নাটোরে গ্রাহকের লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়া এনজিও মালিকের বেরিয়ে আসছে নানা কুকির্তী


নাটোর প্রতিনিধি: দ্বিতীয় দিনের মত নাটোর সদরের মাঝদিঘা গ্রামে পলাতক এনজিও মালিক কামরুল ইসলামের বাড়িতে ভীড় করছে পাওনা দাররা। এদিকে তার সমন্ধে বেরিয়ে আসছে নানা কুকিতীর্র কথা।

বর্ষা কৃষি পার্কনামে একটি বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলেন কামরুল ইসলাম । সেখানে একটি হল ঘরে প্রায় প্রতি সপ্তাহেই বসতো বিনোদনের আসর। খানা পিনার সাথে বিভিন্ন স্থাান থেকে মেয়ে নিয়ে গিয়ে নাচ গানের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো। বসতো জুয়ার আসার। ওই এলাকার একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি সেই অনুষ্ঠানে নিয়মিত উপস্থিত থাকতেন।

এলকাবাসী এবং যারা সঞ্চয় জমা দিয়েছিলেন তারা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ জুন) সঞ্চয়কারীদের মধ্যে ঋন প্রদানের কথা কথা ছিল। এজন্য যে যত টাকা ঋন নিবে তার ১০ পার্সেন্ট হিসেবে আগাম সঞ্চয় গ্রহণ করেন কামরুল ইসলামের নিয়োগকৃত কর্মচারীরা। এভাবে এলাকার নানা গ্রাহকদের লাখ লাখ টাকা সংগ্রহ করেন কামরুল ইসলাম।

কিন্তু বৃহস্পতিবারের আগেই তিনি কাউকে কিছু না জানিয়ে গা ঢাকা দেন। এদিকে টাকা নিতে এসে কামরুল ইসলামকে না পেয়ে এবং মাঝদিঘা হেলপ সোসাইটি বা মাঝদিঘা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি উন্নয়ন সমবায় সমিতির অফিস তালাবদ্ধ দেখে হতাশায় ভেঙ্গে পড়েন তারা । খুঁজে পাওয়া যায়না কামরুল ইসলামকে।

এরপর থেকে টাকা না পেয়ে গ্রাহকরা এখন ভিড় জমাচ্ছে এনজিও মালিক কামরুল ইসলামের বাড়িতে। কামরুল ইসলাম মাঝদিঘা পূর্বপাড়া ওলি প্রামাণিকের ছেলে।

জানা যায় প্রতি লাখে ৫ হাজার টাকা লাভ দিবে বলে অনেকের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট হিসেবে গ্রহণ করেন। তাদের অনেকেকে কামরুল ইসলাম এক লাখ টাকার বিপরিতে প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকা করে লাভ দিয়েছেন।

এই ভাবে মানুষের মধ্যে আকর্ষন তৈরি করে লক্ষ লক্ষ টাকা জামানত গ্রহণ করেন তিনি। কিন্তু মোট কত টাকা তিনি নিয়েছেন তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেনি কেউ। তবে উপস্থিত লোকজন জানান রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার মোল্লপাড়া ,ঝলমলিয়া সহ আশে পাশের গ্রাম থেকে অসংখ্য মানুষ টাকা জমা দিয়েছেন।

অপরদিকে মাঝদিঘা থেকে শুরু করে বেলঘরিয়া পর্যন্ত অনেকেই তার কাছে লাভের আশায় সঞ্চয় বা ফিক্সড ডিপোজিট রেখেছেন। এলাকাবাসী জানান, হেলপ সোসাইটি নামে পুঠিয়ার মোল্লাপাড়া, ঝলমলিয়া এবং মাঝদিঘা অফিস খুলে বসেন কামরুল ইসলাম। এরপর কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানের নামে সঞ্চয় সংগ্রহের পাশাপাশি মোটা টাকা লাভ দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন মেয়াদী ফিক্সড ডিপোজিট প্রকল্প খুলে টাকা সংগ্রহ করেন।

এছাড়া তিনি বর্ষা মাঝদিঘা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি সমবায় সমিতি নামে একটি সংস্থা গড়ে তোলে টাকা পয়সা সংগ্রহ করেন। হঠাৎ করে এসব টাকা আÍসাৎ করে পালিয়ে যান। এরপর থেকে সঞ্চয় এবং ফিক্সড ডিপোজিট রাখা লোকজন তার বাড়ি ঘিরে রেখেছেন। মোল্লাপাড়া গ্রামের সাইফুল ইসলাম, রাইতুল ইসলাম, অভিযোগ করেন, ফিক্সড ডিপোজিট হিসেবে তারা কয়েক লক্ষ টাকা সঞ্চয় করেছিলেন। এখন তারা সব হারিয়েছেন।

পন্ডিতগ্রামের তাহের আলীর ছেলে রাজিব বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, তিনি ৫ লাখ টাকা ডিপোজিট রেখেছিলেন। এখন তার সব সঞ্জয় হারিয়ে তিনি পথে বসেছেন । ছাতনী দিয়ারের লিজা বেগম জানান, তিনি ৮০ টাকা ডিপোজিট রেখেছিলেন। এখন টাকা ফেরৎ পাওয়া আর না পাওয়ার দোলাচালে দুলছেন তিনি।

এ বিষয়ে নাটোর জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তরা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, এধরনের কোন এনজিও নিবন্ধন তারা দেননি। পাশ বই দেখা যায় “হেলপ সোসাইটি রেজিঃ নং এস-৭৫৯৭, হেলপ মানব শিক্ষা ও স্বাস্থ্য উন্নয়ন সোসাইট”। সোসাইটি এ্যাক্ট ১৮৬০ এর ২১ ধারা মতে নিবন্ধিত। তবে কোন সংস্থার নিবন্ধিত তা উল্লেখ করা হয়নি।এ বিষয়ে কামরুল ইসলামের সাথে কথা বলার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।

নাটোর থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, হেলপ সোসাইটি এবং বর্ষা মাঝদিঘা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি সমবায় সমিতির কিছু কর্মচারী অভিযোগ নিয়ে থানায় এসছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থ গ্রহণ করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য হেলপ সোসাইটি নামে পুঠিয়ার মোল্লাপাড়া, ঝলমলিয়া এবং মাঝদিঘা অফিস খুলে বসেন কামরুল ইসলাম। এরপর কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানের নামে সঞ্চয় সংগ্রহের পাশাপাশি মোটা টাকা লাভ দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন মেয়াদী ফিক্সড ডিপোজিট প্রকল্প খুলে টাকা সংগ্রহ করেন।

এছাড়া তিনি বর্ষা মাঝদিঘা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি সমবায় সমিতি নামে একটি সংস্থা গড়ে তোলে টাকা পয়সা সংগ্রহ করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ঋন দেওয়ার কথা বলে পালিয়ে যান কামরুল ইসলাম। হঠাৎ করে এসব টাকা আÍসাৎ করে পালিয়ে যান। এরপর থেকে সঞ্চয় এবং ফিক্সড ডিপোজিট রাখা লোকজন তার বাড়ি ঘিরে রেখেছেন।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.