নাটোরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে নষ্ট চাল সরবরাহ করা হচ্ছে দরিদ্র অসহায় মানুষদের 

নাটোর প্রতিনিধি: নাটোর শহরতলীর বনবেলঘড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাশে শফিকুল ইসলাম নামে ওএমএস ডিলারের বিরুদ্ধে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে নষ্ট চাল সরবরাহের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ উঠেছে চাল নেওয়ার সিরিয়ালে দাঁড়াতে ২০ টাকা করে টোকেন সংগ্রহ করতে হচ্ছে।।
নাটোরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে দীর্ঘদিনের পুরাতন, পঁচা-দুর্গন্ধযুক্ত ও পােকা ধরা নষ্ট নিম্নমানের চাল ৩০ টাকা কেজি করে  বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযােগ তুলেছেন ভুক্তভােগীরা। আর এ সকল চাল নাটোর সদর খাদ্যগুদাম থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডিলারের নিয়োজিত লোকজন ।
চকবৈদ্যনাথ এলাকার দিনমজুর পরিবারের কয়েকজন গৃহবধু অভিযোগ করেন, গতকাল শনিবার সকালে শহরের বনবেলঘড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের একজন ওএমএস ডিলার দরিদ্র অসহায় মানুষদের মাঝে ৩০ টাকা কেজি দরে জনপ্রতি ১০ কেজি করে দুই ধরনের নষ্ট চাল গুছিয়ে দিয়েছে। যা বাসায় নিয়ে রান্না করার পর মুখে দেয়া যাচ্ছেনা। রান্না করা ভাতের দূর্গন্ধে ঘরে টেকা যায় না। আবার গরু, ছাগলকে দিলেও খাচ্ছে না।
মিলন নামের জনৈক ট্রাকের হেলপার বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, ৩৫ ঘন্টা একটানা ট্রাকে ডিউটি করে পেয়েছিলাম ৮৫০ টাকা। বাজারে  প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা চাল বলে স্ত্রীকে পাঠিয়েছিলাম ওএমএস ডিলারের দোকানে। সেখান থেকে ৩০ টাকা কেজি করে দুই রকমের ১০ কেজি চাউল গুছিয়ে দেয়।
এছাড়া ৩০০ টাকা দিয়ে ১০ কেজি চাল সংগ্রহ করেন শতাধিক হতদরিদ্র লােকজন। চাল নেওয়ার পর বাড়িতে গিয়ে চালের ব্যাগ খুলে দীর্ঘদিনের পুরাতন,পঁচা-দুর্গন্ধযুক্ত ও পােকা ধরা নষ্ট চাল দেখতে পেয়ে হতদরিদ্র পরিবারের মানুষগুলো হতাশ। তাই ডিলার পয়েন্টগুলোতে ভালাে চালের আশায় প্রতিবাদ করে আসছেন। কিন্তু বিষয়টি নজরে নিচ্ছেন না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আর পঁচা চাল ফেরত দিতে ক্রেতারা গেলে উল্টাে অসদাচরণ করে নানা হুমকি দিচ্ছেন ডিলার।
আব্দুল হামিদ (৫৫), আব্দুস সালাম (৪২), ছখিনা খাতুন (৪৬)-সহ একাধিক ভুক্তভােগী বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, বর্তমানে যে চালগুলাে দেওয়া হচ্ছে তা পঁচা-দুর্গন্ধযুক্ত ও পােকা ধরা নষ্ট চাল। খাওয়ার একেবারই অনুপযোগী। বিয়ষগুলাে নিয়ে প্রতিবাদ করলেও কােনো লাভ হয় না। নষ্ট চাল ফেরত দিতে আসলে ডিলাররা নানা রকমভাবে গালিগালাজ করে। আর খাদ্য অফিসের লােকজনদের বললে কিছুই হয় না।
নাটোর শহরের এক ডিলার বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, খাদ্যগুদাম থেকে তার পয়েন্টে যে সকল চালের বস্তা দেওয়া হয়েছে তার সব বস্তার চালের অবস্থা খুবই খারাপ। চাল গুলােতে পােকা ও ছাতা ধরা অবস্থা। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।
আব্দুল্লাহ আল মামুন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, আমার বাবা মরহুম মজনু মাষ্টার মারা যাওয়ার পর ডিলার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে শফিকুল ইসলাম। তিনি ভালো বলতে পারবেন। আমি এসবের কোন খবর জানিনা।
এ ব্যপারে ডিলার শফিকুল ইসলাম এর মুঠোফোনে কল দিলেই তিনি রিসিভ করেননি।
নাটোর সদর উপজেলা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা মফিজুর রহমান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার শফিকুল ইসলামের পয়েন্টে যে সকল চাল দেয়া হয়েছে তা অনেক ভালো চাল। ডিলাররা বেছে বেছে চাউল নিয়ে যায়। নিম্নমানের কোন চাল সদর খাদ্যগুদামে নেই। এছাড়াও সদর খাদ্যগুদাম থেকে যে সকল চালের বস্তা দেয়া হয়েছে তাতে পােকা ধরা, ফাঙ্গাস পড়া, খাওয়ার উপযুক্ত নয় এমন অভিযোগ মানতে নারাজ তিনি।
এ ব্যাপারে জেলা খাদ্য সদর কর্মকর্তা আব্দুস সাত্তার মন্ডল বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, নিম্নমানের চালের ব্যাপারে তার কাছে এখনাে কােনো ভােক্তা, ডিলার এবং এলএসডি কর্মকর্তা কিছুই জানাননি। তবে তিনি সব সময় খােঁজ রাখছেন বলে দাবি করেন। অভিযোগটি তদন্ত করে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.