নাটোরে জনপ্রতিনিধি হতে মরিয়া এক মাদক ব্যবসায়ীর পোষ্টার ভাইরাল


নাটোর প্রতিনিধি: নাটোর পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী হিসেবে দোয়া চেয়ে শীর্ষ মাদক মাদক সমাঞ্জী রফিজা বেগমের ছেলে আলিমুল ইসলাম ওরফে টনিক তিতাসের নির্বাচনী পোষ্টার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে । নিন্দার ঝড় উঠেছে শহরজুড়ে।
একাধিক মাদক মামলার আসামী এবং যার পুরো পরিবার মাদকের ব্যবসার সাথে জড়িত সেই তিতাস (৩২) এবার পৌর নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন। সে শহরের মাদ্রাসা মোড়ের বাসিন্দা।
মাদক ব্যবসায়ীর কাউন্সিলর পদে দোয়া চেয়ে সাটানো পোষ্টার যেমন হাস্যরসের সৃষ্টি করেছে ঠিক তেমনি সাধারণ মানুষের মধ্যে চাপা ক্ষোপ বিরাজ করছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নাটোর পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী আলিমুল ইসলাম তিতাসের পরিবারের সবাই যে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সে বিষয়টি পুরো শহরে ওপেন সিক্রেট। এই পরিবারটির হাত ধরেই শহরের কানাইখালী,মাদ্রাসা মোড়,পটুয়াপাড়া ও চকরামপুর এলাকায় প্রথম মাদক ব্যবসার প্রচার ও প্রসার হয়।
ছোটবেলা থেকে নানার বাসায় বসবাস করা তিতাসের বাবার নাম এলাকাবাসী কেউ জানেনা। তিতাসের মাকে এলাকাবাসী মাদকের রানি রফিজা নামে সবাই চিনে। তাছাড়া তার তিন মামা ও তিন মামী হেরোইন এবং ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত । গাঁজা, হেরোইন ও ফেনসিডিলসহ সব ধরনের মাদক মজুদ করে লুকিয়ে মাদক বিক্রি করেন।
পরিবারের কোনো সদস্য গ্রেফতার হলে অন্য সদস্যরা এই ব্যবসার হাল ধরেন। এর কারণে বন্ধ হচ্ছে না মাদক বিক্রি। এবার নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে জয়ী হয়ে পুরোদমে ব্যবসায় আধিপত্য ছড়াতে ও বাধাহীনভাবে ব্যবসা করতে চাইছেন তাদের পরিবার।
এলাকাবাসীর বিটিসি নিউজকে জানান, নাটোর সদর থানা থেকে মাত্র ১০০ গজ দূরে তৃষা ক্লিনিকের সামনে গলি এবং আল মদীনা ক্লিনিকের পাশের গলিতে প্রতিদিন ভোর থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত প্রতিদিন মাদক সেবীদের মেলা বসে।
এ মেলার আয়োজক মাদক ব্যবসায়ী টনিক তিতাস,তাঁর মা রফিজা বেগম ও মামা রশিদুল,রবিউল,তুষার এবং মামী আমেনা বেগম,সুমি বেগম,কুলসুম বেগম।
তাদের বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করে কানাইখালী মহল্লার মৃত রমিজের ছেলে রোকন এবং একই এলাকার মৃত খায়রুল ইসলামের ছেলে রনি। এরা সবাই পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক বিক্রেতা। এই পরিবারটির কারণে এলাকার তরুণ সমাজ মাদকের ছোবলে ধ্বংস হচ্ছে। গ্রেফতার হয় আবার ছাড়াও পায়। স্বামীরা জেলে থাকলে স্ত্রীরা মাদক ব্যবসা চালান ।সদর থানার এতো সন্নিকটে প্রকাশ্য মাদক ব্যবসা চিন্তাই করা যায় না।ওদের পেছনে স্থানীয় প্রভাবশালী কারো হাত রয়েছে। এমন অভিযোগ ঘুরছে এলাকার প্রতিটি মানুষের মুখে মুখে।
পুলিশ ও র‌্যাবের ধারাবাহিক অভিযানের ফলে শহরের সব এলাকায় মাদক ব্যবসা বন্ধ হলেও তুষারের স্পটটি একটি দিনের জন্য বন্ধ হয়নি। এলাকাবাসীর কাছে তিতাস নিজেকে পুলিশের সোর্স বলে পরিচয় দিয়ে থাকে ।
শহরের কানাইখালী ও মাদ্রাসা মোড় সুপরিচিত। এ দুটি এলাকার নামটি কলঙ্কিত করে ফেলেছে ওই একটি মাদক পরিবার। তাদের পরিবারের সদস্য নির্বাচনে নামায় এবার আতঙ্ক আর ভয় ছড়িয়েছে এলাকা জুড়ে।
তুষার কারাগারে গেলে তাঁর মা কুখ্যাত মাদকের রানী রফিজা বেগম ব্যবসার হাল ধরেন। তার নামেও মামলা রয়েছে দুটি। তার মামা রবিউল, রশিদুল ,তুষার কারাগারে গেলে ব্যবসা চালান তাদের স্ত্রীরা। এহেন অবস্থায় এ পরিবারের সদস্য যখন নির্বাচনের মাঠে তখন পুরো এলাকায় আওয়াজ উঠেছে তাদের সামাজিক ভাবে বয়কটের। অন্যাথায় পুরো গ্রাম মাদকের নরক রাজ্য পরিণত করবে এরা।
আবুল কালাম আজাদ নামে এক স্কুল বিটিসি নিউজকে জানান, তিতাসের জনপ্রতিনিধিত্ব করার মতো গ্রহণযোগ্যতা, জনসমর্থন কিংবা ন্যুনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকলেও, বছরের পর বছর ধরে মাদক ব্যবসা করে টাকার পাহাড় গড়া বিতর্কিত পরিবারটি তাদের অবৈধ কারবার ও প্রশাসনিক ঝামেলা সামলাতে জনপ্রতিনিধি হওয়ার মিশনে নেমেছেন।
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনসুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিটিসি নিউজকে জানান,আমরা মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছি। মাদক ব্যবসায়ীদের কোন ছাড় দেয়া হবে না। মাদক ব্যবসায়ী পরিবারের বিষয়টি আমার জানা নোই। খোঁজ-খবর নিয়ে ওই পরিবারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.