরখাস্ত দিয়ে সব কেন্দ্রের ভোট পুনঃগণনার আবেদন করেন। কিন্তু শুনানী শেষে ট্রাইবুন্যাল সিদ্দিক আলীর পুনঃ ভোট গণনার আবেদন খারিজ করে দেন। একই সাথে মিজানুর রহমানের মামলাও খারিজ করে দেন।
এতে সংক্ষুব্ধ হয়ে মিজানুর রহমান ওই আদেশের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আপীল ট্রাইবুন্যালে (যুগ্ম জেলা জজ-১) আপীল করেন। সিদ্দিক আলীর পক্ষে আদালতে লিখিত জবাব জমা দেয়া হয়। শুনানী শেষে ১৩ মার্চ রায় ঘোষণার দিন ধার্য্য করা হয়। তবে ওই দিন রায় প্রকাশিত হয়নি। পক্ষদের আবেদনের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বিকেলে নির্বাচনী আপীল ট্রাইবুন্যাল আপীল মামলার লিখিত রায় সরবরাহ করেন। রায় পর্যালোচনা করে দেখা যায়,আপীল ট্রাইবুন্যাল ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর নির্বাচনী ট্রাইবুন্যাল ঘোষিত রায় বাতিল করেছেন। একই সঙ্গে সিদ্দিক আলীকে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত ঘোষণা করে দেয়া নির্বাচন কমিশনের গেজেট বাতিল করেছেন।
পাশাপাশি মিজানুর রহমানকে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশের নির্দেশনা দিয়েছেন। আপীল ট্রাইবুন্যালে পর্যবেক্ষণে বলেন, ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত বিলমাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ভোট গণনায় ত্রুটি ছিল।
প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী মিজানুর রহমানের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৮ ও ৯ নম্বর কেন্দ্রের প্রাপ্ত ভোট গণনায় নির্বাচন কমিশনেরগণনার ত্রুটি ধরা পড়েছে। পরাজিত প্রার্থী নির্বাচিত প্রার্থীর চেয়ে ৬ ভোট বেশি পেয়েছেন। নির্বাচনী ট্রাইবুন্যালে নির্বাচিত প্রার্থী তাঁর লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন,‘সব কেন্দ্রে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ সুষ্ঠ ভোট হয়েছে।’ তাই তাঁর পক্ষে সব কেন্দ্রের ভোট গণনার আবেদন করার যৌক্তিতা নাই। সব কেন্দ্রে ভোট পুনঃগণনার আবেদন খারিজ করা যুক্তি সঙ্গত ছিল। বর্তমান চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান সিদ্দিক আলী আপীল ট্রাইবুন্যালের রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
তিনি প্রতিকারের জন্য উচ্চ আদালতে যাবেন বলে জানিয়েছেন। তবে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী মিজানুর রহমান আপীল ট্রাইবুন্যালের রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন,সত্যের জয় হয়েছে। তাঁকে পরিকল্পিতভাবে নির্বাচনে হারানো হয়েছিল। তিনি আপীল ট্রাইবুন্যালের রায়ের জাবেদানকল মঙ্গলবার হাতে পেয়েছেন। উক্ত নকল নির্বাচন কমিশনে জমা দিবেন।কমিশন রায়ের আলোকে আগের গেজেট বাতিল করে নতুন করে গেজেট প্রকাশ করবেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.